সেনাবাহিনীর হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তি ইতিবাচক: সু চি

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী প্রথমবারের মত রোহিঙ্গা হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তি দেওয়ার পর একে ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির নেত্রী অং সান সু চি। তিনি বলেন, সেনাবাহিনী তাদের সেনা সদস্যদের কর্মকান্ডের দায় নিচ্ছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Jan 2018, 05:48 PM
Updated : 12 Jan 2018, 06:09 PM

রোহিঙ্গাদের উপর নিপীড়ন-নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে আসা মিয়ানমার সেনাবাহিনী গত বুধবার কথিত সন্ত্রাস দমন অভিযানে ১০ রোহিঙ্গাকে ধরার পর হত্যার কথা স্বীকার করে।

মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের ফেইসবুক অ্যাকাউন্টে এক বিবৃতিতে “স্থানীয় বৌদ্ধ ও সেনা সদস্যরা ওই হত্যাকাণ্ড ঘটায়” জানিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।

শুক্রবার মিয়ানমারের নিপিধো’তে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারো কোনোর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সু চিকে সেনাবাহিনীর অপকর্মের ওই বিরল স্বীকারোক্তির ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, “বিষয়টি তদন্ত করা হয়েছে। এর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

ফেইসবুক পাতায় এক পোস্টে সু চি আরো বলেন, “আমাদের দেশের জন্য এ এক নতুন ধাপ। আমি বিষয়টিকে এভাবেই দেখি। কারণ, দেশে আইনের শাসনের জন্য একটি দেশের দায় নেওয়াটা জরুরি। আর সেই দায় নেওয়ার পথে এটিই হচ্ছে প্রথম পদক্ষেপ। এটি একটি ইতিবাচক ব্যাপার।”

মিয়ানমারের নিপিধোতে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর তারো কোনোর (বামে) সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন অং সান সু চি

গত ২৪ অগাস্ট রাতে একযোগে মিয়ানমার পুলিশের ৩০টি তল্লাশি চৌকি ও একটি সেনা ঘাঁটিতে হামলার পর ব্যাপক অভিযান শুরু করেছিল মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সেখানে নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মুখে ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে আসতে শুরু করে রোহিঙ্গারা, পরে চার মাসে সাড়ে ছয় লাখের বেশি মানুষ বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে।

ওই অভিযানকে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ হিসেবে বর্ণনা করে এসেছে জাতিসংঘ। অভিযানে এক মাসেই ৬ হাজার ৭০০ মানুষকে হত্যা করা হয় বলে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মেদসঁ সঁ ফ্রঁতিয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়।

রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানায়, গত ১৮ ডিসেম্বর মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইনের রাজধানী সিতভি থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার উত্তরে ঊপকূলীয় ইন দীন গ্রামে একটি গণকবরে ১০ জনের মৃতদেহ পাওয়ার কথা জানানোর পর ঘটনার তদন্ত শুরু করে। এরপরই সেনাবাহিনী জানায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ওই ১০ জনকে হত্যা করেছে।

ইন দীন গ্রামে হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তির পর শরণার্থীরা সেখানে ফিরতে চাইবে কিনা জিজ্ঞেস করা হলে সু চি বলেন, “কিছু মানুষ ভয় পেতে পারে। কিন্তু ভয় পাওয়ার মত কোনো কিছু এখন নেই।”

“বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছিল, যেটা এতদিনে সম্পন্ন হয়ে গেছে। একইরকম ঘটনা যাতে আবার না ঘটে সেজন্যই তো এ তদন্ত করা হয়েছে।”