ফের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়বেন পুতিন

চতুর্থ দফা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হতে আাগামী বছরের মার্চের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Dec 2017, 05:19 AM
Updated : 7 Dec 2017, 05:36 AM

বুধবার নিঝনি নভগরোদের ভোলগা শহরের একটি গাড়ি কারখানার শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তৃতায় তিনি এ ঘোষণা দেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

“রাশিয়ান ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থীতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি,” বলেন ২০০০ সালের পর থেকে রাশিয়ার ক্ষমতার লাগাম ধরে রাখা পুতিন।

আগামী নির্বাচনে জয়ী হলে রাশিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ২০২৪ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করার সুযোগ পাবেন।

রাশিয়ার এক টেলিভিশন সাংবাদিক কেসেনিয়া সবচাকও প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন; যদিও জনমত জরিপ বলছে, নির্বাচনে পুতিন তাকে সহজেই পরাজিত করতে পারবেন।

অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দেশটির প্রধান বিরোধী দলের নেতা আলেক্সিই নাভালনির নির্বাচনে অংশগ্রহণে আনুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞা আছে। অবশ্য তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে নাভালনি বলছেন, এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। 

সিরিয়ায় সামরিক হস্তক্ষেপ ও ইউক্রেইনের ক্রিমিয়াকে মানচিত্রে সংযোজন করে বিশ্বমঞ্চে রাশিয়াকে ফের শক্তিশালী দেশ হিসেবে উপস্থাপন করায় অধিকাংশ রুশের কাছেই পুতিনের জনপ্রিয়তা প্রশ্নাতীত।

যদিও সমালোচকরা তার বিরুদ্ধে দুর্নীতিতে মদদ দেওয়া এবং ক্রিমিয়া দখলের অভিযোগ করে থাকেন।

২০১৪ সালে ইউক্রেইনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া অধিগ্রহণ করার কারণে রাশিয়া আন্তর্জাতিক মহলেরও নিন্দা কুড়িয়েছে।

১৯৫২ সালের ৭ অক্টোবর তৎকালীন লেনিনগ্রাদে (বর্তমানের সেইন্ট পিটার্সবুর্গ) জন্ম নেওয়া পুতিন বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা শেষে সোভিয়েত ইউনিয়নের গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবিতে যোগ দেন। কমিউনিস্টশাসিত পূর্ব জার্মানিতে গোয়েন্দা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

রাশিয়ার পুতিন যুগে তার অনেক সাবেক সহযোদ্ধাই রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত আছেন।

১৯৯০ সালে পুতিন সেইন্ট পিটার্সবুর্গের মেয়র আনাতলি সবচাকের শীর্ষ উপদেষ্টা হন; সবচাকই একসময় পুতিনকে আইন পড়িয়েছিলেন।

সাত বছর পর পুতিন রাশিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বরিস ইয়েলৎসিনের মাধ্যমে ক্রেমলিনে প্রবেশ করে কেজিবির উত্তরসূরী গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিসের (এফএসবি) প্রধান মনোনীত হন, এরপর পান প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার।

১৯৯৯-র নববর্ষের প্রাক্কালে ইয়েলৎসিন দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুতিনের নাম ঘোষণা করেন।

পরের বছর মার্চের নির্বাচনে সহজেই জয়লাভ করে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন পুতিন, ২০০৪ সালের নির্বাচনে ফের জয়লাভ করেন তিনি।

সংবিধান অনুযায়ী পরপর দুই মেয়াদের বেশি প্রেসিডেন্ট হওয়ার সুযোগ না থাকায় পরের নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সহজ জয় পান। একদফা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালনের পর ২০১২ সালে তৃতীয় দফা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের জয়ী হন তিনি।