যুক্তরাষ্ট্রের হুমকিতে যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে উঠছে: উ কোরিয়া

কোরিয়া উপদ্বীপে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক মহড়ার বিরুদ্ধে ফের বিষোদগার করে উত্তর কোরিয়া বলেছে, এ হুমকির মুখে যুদ্ধটা এখন অনিবার্য হয়ে উঠছে।

>>রয়টার্স
Published : 7 Dec 2017, 03:32 PM
Updated : 7 Dec 2017, 03:32 PM

বুধবার এক বিবৃতিতে উত্তর কেরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র এ মন্তব্য করেন। তার নাম প্রকাশ করা হয়নি৷

কোরিয়া উপদ্বীপে যুদ্ধের পরিবেশ সৃষ্টিতে মার্কিন কর্মকর্তাদের ‘উসকানিমূলক মন্তব্যকেও’ মুখপাত্র দায়ী করেছেন।

উত্তর কোরিয়ার দেওয়া হুমকির মধ্যেই ওই অঞ্চলে গত সোমবার থেকে ‘ভিজিল্যান্ট এইস’ নামের বার্ষিক মহড়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া। চলবে শুক্রবার পর্যন্ত।

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এ সামরিক মহড়ার মধ্য দিয়ে যুদ্ধের প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ করে উত্তর কোরিয়ার মুখপাত্র বলেন, “এখন বাকি প্রশ্ন হচ্ছে, যুদ্ধ কখন শুরু হবে? আমরা যুদ্ধ চাই না, কিন্তু গা ঢাকা দেওয়ার চেষ্টাও করব না।”

বুধবারের বিবৃতিতে মুখপাত্র একথা বলেন বলে জানিয়েছে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ।

আন্তর্জাতিক চাপ ও জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পিয়ংইয়ংয়ের ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার কারণে কোরিয়া উপদ্বীপ অঞ্চলে উত্তেজনা বেড়েছে।

গত সপ্তাহে উত্তর কোরিয়া তাদের ‘সবচেয়ে দূরপাল্লার’ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার কথা জানায়, যেটি যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডের যে কোনও জায়গায় আঘাত হানতে সক্ষম বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের।

যার প্রতিক্রিয়ায় হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এইচ আর ম্যাকমাস্টার চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের সম্ভাবনা ‘দিন দিন বেড়েই চলছে’ বলে মন্তব্য করেছেন।

রোববার রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহামও যুদ্ধের আশঙ্কায় দক্ষিণ কোরিয়া থেকে মার্কিন সেনাদের স্ত্রী-সন্তানদের সরিয়ে আনতে পেন্টাগনের প্রতি অনুরোধ জানান।

এরই মধ্যে বুধবার উত্তর কোরিয়াকে শক্তিমত্তা জানান দিতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সুপারসনিক বি-ওয়ান বোমারু বিমান দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়ায় যোগ দেয়।

দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদের ধারাবাহিকভাবে হুমকি দিয়ে আসা পিয়ংইয়ং এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

“সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র কোরিয়ার জনগণকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে কোরিয়া উপদ্বীপে বৃহত্তম সামরিক মহড়া চালাচ্ছে। দেশটির উচ্চপদস্থ রাজনীতিকরা একের পর এক মারমুখো মন্তব্য করে ভয়ঙ্কর সব লক্ষণ দেখাচ্ছেন। কোরিয়া উপদ্বীপে আমাদেরকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে হুমকি দেওয়া ছাড়া এই ধরনের উসকানিমূলক মন্তব্যের আর কোনও মানে থাকতে পারে না,” বলেন উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই মুখপাত্র।

যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ মহড়াকে ঘিরে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই চলতি সপ্তাহে পিয়ংইয়ং সফর করছেন জাতিসংঘের রাজনীতি বিষয়ক প্রধান জেফ্রি ফেল্টম্যান। ২০১২ সালের পর এটিই প্রথম বৈশ্বিক এই সংস্থাটির উচ্চপদস্থ কোনও কর্মকর্তার উত্তর কোরিয়া সফর।

ফেল্টম্যান বুধবার উত্তর কোরিয়ার উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাক মিয়ং গুকের সঙ্গে বৈঠক করেন; বৈঠকে তারা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।