ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি কার্যকরের আবেদন ট্রাম্প প্রশাসনের

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জারি করা সর্বশেষ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি কার্যকরে সুপ্রিম কোর্টের কাছে অনুমতি চেয়েছে মার্কিন প্রশাসন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Nov 2017, 07:30 AM
Updated : 21 Nov 2017, 07:30 AM

গত সপ্তাহে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি আপিল আদালত নিষেধাজ্ঞাটি আংশিক কার্যকরে রায় দেওয়ার পর সোমবার ট্রাম্প প্রশাসনের সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

নতুন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় সাময়িক স্থগিতাদেশ দেওয়া এক রায়ের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের করা আপিলের জবাবে নিষেধাজ্ঞাটি আংশিক কার্যকরে মত দিয়েছিলেন সান-ফ্রান্সিসকোর নাইন্থ ইউএস সার্কিট আদালতের তিন বিচারক।

১৩ নভেম্বরের ওই রায়ে আপিল আদালতের বিচারকরা বলেছিলেন, নিষেধাজ্ঞায় থাকা দেশগুলোর সেই নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাধা দিতে পারবে সরকার, যাদের সঙ্গে কোনো মার্কিন নাগরিকের পারিবারিক সম্পর্ক কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কোম্পানির আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক নেই।

রয়টার্স বলছে, নাইন্থ সার্কিট আদালতের নির্দেশের ফলে দেশগুলোতে থাকা মার্কিন নাগরিকদের বাবা-মা, ভাই-বোন, স্ত্রী, সন্তানের পাশাপাশি দাদা-দাদি, নানা-নানি, চাচা, ফুফু, নাতি, নাতনি, শ্যালক, শ্যালিকা,চাচি, ফুফা, খালা-খালু, ভাই কিংবা বোনের ছেলে-মেয়ে ও আত্মীয় সম্পর্কিত ভাই-বোনের যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশে সরকার বাধা দিতে পারবে না।

যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা পুনর্বাসন সংস্থার মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ‘কাগজপত্র বা আনুষ্ঠানিকভাবে জড়িত’ বিদেশি নাগরিকদের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যাবে না।

আপিল আদালতের এ সিদ্ধান্তের পর সুপ্রিম কোর্টে যায় ট্রাম্প প্রশাসন।

তাদের দাবি, আগের নিষেধাজ্ঞাগুলোর তুলনায় নতুন এ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার ‘প্রক্রিয়া ও বস্তুগত পার্থক্য’ আছে, যাতে বোঝানো হচ্ছে এটি ‘জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্র নীতির সঙ্গে সম্পর্কিত, ধর্মীয় বিদ্বেষজনিত নয়’।

আপিল আদালতে নিষেধাজ্ঞার কিছু অংশ কার্যকরে স্থগিতাদেশ বহাল থাকায় সুপ্রিম কোর্ট তা বদলে ‘নির্দিষ্ট দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাধা দেওয়ার যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্টের ঘোষণা বাস্তবায়নে’ অনুমতি দেবে বলেও আশা মার্কিন প্রশাসনের।

প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার সপ্তাহখানেক পরেই ট্রাম্পের প্রথম ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারির ঘোষণা আসে, তীব্র প্রতিবাদ ও আদালতের বাধায় ওই নিষেধাজ্ঞার সংশোধন করে মার্কিন প্রশাসন। আইনী লড়াইয়ের পর সেপ্টেম্বরে ট্রাম্পের দ্বিতীয় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হয়, আদালতের বাধার কারণে যা পুরোপুরি কার্যকর করা যায় নি। 

২৪ সেপ্টেম্বর ট্রাম্প ইরান, লিবিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেন, সোমালিয়া ও চাদের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশ ঠেকাতে তৃতীয় দফা ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেন। একই নিষেধাজ্ঞায় উত্তর কোরিয়া ও ভেনিজুয়েলার কিছু নাগরিকের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

এ নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের ইসলামিক স্টেটের (আইএস) মতো জঙ্গি সংগঠনের হামলা থেকে রক্ষা করতে প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প। যদিও সমালোচকরা বলছেন, আগের নিষেধাজ্ঞার মতোই এটি আসলে ‘মুসলিম ব্যান’, যা রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল।