ভারতে ‘৩ তালাক’ বলা হবে ফৌজদারি অপরাধ

মুসলিম নাগরিকদের ‘তিন তালাক’ বলে স্ত্রীকে ছেড়ে দেওয়ার আইনটি বাতিলের প্রস্তাব পাস করেছে ভারতের লোকসভা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Dec 2017, 03:28 PM
Updated : 28 Dec 2017, 04:09 PM

লোকসভায় বৃহস্পতিবার পাস হওয়া বিলটি এখন যাবে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায়; আইনটি সংশোধন হলে স্ত্রীকে ‘তিন তালাক’ বলে ছেড়ে দেওয়াটা ফৌজদারি অপরাধ বলে গণ্য হবে ভারতে।

ইসলামী শরিয়াহ আইন অনুযায়ী যে কোনো ব্যক্তি মুখে তিন বার ‘তালাক’ উচ্চারণ করেই তার স্ত্রীকে ছেড়ে দিতে পারেন; তবে অনেক মুসলিম দেশেই এভাবে বিধান আইনিভাবে কার্যকর নয়।

ভারতে মুসলিম নারী আইনে এই বিধানটি থেকে যাওয়ায় সম্প্রতি ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এক রায়ে এভাবে বিচ্ছেদকে অবৈধ ঘোষণা করে।

তার পরিপ্রেক্ষিতে আইন সংশোধনের উদ্যোগের প্রথম পর্যায়ে লোকসভায় বিলটি তোলার দিনই কণ্ঠভোটে এটি পাস হল।

টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, বিজেপি সরকারের আনা বিলে বিরোধী বিভিন্ন দলের সদস্যরা সংশোধনী প্রস্তাব দিলে তাও নাকচ হয়ে যায় কণ্ঠভোটে। পার্লামেন্টে বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় বিল পাসে কোনো জটিলতায় পড়তে হয়নি তাদের।

বিলে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি তার স্ত্রীকে মুখে, লিখে কিংবা কোনো ইলেকট্রনিক মাধ্যমে তিন তালাক বলা হবে অবৈধ। এই ধরনের অপরাধের সাজা হবে তিন বছরের কারাদণ্ড এবং জরিমানা।

বিলটি পাসের আগে আলোচনায় আইনমন্ত্রী রবি শঙ্কর প্রসাদ বলেন, “আমরা শরিয়ায় কোনো হস্তক্ষেপ করছি না।

“এই আইনটি নারীদের অধিকার রক্ষা এবং তাদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে ধর্ম কিংবা প্রথা বিবেচনা করা হয়নি।”

এই আইনটি নিয়ে ‘রাজনীতি’ না করতে অন্য দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস বিলটিতে সমর্থন দিলেও শাস্তির ধারাটিতে আপত্তি জানিয়েছিল।

লোকসভায় বিতর্কে আইনটি সংশোধনের তীব্র আপত্তি জানিয়েছিল অল ইন্ডিয়া মজলিসে মুত্তাহিদুল মুসলেমিন (এআইএমআইএম) ও সমাজবাদী পার্টি।

সমাজবাদী পার্টির দাবি, এই বিলে খুশি হবে হিন্দু উগ্রপন্থিরা। এআইএমআইএম বলছে, এতে মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে এবং আইনের দৃষ্টিতেও তা যথার্থ নয়।

বিতর্কে বিজেপি সরকারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, সাংবাদিক এম জে আকবর কোরআন থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বিলটি পাসের বিরোধীদের সব কথা উড়িয়ে দেন।

তিনি বলেন, ভারতের নয় কোটি মুসলিম নারী তালাক নিয়ে যে আতঙ্কে থাকত, তাদের মুক্তি দিয়েছে এই আইনটি। এতে তাদের বেদনার উপশম ঘটল।