বিভিন্ন শহরে সরকার সমর্থকদের বিশাল বিশাল শোভাযাত্রার মধ্যে তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তা প্রস্তুতি ও জনগণের সতর্কতা’ শত্রুদের পরাজিত করেছে। খবর বিবিসির।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও দুর্নীতির প্রতিবাদে গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ইরানের দ্বিতীয় জনবহুল শহর মাশহাদে বিক্ষোভ শুরু হয়; পরে যা সরকারবিরোধী বিক্ষোভের রূপ নিয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে।
সোমবার পর্যন্ত বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে অন্তত ২১ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে দুইজন নিরাপত্তারক্ষীও রয়েছেন। বিক্ষোভকারীরা পুলিশ স্টেশনগুলোতেও হামলা চালায়।
২০০৯ সালে প্রেসিডেন্ট মেহমুদ আহমাদিনেজাদ বিতর্কিতভাবে দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ইরানজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছিল। তারপর থেকে এবারের সরকারবিরোধী বিক্ষোভকেই জন অসন্তোষের সবচেয়ে গুরুতর ও ব্যাপক প্রকাশ হিসেবে দেখছেন পর্যবেক্ষকরা।
বিক্ষোভের মধ্যে এ সপ্তাহের শুরু থেকে বিভিন্ন শহরে অস্থিরতাবিরোধী শোভাযাত্রা ও সমাবেশ করে সরকার সমর্থকরা।
দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন কেরমানশাহ, ইলাম ও গোরগান নগরীর মিছিলের দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচার করেছে। মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের হাতে ইরানের জাতীয় পতাকা এবং সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ছবি ছিল।
জনগণের এই পাল্টা অবস্থানে বিক্ষোভকারীরা পিছু হটেছে বলে জানান জাফারি।
“আজ আমরা ৯৬ (পার্সিয়ান দিনপঞ্জি অনুযায়ী এখন ১৩৯৬ সাল ) এর বিদ্রোহের শেষ দেখছি। নিরাপত্তা প্রস্তুতি ও জনগণের সতর্কতা শত্রুদের পরাজয়ের পথে নিয়ে গেছে,” বলেন তিনি।
দেশের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ হলেও নিরাপত্তারক্ষীদের মাত্র তিনটি শহরে সীমিত আকারে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
“প্রতিটি জায়গায় বেশি হলে ১৫০০ লোক ছিল; সারাদেশে সমস্যা সৃষ্টিকারীর সংখ্যা ১৫ হাজারের বেশি ছাড়াবে না,” বলেন রেভ্যুলেশনারি গার্ডের প্রধান।
বিপ্লববিরোধী চর, রাজতন্ত্রপন্থি ও যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের নিয়োগ করা শক্তি ইরানজুড়ে দাঙ্গা, বিশৃঙ্খলা, নিরাপত্তহীনতা ও চক্রান্তের জন্য দায়ী বলেও মন্তব্য করেন জাফারি।
“শত্রুরা ইসলামিক ইরানের নিরাপত্তা, সংস্কৃতি ও অর্থনীতির প্রতি হুমকি হওয়ার চেষ্টা করেছিল,” বলেন তিনি।
ইরানি জেনারেলের এই মন্তব্য দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির দেওয়া বক্তব্যেরই প্রতিধ্বনি।
দেশজুড়ে বিক্ষোভের মধ্যে মঙ্গলবার খামেনি বলেছিলেন, ইরানে অস্থিরতা উস্কে দিচ্ছে শত্রুরা।
খামেনি কারো নাম উল্লেখ না করলেও পর্যবেক্ষকদের ধারণা, শত্রু বলতে তিনি যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও সৌদি আরবকে ইঙ্গিত করেছেন।
বিক্ষোভের সঙ্গে দেশীয় কিছু কর্মকর্তারও যোগ আছে বলে মন্তব্য করেন জাফারি।
বুধবারও ইরানের বেশ কয়েকটি শহরে নতুন করে বিক্ষোভ হয়েছে বলে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
পশ্চিম হামাদান প্রদেশের মালায়ের এবং উত্তরের নওশাহর শহরে বিক্ষোভকারীদের খামেনিবিরোধী স্লোগান দিতে দেখা গেছে। গোহারদাশত শহরের বিক্ষোভকারীরা একটি ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। তেহরানের ২২৫ মাইল দক্ষিণ পশ্চিমের নুর আবেদ শহরের ক্ষুব্ধ প্রতিবাদকারীদের খামেনির ছবি ছিঁড়ে ফেলতে দেখা গেছে।