উত্তর কোরিয়া: জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার প্রশংসায় ট্রাম্প

উত্তর কোরিয়ার সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জেরে দেশটির ওপর আরোপিত জাতিসংঘের নতুন নিষেধাজ্ঞার প্রশংসা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Dec 2017, 09:57 AM
Updated : 23 Dec 2017, 01:16 PM

শুক্রবার এক টুইটে তিনি বলেছেন, নিরাপত্তা পরিষদের ভোট প্রমাণ করেছে বিশ্ব ‘মৃত্যু নয়,শান্তি চায়’।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের সবাই যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি নিষেধাজ্ঞার খসড়া প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় বলে বিবিসি জানিয়েছে।

নিষেধাজ্ঞায় উত্তর কোরিয়ায় পরিশোধিত পেট্রলিয়াম পণ্য ও অপরিশোধিত খনিজ তেল সরবরাহ ৯০ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।  

প্রস্তাবে বিদেশে কাজ করা সব উত্তর কোরীয় নাগরিককে ২৪ মাসের মধ্যে দেশে ফেরত পাঠাতে বলা হয়েছে; দেশটির বৈদ্যুতিক ও অন্যান্য যন্ত্রপাতিসহ পণ্য রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

নিরাপত্তা পরিষদে কঠোর এসব প্রস্তাব সম্বলিত মার্কিন খসড়াটি পাস হওয়ার পরপরই টুইটারে বিবৃতি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

বলেন,“জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ মাত্রই ১৫-০ ভোটে উত্তর কোরিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। বিশ্ব শান্তি চায়, মৃত্যু নয়।”

জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি বলেছেন, “এর মধ্য দিয়ে উত্তর কোরিয়াকে স্পষ্টত এ বার্তাই দেওয়া হল যে, এরপরও তারা বেপরোয়া আচরণ চালিয়ে গেলে আরও শাস্তি পাবে এবং (বিশ্ব থেকে) আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।”

উত্তর কোরিয়াকে ‘আধুনিক বিশ্বে মন্দের সবচেয়ে শোচনীয় উদাহরণ’ হিসেবে অ্যাখ্যা দেন হ্যালি।

নতুন এ নিষেধাজ্ঞার আগেও দেশটির ওপর যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কঠোর নিষেধাজ্ঞা আছে।

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন পিয়ংইয়ংয়ের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির লাগাম টানতে নতুন নিষেধাজ্ঞাকে ‘গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

তিনি বলেন, উত্তরের ‘বেপরোয়া আচরণের’ বিরুদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একতার প্রমাণ।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোরীয় অঞ্চলের পরিস্থিতিকে ‘জটিল ও নাজুক’ অ্যাখ্যা দিয়ে উত্তেজনা কমাতে সব পক্ষকে সক্রিয় চেষ্টার আহ্বান জানিয়েছে।

২৯ নভেম্বর সর্বশেষ পরীক্ষামূলকভাবে আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছিল উত্তর কোরিয়া। এটি ছিল দেশটির পরীক্ষিত সবচেয়ে দীর্ঘ পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনো অংশ আঘাত হানতে সক্ষম বলে জানিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞরা।

মার্কিন কূটনীতিকরা বলছেন, উত্তর কোরিয়ার সমস্যার কূটনৈতিক সমাধান চান তারা, কিন্তু দেশটির নেতা কিম জং উনের ওপর চাপ বৃদ্ধি করতেই নতুন করে কঠোর ওই নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব করেছেন।

উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচী নিয়ে উত্তেজনা বেড়েই চলেছে। নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে দেশটি এসব কর্মসূচী চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি পিয়ংইয়ং ও হোয়াইট হাউসের মধ্যে উস্কানিমূলক বাদানুবাদে পরিস্থিতি বিস্ফোরক হয়ে উঠেছে।

চলতি বছরের ৩ সেপ্টেম্বর উত্তর কোরিয়ার তাদের ষষ্ঠতম ও সবচেয়ে শক্তিশালী পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর পর দেশটির বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল নিরাপত্তা পরিষদ। এই নিষেধাজ্ঞাকে ‘গণহত্যার শামিল’ উল্লেখ করে ‘নিষ্ঠুর নিষেধাজ্ঞা’ তুলে নেওয়ার দাবি করেছিল দেশটি।