মিশরে গির্জা ও দোকানে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত ১১

মিশরের রাজধানী কায়রোর শহরতলীতে কপটিক অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের একটি গির্জা ও খ্রিস্টান মালিকানাধীন একটি দোকানে বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন গির্জাটির কর্মকর্তারা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Dec 2017, 06:24 PM
Updated : 30 Dec 2017, 07:01 AM

শুক্রবারের এ হামলার পর হামলাকারীকে আহত অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মিশরের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ ঘটনায় দুই নারীসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন। আহত দুই নারীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

ইসলামিক স্টেট (আইএস) হামলার দায় স্বীকার করেছে বলে জঙ্গিগোষ্ঠীটির বার্তা সংস্থা আমাকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে। তবে দাবির সপক্ষে কোনো প্রমাণ দাখিল করেনি জঙ্গিগোষ্ঠীটি।

আগামী ৭ জানুয়ারি কপটিক খ্রিস্টানদের ক্রিসমাস পরব উপলক্ষে আক্রান্ত গির্জাটিকে ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছিল পুলিশ। পরবটি উপলক্ষে মিশরের বড় গির্জাগুলোর প্রত্যেকটির প্রবেশ পথে মেটাল ডিটেক্টর বসিয়ে নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের মোতায়েন করা হয়েছে। এর মধ্যেই হামলার ঘটনাটি ঘটেছে।

নিরাপত্তা বাহিনী ও রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের প্রথমদিকের প্রতিবেদনগুলোতে হামলায় অন্তত দুইজন অংশ নিয়েছেন বলে জানানো হয়েছিল। বলা হচ্ছিল, এদের একজন নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন ও অন্যজন ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু পরে জানায়, হামলায় একজন অংশ নিয়েছেন এবং তাকে আহত অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একই ঘটনার দুই রকম ভাষ্যের কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

কপটিক গির্জাটি জানিয়েছে, ওই বন্দুকধারী কায়রোর হেলুয়ানে গির্জা থেকে চার কিলোমিটার দূরে খ্রিস্টান মালিকানাধীন একটি দোকানে দুইজনকে হত্যার পর এগিয়ে এসে মার মিনা গির্জায় হামলা চালায়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সে গির্জার প্রবেশ পথে গুলিবর্ষণ করে ও একটি বোমা নিক্ষেপের চেষ্টা করে। 

এখানে সে এক পুলিশসহ অন্তত আটজনকে হত্যা করে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কপটিক গির্জা। পরে আহত এক নারী হাসপাতালে মারা যান বলে জানিয়েছে গির্জাটি। এতে গির্জায় চালানো হামলায় নিহত বেসামরিকের সংখ্যা আটজনে দাঁড়ায়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, “নিরাপত্তা বাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে হামলাকারীকে প্রতিরোধ করে এবং আহত অবস্থায় তাকে গ্রেপ্তার করে।”

ঘটনার বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। তবে বিস্তারিত আর কিছু জানায়নি। 

তদন্তকারীরা হামলাকারী বন্দুকধারীকে সনাক্ত করেছে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। হামলাকারী গত বছর থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি হামলায় অংশ নিয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা।

সম্প্রতি মিশরের খ্রিস্টান অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে বেশ কয়েকটি হামলার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। গত বছর থেকে মিশরের বিভিন্ন স্থানে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলায় একশর বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। সিনাই উপদ্বীপে সুন্নি এই জঙ্গিগোষ্ঠীটির বিদ্রোহ মোকাবিলা করছে মিশরের নিরাপত্তা বাহিনী।