‘সৌদি ক্রাউন প্রিন্স নাবালক’

সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের হিটলার’ অ্যাখ্যা দেওয়ার প্রতিক্রিয়ায় সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে ‘নাবালক’ বলেছে তেহরান।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Nov 2017, 06:46 AM
Updated : 25 Nov 2017, 06:46 AM

বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে  খামেনিকে ‘নতুন হিটলার’ বলেন সৌদি ক্রাউন প্রিন্স; তেহরানকে মধ্যপ্রাচ্যে প্রভাব বিস্তার করতে দেওয়া যায় না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

কয়েক ঘণ্টা পর ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে এ বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া আসে।  তারা সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের বক্তব্যকে ‘হটকারী’ অ্যাখ্যা দেয় বলে  বিবিসি জানিয়েছে। 

“তার আচরণ শিশুসুলভ, অবিবেচকের মতো; মন্তব্য ভিত্তিহীন। গত কয়েক বছরে এই অঞ্চলের একনায়কদের কি পরিণতি হয়েছে তাকে সে বিষয়ে চিন্তা করতে জোর পরামর্শ দিচ্ছি,” বলেন ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বাহরাম কাসেমি। 

নীতি ও আচরণে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স একনায়কদেরই ‘আদর্শ হিসেবে বিবেচনা করছেন’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বিবিসি বলছে, দুই বছর আগে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি প্রভাব একচ্ছত্র করতে চেষ্টা করছেন মোহাম্মদ বিন সালমান। এ বছর ক্রাউন প্রিন্স হয়ে ইরানকে কোণঠাসা করতে নিচ্ছেন একের পর এক পদক্ষেপ।

কাতারের সঙ্গে রিয়াদ ও এর মিত্রদের সম্পর্কচ্ছেদ, লেবাননের সৌদিঘনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী সাদ আল-হারিরির পদত্যাগের ঘোষণা এবং ইয়েমেনে সর্বাত্মক যুদ্ধ ও অবরোধ এসবের ধারাবাহিকতা, বলছেন পর্যবেক্ষকরা।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের ‘হিটলার’ অ্যাখ্যা দেওয়া দুই আঞ্চলিক পরাশক্তির মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দেবে বলেও আশঙ্কা করছেন তারা।

নিউ ইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে ক্রাউন প্রিন্স বলেছিলেন, “ইউরোপের ঘটনা থেকে আমরা শিখেছি, মীমাংসার নীতি কাজ করে না। ইউরোপে যা ঘটে গেছে, আমরা চাই না ইরানের নতুন হিটলার মধ্যপ্রাচ্যে তার পুনরাবৃত্তি ঘটাক ।”

সুন্নি শাসিত সৌদি আরবের সঙ্গে শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ ইরানের বিরোধ দীর্ঘদিনের। আঞ্চলিক সংঘাত ও বিভিন্ন যুদ্ধেও দু’দেশের অবস্থান বিপরীতমুখী; একে অপরের বিরুদ্ধে আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা বাড়ানোরও অভিযোগ করে আসছে তারা।

সাম্প্রতিক সময়ে লেবাননের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধ নিয়ে তেহরান ও রিয়াদের বাকযুদ্ধ তীব্রতর হয়েছে। সিরিয়ার পাশাপাশি ইরাকেও দুই পক্ষ এবং তাদের মিত্রদের মধ্যে সংঘাতমুখর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।