সিরিয়া থেকে সৈন্য প্রত্যাহার শুরু রাশিয়ার

প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে সিরিয়া থেকে আংশিক সৈন্য প্রত্যাহার শুরু করেছে রাশিয়া।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Dec 2017, 08:43 AM
Updated : 12 Dec 2017, 08:43 AM

সিরিয়া থেকে কিছু সৈন্য প্রত্যাহার করা শুরু হয়েছে বলে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগু জানিয়েছেন বলে খবর বিবিসির।

সোমবার এক আকস্মিক সফরে সিরিয়া গিয়ে পুতিন আংশিক সৈন্য প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। এর কয়েক ঘন্টা পর থেকেই সৈন্য প্রত্যাহার শুরু করে দেশটি। 

সিরিয়ায় মোতায়েন রাশিয়ার সামরিক কন্টিনজেন্ট প্রত্যাহারে কত সময় লাগতে পারে, এমন প্রশ্নের উত্তরে শোইগু বলেন, “তা সিরিয়ার পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে।”

পুতিন একই ধরনের একটি ঘোষণা গতবছরও দিয়েছিলেন; কিন্তু তারপরও রাশিয়ার সামরিক অভিযান অব্যাহত ছিল।

সিরিয়া গিয়ে দেশটির লাতাকিয়া প্রদেশে রাশিয়ার হেইমিম বিমানঘাঁটিতে পুতিন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ও রুশ সৈন্যদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন।

তিনি বলেন, দু'বছরের সামরিক অভিযানে মস্কো এবং দামেস্ক ইসলামিক স্টেটকে (আইএস) ধ্বংসের কাজ শেষ করেছে।

“প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও চিফ অব জেনারেল স্টাফকে রাশিয়ান সৈন্যদের তাদের স্থায়ী ঘাঁটিতে ফিরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সিরিয়ায় থাকা বাহিনীর উল্লেখযোগ্য অংশকে রাশিয়ায় ফিরিয়ে নেওয়া হবে,” পুতিনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে রুশ সংবাদ সংস্থা আরআইএ নভোস্তি।  

পুতিন হুঁশিয়ার করে বলেন, “সন্ত্রাসীরা যদি ফের মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে রাশিয়া এমন হামলা চালাবে, যা এর আগে কেউ দেখেনি।”

২০১৫ সাল থেকে সিরিয়ায় রাশিয়ার সৈন্যদের উপস্থিতি সেখানকার গৃহযুদ্ধে আসাদবাহিনীর সাফল্যে বড় ধরনের ভূমিকা রেখেছে। মস্কো বিমান হামলার মধ্য দিয়ে আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সিরীয় বাহিনীকে সমর্থন দেওয়ার কথা বললেও সমালোচকদের দাবি, আসাদবিরোধী গোষ্ঠী এবং বেসামরিক নাগরিকরাও রুশ হামলার কবল থেকে রেহাই পায়নি।

রাশিয়ার হস্তক্ষেপের কারণেই আলেপ্পোর মতো গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধক্ষেত্রগুলোতে আসাদবাহিনী অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছে বলে বিশ্লেষকদের অভিমত।

২০১৬ সালের ডিসেম্বরে আলেপ্পোর পূর্ব অংশে বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত একটি শহরের পতনের আগ পর্যন্ত রাশিয়া ও সিরীয় বাহিনী প্রায় প্রতিদিনই সেখানে বিমান হামলা চালিয়েছিল। সেসব হামলায় হাজার হাজার মানুষ নিহত এবং স্কুল, বাজার ও হাসপাতাল ধ্বংস হয়েছিল বলে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের তদন্তে উঠে এসেছে। 

রোববার এক প্রতিবেদনে যুক্তরাজ্যভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলেছে, সিরিয়ায় রাশিয়ার বিমান হামলায় মোট ৬ হাজার ৩২৮ জন বেসামরিক নিহত হয়েছে, যার মধ্যে দেড় হাজারই শিশু।

২০১১ সালে আসাদবিরোধী অভ্যুত্থান তৈরি হওয়ার পর থেকে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধে সব মিলিয়ে সিরিয়ায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলেও সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের পর্যবেক্ষক সংস্থাটি জানিয়েছে।

মস্কো অবশ্য শুরু থেকেই বিমান হামলায় বেসামরিক নিহতের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। হামলার লক্ষ্য ‘কেবল সন্ত্রাসীরাই’ ছিল বলে দাবি করেছে তারা।