বুধবার ওয়াশিংটনে নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী এরনা সোলবার্গের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, তার প্রশাসন দূষণমুক্ত পানি ও বাতাস নিশ্চিত করার পাশাপাশি অন্য দেশগুলোর সঙ্গে ব্যবসাবাণিজ্যে সমানতালে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করারও নিশ্চয়তা চায়।
২০১৫ সালে দেড়শতাধিক দেশের স্বাক্ষর করা চুক্তিটিকে ট্রাম্প ‘যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বাজে চুক্তি’ হিসেবেও ফের অ্যাখ্যা দেন বলে খবর রয়টার্সের।
“চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অন্যায্য আচরণ করা হয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে চুক্তি নিয়ে আমার কোনো সমস্যা নেই, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে তাদের (ওবামা আমলে) করা এ চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য খুবই বাজে চুক্তি ছিল,” বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
চুক্তির শর্ত বদলালে ‘অনুমিতভাবেই যুক্তরাষ্ট্র চুক্তিতে ফিরতে পারে’, মন্তব্য তার।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের শুরু থেকেই ওবামা আমলে হওয়া এ চুক্তির বিরোধীতা করে আসছিলেন ট্রাম্প। তার ভাষ্য, চুক্তিটি যুক্তরাষ্ট্রের তেল ও কয়লা শিল্পকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পাওয়ার ছয় মাসের মাথায় গত বছরের জুনে চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়েও নেন ট্রাম্প; যা নিয়ে দেশে বিদেশে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে নতুন মার্কিন প্রশাসন।
ট্রাম্প সেসময় বলেছিলেন, চুক্তি কার্যকর হলে যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপি ৩ ট্রিলিয়ন ডলার হারাবে, চাকরি যাবে ৬৫ লাখ মার্কিনির।
চুক্তির কারণে চীন ও ভারতের মতো দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যুক্তরাষ্ট্র পিছিয়ে পড়বে বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে দাঁড়ানোর অর্থ বৈশ্বিক নেতৃত্ব থেকে দেশটির পিছিয়ে আসা।
জলবায়ু চুক্তিটিতে বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি প্রাক-শিল্পায়ন যুগের চেয়ে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি যেন না হয় সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল স্বাক্ষরকারী দেশগুলো।
চুক্তি থেকে সরে আসার ঘোষণা দেওয়ার সময় ভবিষ্যতে জলবায়ু নিয়ে নতুন চুক্তি কিংবা এ চুক্তিতেই যুক্তরাষ্ট্রের জন্য থাকা শর্ত নিয়ে নতুন আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ট্রাম্প। মার্কিন প্রশাসন এ বিষয়ে নতুন কোনো উদ্যোগ নিয়েছিল কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
গত বছরের ডিসেম্বরে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র প্যারিস জলবায়ূ অ্যাকর্ডে ফিরবে বলেই তার বিশ্বাস। চুক্তি নিয়ে নতুন আলোচনার সুযোগ নেই বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি।