ট্রাম্পের জেরুজালেম ঘোষণা ‘বাতিলের’ প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভিটো

জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে ঘোষণা দিয়েছেন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে তা প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো একটি খসড়া প্রস্তাবে ভিটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Dec 2017, 05:46 AM
Updated : 19 Dec 2017, 06:11 AM

সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য রাষ্ট্র মিশর প্রস্তাবটি তুলেছিল বলে খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্স, বিবিসির।

মিশরের তৈরি ও উত্থাপন করা ওই প্রস্তাবটিতে বলা হয়েছিল, “পবিত্র শহর জেরুজালেমের চরিত্র, মর্যাদা বা জনতাত্ত্বিক মিশ্রণকে পরিবর্তন করার উদ্দেশ্য নেওয়া যে কোনো সিদ্ধান্ত বা পদক্ষেপের কোনো আইনি মর্যাদা নেই, এগুলো অকার্যকর এবং নিরাপত্তা পরিষদের ঘোষিত প্রস্তাবের আলোকে এগুলো বাতিল যোগ্য।”

তবে এতে সুর্নিদিষ্টভাবে যুক্তরাষ্ট্র বা ট্রাম্পের কোনো উল্লেখ করা হয়নি।

নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া বাকী ১৪ সদস্য প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দেয়।

এর প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী প্রতিনিধি নিকি হ্যালি বলেন, “এখানে এই নিরাপত্তা পরিষদে আমরা যা প্রত্যক্ষ করলাম তা একটি অপমান।”

এই ‘অপমান’ ভুলে যাওয়া হবে না বলে সতর্ক করেছেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, “ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনি সংঘাতের বিষয়ে জাতিসংঘ যে ভালোর চেয়ে ক্ষতিই বেশি করে এটি তার আরেকটি উদাহরণ।

“আজ আমাদের দূতাবাস কোথায় হবে এ ধরনের একটি সাধারণ বিষয় নিয়েও যুক্তরাষ্ট্রকে তার সার্বভৌমত্ব রক্ষার চাপে ফেলা হচ্ছে। আমার খুব গর্বের সঙ্গেই তা রক্ষা করেছি তা রেকর্ডই বলে দিবে।”

গত ছয় বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্র নিজের ভিটো ক্ষমতা প্রয়োগ করলো বলে দাবি করেছেন হ্যালি।

চলতি মাসে দেওয়া এক ঘোষণায় ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেন। এর পাশাপাশি ইসরায়েলে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে সরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু করার নির্দেশও দেন। এই ঘোষণার মাধ্যমে জেরুজালেম বিষয়ে দশকের পর দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের অনুসৃত নীতি হঠাৎ করেই উল্টে ফেলেন তিনি।   

তার এ সিদ্ধান্তে ফিলিস্তিন ও আরব বিশ্বজুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমা মিত্রদেশগুলো উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে। বিশ্বজুড়ে মুসলিম দেশগুলোতে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দেয়। 

এই পরিস্থিতিতে মিশরের প্রস্তাবটিতে ভিটো দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আরো একবার বিশ্ব সম্প্রদায় থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

অপরদিকে ফেইসবুকে পোস্ট করা এক ভিডিওতে মিশরের প্রস্তাবে ভিটো দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে জাতিসংঘ প্রতিনিধি হ্যালি ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ‘ধন্যবাদ’ জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।