লস্কর-ই-তৈয়বার প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ সাঈদ মুক্ত

পাকিস্তানভিত্তিক উগ্রবাদী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ সাঈদ ‘গৃহবন্দিত্ব’ থেকে মুক্তি পেয়েছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Nov 2017, 05:16 AM
Updated : 24 Nov 2017, 05:16 AM

আদালতের আদেশে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় লাহোরের বাসভবন থেকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে বিবিসি জানিয়েছে।

২০০৮ সালে মুম্বাইয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার মূল পরিকল্পনাকারী এই সাঈদই ছিল বলে দাবি ভারত সরকারের। ওই হামলায় ১৬০ জনের বেশি নিহত হয়েছিল।

সাঈদ অবশ্য শুরু থেকেই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।

মুক্তি পাওয়ার পর এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, লাহোর আদালতের আদেশে প্রমাণ হয়েছে মুম্বাই হামলায় তার জড়িত থাকার অভিযোগ মিথ্যা।

“ভারত সবসময় আমাকে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করে আসছে। কিন্তু উচ্চ আদালতে প্রমাণ হয়েছে, তাদের সব অপপ্রচার মিথ্যা।”

সাঈদকে ধরতে যুক্তরাষ্ট্র এক কোটি মার্কিন ডলার পুরস্কারও ঘোষণা করেছিল।

“পাকিস্তানের জনগণ আমাকে জানে, তারা আমাকে ভালোবাসে। কেউ পুরস্কারের জন্য যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষের কাছে যায়নি। আমার কাজ স্পষ্ট, আল্লাহ আমাকে রক্ষা করছেন,” ভিডিও বার্তায় বলেন তিনি।

সন্ত্রাস বিরোধী আইনে গত জানুয়ারি থেকে পাকিস্তানে পাঞ্জাবের প্রাদেশিক সরকারের আবেদনে আদালত সাঈদকে গৃহবন্দি করে রাখার রায় দেয়।

পরে প্রাদেশিক সরকারের পক্ষ থেকে লাহোর হাইকোর্টে সাঈদের গৃহবন্দিত্বের মেয়াদ আরও ৬০ দিন বাড়ানোর আবেদন করা হলেও আদালত তা নাকচ করে দেয়।

সরকারি কৌসুলিরা বলেন, মুক্ত হাফিজ জনসাধারণের জন্য হুমকি হতে পারেন।

লাহোর হাইকোর্টের রিভিউ এ বিষয়ে পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ দেওয়ার আদেশ দিলেও সরকার তা উপস্থাপন করতে পারেনি।

পরে বিচারকরা রায়ে জানান, সাঈদের বিরুদ্ধে কোনও যুক্তি-প্রমাণ না থাকায় তাকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।

সাঈদের দাবি, তিনি জেইউডির সঙ্গে যোগ দিয়ে সেবামূলক কাজ করেন। একসময় জড়িত থাকলেও সন্ত্রাসের দায়ে নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে লস্কর-ই- তৈয়বার সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, জামাত-উদ-দাওয়া (জেইউডি)জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার ‘ওপেন ফ্রন্ট’।

লস্কর-ই-তৈয়বার মাধ্যমে পাকিস্তান সন্ত্রাসী তৎপরতা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করে আসছে ভারত। ১৯৯০ এর দশকে এই হাফিজ সাঈদই এ জঙ্গি গোষ্ঠীটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

২০০১ সালে ভারতের পার্লামেন্টে এক হামলার জন্য লস্কর ই তৈয়বাকে দায়ী করার পর সাঈদকে তিন মাসের জন্য আটক করা হয়েছিল। কোনো প্রমাণ না পেয়ে পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

তার কর্মকাণ্ড অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘ক্ষতিকারক’- এ কারণ দেখিয়ে ২০০৬ সালের অগাস্টে পাকিস্তান সরকার সাঈদকে ফের আটক করে। এবারও কয়েক মাস পর ছাড়া পান তিনি।

মুম্বাই হামলার পর তাকে একদফা গৃহবন্দিও করে রাখা হয়েছিল।

হামলার পরিকল্পনার একাংশ পাকিস্তানের মাটিতে করা হয়েছিল এবং এর সঙ্গে লস্কর-ই-তৈয়বা জড়িত বলে স্বীকার করে নিলেও প্রমাণের অভাবে ছয় মাস পর পাকিস্তান সরকার তাকে মুক্তি দেয়।