ট্রাম্পের জেরুজালেম সিদ্ধান্তে পেন্সের মধ্যপ্রাচ্য সফর ম্লান

জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতির কারণে চলতি সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের সফর ম্লান হয়ে গেছে। 

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Dec 2017, 10:38 AM
Updated : 16 Dec 2017, 10:38 AM

আরব বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্কে টানাপোড়েনের মধ্যে চলতি সপ্তাহে পেন্সের মধ্যপ্রাচ্য সফর ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রেও খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

জেরুজালেম বিষয়ে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের কট্টর সমর্থক পেন্স তিনদিনের এই সফরে ইসরায়েল ও মিশর যাবেন।

দশককালের নীতি পাল্টে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি এবং তেল আবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর ওই অঞ্চলে কোনো শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তার এটিই প্রথম সফর।

ইহুদি, মুসলমান ও খ্রিস্টানদের কাছে পবিত্র স্থান হিসেবে পরিচিত জেরুজালেমের মর্যাদা নিয়ে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের পরষ্পরবিরোধী অবস্থান মধ্যে শান্তি চুক্তির পথে অন্যতম বাধা হয়ে রয়েছে। ১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের পর জেরুজালেম শহরের দখল নেয় ইসরায়েলি বাহিনী; তারপর থেকেই পুরো শহরকে নিজেদের রাজধানী দাবি করে আসছে দেশটি।

ফিলিস্তিনিরা চায়, পূর্ব জেরুজালেম হবে তাদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের রাজধানী।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাম্প্রতিক ঘোষণা ছাড়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় জেরুজালেমের ওপর ইসরায়েলি সার্বভৌমত্বের দাবি মেনে নেয়নি। 

ট্রাম্পের ঘোষণার আগে পেন্সের মধ্যপ্রাচ্য সফরের সময়ে তার সঙ্গে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টের দেখা হওয়ার কথা ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতির পর ক্ষুব্ধ ফিলিস্তিন ওই বৈঠক এবং পেন্সের বেথেলহেম সফর বাতিল করে।

প্রটেস্টান্ট রীতির অনুসারী পেন্সের এ সফরে সংখ্যালঘু খ্রিস্টানদের অধিকার নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল; কিন্তু জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনি খ্রিস্টান ও মিসরের কপটিক খ্রিস্টানরা তার সঙ্গে দেখা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

এরপরও পেন্স নিপীড়িত খ্রিস্টানদের নিয়ে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্টের এ সফরে আলোচিত হবে মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের ক্রমবর্ধমান প্রভাব, জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসকে পরাজিত করা ও ‘উগ্রবাদী ধ্যানধারণা’ বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বিষয়ও।

অভ্যন্তরীণ কর ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর নতুন একটি প্রস্তাব নিয়ে মার্কিন সিনেটে এই সপ্তাহে একটি ভোট হওয়ার কথা; ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকানদের মধ্যে ব্যবধান খুবই কম হওয়ায় ভোটে পক্ষ-বিপক্ষ সমান হলে পেন্সেরও ভোট দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে, যে কারণে ভাইস প্রেসিডেন্টের সফরের সময় বদলে যেতে পারে বলেও কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

তবে এখন পর্যন্ত যে নির্ধারিত সূচি তাতে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে মিশরের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা পেন্সের। বুধবার মিশর পৌঁছে তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গে বৈঠক করবেন।

ওইদিনই তেল আবিব যাবেন পেন্স। সেখানে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রেসিডেন্ট রুবেন রিভিলিনের সঙ্গে তার দেখা করার কথা। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট এরপর ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেটে ভাষণ এবং জেরুজালেমের পশ্চিম দেয়াল এলাকা সফরের কথা রয়েছে।

ইসরায়েলের আরব সাংসদরা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় তারা পেন্সের নেসেট ভাষণের সময় উপস্থিত থাকবেন না।