ইয়েমেনের অবরোধ শিথিলে ‘চাপ দিয়েছিল’ যুক্তরাষ্ট্র

ইয়েমেনের চারপাশ ঘিরে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের স্থল, নৌ ও বিমান অবরোধ শিথিল করতে চাপ দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Nov 2017, 05:34 AM
Updated : 23 Nov 2017, 05:35 AM

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন ফোনে সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে অবরোধের মাত্রা কমাতে বলেছিলেন বলে এই বিষয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে।

এরপরই বুধবার সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ত্রাণ সাহায্য পরিবহনের জন্য ইয়েমেনের হোদেইদা বন্দর খুলে দেওয়ার ও ইয়েমেনের রাজধানী সানায় জাতিসংঘের বিমান চলাচলে অনুমতি দেওয়ার ঘোষণা দেয়।

সৌদিদের মন পরিবর্তনের প্রধান কারণ ওয়াশিংটনের চাপই কি না তা পরিষ্কার নয়, তবে রিয়াদের আক্রমণাত্মক বৈদেশিক নীতির সুর নরম করতে চলতি মাসে যুক্তরাষ্ট্র বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নিয়েছিল বলে জানিয়েছেন ওই মার্কিন কর্মকর্তারা।  

এরই অংশ হিসেবে সৌদি যুবরাজকে টিলারসন ফোন করেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে। ৪৫ মিনিটের ওই ফোন আলাপে ইয়েমেনের অবরোধ শিথিলে অনুরোধ করেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

টিলারসনের অন্যতম শীর্ষ উপদেষ্টা আর সি হ্যামন্ডও ওই টেলিফোন আলাপের কথা স্বীকার করেছেন। 

“গত কয়েক মাস ধরেই পররাষ্ট্রমন্ত্রীএই অনুরোধের ব্যাপারে সৌদি আরবের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করছিলেন,” বলেন তিনি।

চলতি মাসের শুরুর দিকে স্থল, নৌ ও বিমানপথে ইয়েমেনে প্রবেশের সবগুলো পথ বন্ধ করে দেয় সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট।

জাতিসংঘসহ বিভিন্ন ত্রাণ সরবরাহকারী সংস্থা রিয়াদের এ পদক্ষেপের কঠোর সমালোচনা করে। দীর্ঘদিন ধরে চলা গৃহযুদ্ধ ও বোমা হামলার কারণে ইয়েমেনের বেসামরিক নাগরিকরা এমনিতেই নানান মানবিক সমস্যায় জর্জরিত, তার মধ্যে সৌদি অবরোধ দেশটিতে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে বলেও হুঁশিয়ার করে তারা।

এরপর থেকেই হোয়াইট হাউস ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল অবরোধ শিথিলে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলা শুরু করেন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্রাম্প প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, মার্কিন কর্মকর্তারা অবরোধের ব্যাপারে যুবরাজ মোহাম্মদ এবং তার ভাই যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত খালিদসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন।

সৌদি আরবের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাও রয়টার্সকে ওই যোগাযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

“তারা ইয়েমেনের অমানবিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানান। সাময়িক অবরোধের মধ্যেও কি করে ব্যাপক ত্রাণ সাহায্য পৌঁছানো যায় তা নিয়ে কাজ করছি বলে আমরা তাদের জানাই,” বলেন তিনি।

সৌদি আরব-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের অধিকাংশ বিষয়ই দেখভাল করা ট্রাম্প জামাতা জারেড কুশনারও অবরোধ শিথিলে মার্কিন চাপের ব্যাপারে আপত্তি করেননি বলে ট্রাম্প প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

প্রেসিডেন্টের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা কুশনারের সঙ্গে সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের সরাসরি যোগাযোগ আছে বলেও জানান তারা।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, দীর্ঘদিনের মিত্র সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদারে ট্রাম্পের চেষ্টা থাকলেও রিয়াদের বর্তমান পররাষ্ট্র নীতি নিয়ে ওয়াশিংটন যে খানিকটা উদ্বিগ্ন সম্প্রতি ইয়েমেন এবং লেবানন প্রসঙ্গে তার কিছুটা আঁচ পাওয়া যাচ্ছে।