‘যুক্তরাজ্যে জিহাদের বীজবপন করেছেন হাফিজ সাঈদ’

পাকিস্তানে নিষিদ্ধ সংগঠন জামাত উদ-দাওয়া প্রধান হাফিজ মোহাম্মদ সাঈদ ৯০ এর দশকে যুক্তরাজ্য ভ্রমণে গিয়ে সেখানকার মুসলিম তরুণদের জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করেছেন। বিবিসি’র এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে একথা বলা হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Jan 2018, 05:29 PM
Updated : 10 Jan 2018, 05:43 PM

জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার প্রতিষ্ঠাতা সাঈদ ২০০৮ সালে ভারতের বাণিজ্যিক নগরী মুম্বাইয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার মূলহোতা বলে দাবি ভারত সরকারের। যুক্তরাষ্ট্রও সাঈদের মাথার দাম এক কোটি ডলার ঘোষণা করেছে। তবে সাঈদ বরাবরই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।

বিবিসি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাঈদ যুক্তরাজ্যে বিভিন্ন মসজিদ এবং শহরে শহরে গিয়ে ভাষণ দিয়ে মুসলিমদেরকে জিহাদে উদ্বুদ্ধ করেছেন।

জিহাদের জন্য যুক্তরাজ্যের বহু মুসলিমের বিদেশে চলে যাওয়া নিয়ে ব্রিটিশ সরকারের উদ্বেগের মধ্যে বিবিসি প্রতিবেদনটি প্রকাশ করল।

মঙ্গলবার রাতে এ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিবিসি রেডিও ফোর ‘ব্রিটিশ জিহাদের সূর্যোদয় শীর্ষক’ একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রচার করেছে।

এতে দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যে মুসলিম তরুণদের মনে চরমপন্থা ও ধর্মের নামে লড়াইয়ের বীজ বপন হয়েছে ৯০ এর দশকের মাঝামাঝিতে।

সাঈদের ‘মারকাজ দাওয়া ওয়াল ইরশাদ’ সংগঠন থেকে প্রকাশিত মাসিক ম্যাগাজিন ‘মুজাল্লা আল দাওয়া’য়  ধারাবাহিকভাবে তার যুক্তরাজ্য ভ্রমণের দিনলিপি ছাপা হয়।

বিবিসি’র অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে সেইসব তথ্য। এতে দেখা গেছে, সাঈদ ১৯৯৫ সালের ৯ অগাস্ট যুক্তরাজ্য গিয়ে তরুণদের ‍উদ্দেশ্যে জিহাদ নিয়ে ভাষণ দেওয়া শুরু করেন।

বার্মিংহামে একটি ভাষণে সাঈদের জিহাদের ডাক এবং হিন্দুদের নিন্দা করার আহ্বানে দর্শকশ্রোতারা তাৎক্ষণিক কোনো সাড়া না দিলেও প্রকৃতপক্ষে সেই ভাষণ থেকেই যুক্তরাজ্যে জিহাদের বীজ বপন হয়।

ইংল্যান্ডের হার্ডেসফিল্ড এবং লেইসেস্টারে নাস্তিকদের বিরুদ্ধে সাঈদের আল্লাহর নামে সর্বশক্তি দিয়ে লড়াইয়ে নামার জ্বালাময়ী ভাষণে শত শত তরুণ জিহাদে আগ্রহী হয়ে ওঠে।

সাঈদের যুক্তরাজ্য ভ্রমণ শেষে বহু সংখ্যক তরুণ জিহাদের প্রশিক্ষণ নিতে আগ্রহী হয়ে উঠেছিল। কলেজ এবং ইউনিভার্সিটির অনেক শিক্ষার্থী এমন প্রশিক্ষণও নিয়েছিল।

লন্ডনের কম্পিউটার সায়েন্স গ্র্যাজুয়েট মনোয়ার আলি নামের একজন বিবিসি কে বলেছেন, সাঈদকে তিনিই যুক্তরাজ্যে গিয়ে জিহাদের জন্য প্রচার চালানো এবং অর্থ সংগ্রহ করতে রাজি করেছিলেন। ওই ব্যক্তি একজন জিহাদি ছিলেন। পরে তিনি তা ছেড়ে দেন।