ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে নিহত ১০

ইরানে চলমান সরকারবিরোধী বিক্ষোভে রোববার দেশজুড়ে ১০ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন।

>>রয়টার্স
Published : 1 Jan 2018, 12:38 PM
Updated : 1 Jan 2018, 12:44 PM

সোমবার টেলিভিশনের খবরে বলা হয়, “দুর্ভাগ্যজনকভাবে গতরাতে দেশজুড়ে কয়েকটি নগরীরতে বিক্ষোভ-সংঘর্ষে প্রায় ১০ জন নিহত হয়েছে।”

এর আগে আইএলএনএ বার্তা সংস্থা স্থানীয় এক এমপি’র বরাত দিয়ে রোববার দক্ষিণ-পশ্চিমের শহর আইজেহতে অন্তত দুই বিক্ষোভকারী নিহত এবং আরও বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার খবর দিয়েছিল। তবে এ দুই জন ওই ১০ জনের মধ্যে আছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

রোববার রাতভর বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী জড়ো হলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। পশ্চিমের কারমানশাহ, খোরামাবাদ, উত্তর-পশ্চিমের শাহিনশহর এবং উত্তরের জানজান শহরে বিক্ষোভ-সংঘর্ষ হয়েছে।

এর আগে শনিবার পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আরও দুই বিক্ষোভকারী নিহত হয়। এ নিয়ে কয়েকদিনের চলমান বিক্ষোভে অন্তত ১২ জন নিহত হল বলে জানিয়েছে বিবিসি।

দেশজুড়ে এ অস্থিরতার মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা একটি বিবৃতিতে ইরানের জনগণকে রাজধানী তেহরানসহ  আরও ৫০টি সেন্টারে বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দেওয়ার আহ্বান এসেছে। তবে কারা এ বিবৃতি দিয়েছে তা জানা যায়নি।

বিশ্বের বড় তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর অন্যতম ইরান।

কিন্তু আঞ্চলিক প্রভাব নিয়ে সৌদি আরবের সঙ্গে দ্বন্দ্ব, যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়া ও ইরাকের অভ্যন্তরীন বিষয়ে অতিরিক্ত হস্তক্ষেপ নিয়ে নানা ধরনের আন্তর্জাতিক চাপ ইরানিদের মনে হতাশা ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।

তারা চায়, সরকার অন্যদেশের ব্যয়বহুল যুদ্ধে জড়িয়ে না পড়ে জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে মনযোগী হোক।

অর্থনৈতিক দুরবস্থা ও দুর্নীতির অভিযোগে সৃষ্ট অসন্তোষ থেকে ইরানের দ্বিতীয় জনবহুল শহর মাশহাদে বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। যা পরে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে রূপ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে।

২০০৯ সালে প্রেসিডেন্ট মেহমুদ আহমাদিনেজাদ বিতর্কিতভাবে দ্বিতীয়বারের মতো ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছিল। তারপর থেকে এবারের সরকারবিরোধী বিক্ষোভকেই জন অসন্তোষের সবচেয়ে গুরুতর ও ব্যাপক প্রকাশ হিসেবে দেখছেন পর্যবেক্ষকরা।

রাজধানী তেহরানে প্রথম পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভকারীরা।

ওদিকে, দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া এ বিক্ষোভ নিয়ে প্রথমবার প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি।

রোববার দেশটির মন্ত্রিসভার এক বৈঠক চলাকালে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ নিয়ে তিনি বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার অধিকার ইরানিদের থাকলে নিরাপত্তাকে বিপন্ন করার অধিকার তাদের নেই।

তিনি জনগণকে শান্ত থাকারও আহ্বান জানিয়ে বলেন, “যারা সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করছে, আইন-শৃঙ্খলা লঙ্ঘন করে সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে, সরকার তাদের প্রতি কোনো অনুকম্পা দেখাবে না।”