নিজেদের বানানো প্রথম অত্যাধুনিক ডুবোজাহাজ ভারতের নৌবাহিনীতে

ভারতীয় নৌবাহিনীতে প্রথমবারের মতো যোগ দিয়েছে স্কর্পেন শ্রেণির অত্যাধুনিক ডুবোজাহাজ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Dec 2017, 09:16 AM
Updated : 14 Dec 2017, 05:28 PM

মঙ্গলবার মুম্বাইয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতের তৈরি ডুবোজাহাজ আইএনএস কালভারিকে আনুষ্ঠানিভাবে নৌবাহিনীর হাতে তুলে দিলেন।

“মেইক ইন ইন্ডিয়ার জন্য এটিই সেরা উদাহরণ,” অনুষ্ঠানে বলেন মোদী।

অপারমাণবিক অত্যাধুনিক এই ডুবোজাহাজ ডিজেল ও বিদ্যুৎচালিত মোটরের সাহায্যে অতি নিঃশব্দে এমনভাবে চলতে সক্ষম যে পানির নিচে এর হদিশ পাওয়া সহজ হবে না বলে এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

ভারতের প্রধান যুদ্ধজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মাজাগন ডক লিমিটেড নৌবাহিনীর জন্য স্কর্পেন শ্রেণির এই ডুবোজাহাজ বানিয়েছে।

তিনশ কোটি ডলারের বিনিময়ে প্রজেক্ট-৭৫ এর আওতায় মোট ৬টি এ ধরণের ডুবোজাহাজ বানানোর চুক্তি করেছিল তারা; বাকি পাঁচটি ডুবোজাহাজ ২০২০ সালের মধ্যেই সরবরাহ করার কথা।

২০০৬ সাল থেকে আইএনএস কালভারি নির্মাণের কাজ শুরু হয় বলে এনডিটিভি জানিয়েছে। মঙ্গলবার যেটি আনুষ্ঠানিকভাবে নৌবাহিনীতে যুক্ত হয়েছে।

কালভারির অস্ত্র ব্যবস্থাপনার কেন্দ্রে রয়েছে সাবমেরিন ট্যাকটিকাল ইন্টিগ্রেটেড কমব্যাট সিস্টেম; যার ফলে ডুবোজাহাজটি সোনারের মাধ্যমে তথ্য নিয়ে লক্ষ্যবস্তুকে চিহ্নিত করে দ্রুত ক্ষেপণাস্ত্র বা টর্পেডো ছুড়তে পারবে।

৬৭ দশমিক ৫ মিটার দীর্ঘ ও ১২ দশমিক ৩ মিটার উচ্চতাসম্পন্ন কালভারিতে ভারী ওজনের টর্পেডো এবং এক্সোক্যাট ঘরানার জাহাজবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র আছে। ডুবোজাহাজটি পানির নিচে কিংবা উপরে যে কোনো জায়গা থেকে টর্পেডো ছুড়তে পারবে।

ডুবোজাহাজটির অবলোহিত পেরিস্কোপ বা কম আলোর ক্যামেরা যা দিয়ে সহজেই কোনো কিছু খোঁজা কিংবা শত্রুপক্ষের ওপর দ্রুত হামলা চালানো যাবে। সমুদ্রে ভাসমান অবস্থায় এটি লক্ষ্যবস্তুর নিশানায় লেজার রেঞ্জ ফাইন্ডার ব্যবহার করতে পারবে।

ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর হাতে সবমিলিয়ে মোট ১৫টি ডুবোজাহাজ আছে, যেগুলো রাশিয়ান কিলো শ্রেণি ও জার্মান এইচডিডব্লিউ শ্রেণির বলে এনডিটিভি জানিয়েছে।

স্কর্পেন শ্রেণির দ্বিতীয় সাবমেরিন আইএনএস খান্দেরিও দ্রুতই ভারতীয় নৌবাহিনীতে যুক্ত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ডু্বোজাহাজটি এখন পরীক্ষা নিরীক্ষার পর্যায়ে আছে বলে এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

‘কালভারি’ শব্দটি মালয়ালাম, যার অর্থ ‘টাইগার শার্ক’ (হাঙর); চটপটে, শক্তিশালী ও শিকারি দক্ষতার কারণেই ডুবোজাহাজটির এই নাম ঠিক করা হয়েছে।

ভারতের প্রথম সাবমেরিনটির নামও ছিল কালভারি, এটি ১৯৬৭ সালে নৌবাহিনীতে কমিশন পেয়েছিল। সেই থেকে ভারতীয় নৌবাহিনী বিভিন্ন ধরণের ডুবোজাহাজ পরিচালনা করে আসছে, যার মধ্যে পারামাণবিক হামলা ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার সক্ষমতাবাহী ডুবোজাহাজও আছে।