উ. কোরিয়ার ওপর জাতিসংঘের নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ

সর্বশেষ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জেরে উত্তর কোরিয়ার ওপর নতুন করে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Dec 2017, 07:13 PM
Updated : 23 Dec 2017, 04:50 AM

শুক্রবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রগুলো সর্বসম্মতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি খসড়া প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দেয় বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স, বিবিসি।

২৯ নভেম্বর সর্বশেষ পরীক্ষামূলকভাবে আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছিল উত্তর কোরিয়া। এটি ছিল দেশটির পরীক্ষিত সবচেয়ে দীর্ঘ পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনো অংশ আঘাত হানতে সক্ষম বলে জানিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞরা।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবটির পক্ষে নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্য রাষ্ট্রের সবাই ভোট দেয়। উত্তর কোরিয়ার ঘনিষ্ঠ বাণিজ্যিক অংশীদার চীন ও রাশিয়াও প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দিয়েছে। 

পাস হওয়া প্রস্তাবটিতে উত্তর কোরিয়ায় পরিশোধিত পেট্রলিয়াম পণ্য ও অপরিশোধিত খনিজ তেল সরবরাহ ৯০ শতাংশ কমানোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। শেষ মূহুর্তে প্রস্তাবটিতে একটি সংশোধনী এনে বিদেশে কাজ করা সব উত্তর কোরীয় নাগরিককে প্রাথমিকভাবে প্রস্তাব করা ১২ মাসের বদলে ২৪ মাসের মধ্যে দেশে ফেরৎ পাঠানোর কথা বলা হয়েছে।  

প্রবাসী কর্মজীবীরা উত্তর কোরিয়ার বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস।

এসব নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি উত্তর কোরিয়ার বৈদ্যুতিক ও অন্যান্য যন্ত্রপাতিসহ পণ্য রপ্তানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

নতুন করে এসব নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে থেকেই দেশটির ওপর বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।

উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচী নিয়ে উত্তেজনা বেড়েই চলেছে। নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে দেশটি এসব কর্মসূচী চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি পিয়ংইয়ং ও হোয়াইট হাউসের মধ্যে উস্কানিমূলক বাদানুবাদে পরিস্থিতি বিস্ফোরক হয়ে উঠেছে।

চলতি বছরের ৩ সেপ্টেম্বর উত্তর কোরিয়ার তাদের ষষ্ঠতম ও সবচেয়ে শক্তিশালী পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর পর দেশটির বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল নিরাপত্তা পরিষদ। এই নিষেধাজ্ঞাকে ‘গণহত্যার শামিল’ উল্লেখ করে ‘নিষ্ঠুর নিষেধাজ্ঞা’ তুলে নেওয়ার দাবি করেছিল দেশটি।

যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকরা পরিষ্কার করে বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার সমস্যার কূটনৈতিক সমাধান চান তারা, কিন্তু দেশটির নেতা কিম জং উনের ওপর চাপ বৃদ্ধি করতেই নতুন করে কঠোর ওই নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব করেছেন।

জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি বলেছেন, “এর মধ্য দিয়ে উত্তর কোরিয়াকে স্পষ্টত এ বার্তাই দেওয়া হল যে, এরপরও তারা বেপরোয়া আচরণ চালিয়ে গেলে আরও শাস্তি পাবে এবং (বিশ্ব থেকে) আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।”

নিরাপত্তা পরিষদের এই ভোটাভুটির বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য জাতিসংঘে নিযুক্ত উত্তর কোরীয় মিশনকে অনুরোধ করা হলেও তাৎক্ষণিকভাবে তারা সাড়া দেয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।