বৃহস্পতিবার রেডিও উপস্থাপক লিয়েন টুয়েডেন লস অ্যাঞ্জেলস স্টেশন কেএবিসির ওয়েবসাইটে এ অভিযোগ করেন বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
২০০৬ সালের ডিসেম্বরে মধ্যপ্রাচ্যে থাকা মার্কিন সৈন্যদের বিনোদন দিতে যে দল পাঠানো হয় তার সদস্য ছিলেন লিয়েন ও ফ্রাঙ্কেন। তখনই হয়রানির এসব ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ লিয়েনের।
ফ্রাঙ্কেন তখনো রাজনীতিতে আসেননি, ছিলেন কৌতুক অভিনেতা।
লিয়েন জানান, ওই ট্যুরের এক অনুষ্ঠানের চিত্রনাট্য লিখেছিলেন ফ্রাঙ্কেন, যেখানে দুজনের চুমু খাওয়ার দৃশ্য ছিল।
“আমি তার উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ করেছিলাম, যদিও ভেবেছিলাম মঞ্চে চুমু খাওয়ার সময় শেষ মুহুর্তে আমি মাথা সরিয়ে নেবো কিংবা তার মুখ হাত দিয়ে ঢেকে দেবো, যা আরও বেশি কৌতুককর হবে। কিন্তু অনুষ্ঠানের আগেই ফ্রাঙ্কেন এ দৃশ্যটি রিহার্সেল করতে জোর করতে থাকেন।”
কুয়েতে ওই অনুষ্ঠানের আগে করা রিহার্সেলের মধ্যেই ফ্রাঙ্কেন তাকে জোর করে চুমু খান বলে অভিযোগ লিয়েনের।
এমনকি ট্যুর থেকে ফেরার পথে সামরিক বাহিনীর বিমানে ঘুমন্ত অবস্থায় ফ্রাঙ্কেন তার স্তনেও হাত দেন।
“ফের আক্রান্ত হলাম। বিব্রত, ছোট, অপমানিত লাগছিল,” বলেন লিয়েন।
এ সংক্রান্ত একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও দিয়েছেন তিনি, যেখানে ফ্রাঙ্কেনকে বোকা বোকা ভাব নিয়ে ক্যামেরার দিকে তাকানো অবস্থায় লিয়েনের স্তনে হাত দিতে দেখা যাচ্ছে; সামরিক পোশাক পরা লিয়েনের চোখ দুটো তখন বোজা।
লিয়েনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্টটির সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি রয়টার্স।
ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন ডেমোক্রেট সিনেটর আল ফ্রাঙ্কেন। জোর করে চুমু খাওয়ার কথা স্মরণ করতে না পারলেও বিমানের ঘটনা মজা করার জন্য করেছিলেন বলেও দাবি তার।
“লিয়েনের কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। ছবিতেই দেখা যাচ্ছে মজা করার জন্য তা করা হচ্ছিল, যদিও এটা আমার উচিত হয়নি,” বলেন তিনি।
রিপাবলিকান দলের নেতা সারাহ পলিন যৌন হয়রানির এই অভিযোগের পর ডেমোক্রেট সিনেটরকে পদ ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
আলাবামায় তার দলের সিনেট প্রার্থী রয় মুরের বিরুদ্ধে একাধিক নারীর যৌন হয়রানির অভিযোগের ব্যাপারে এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলতে এসে পলিন এ আহ্বান জানান।
মুরের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবারও দুই নারী যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এ নিয়ে ৭ নারী তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলো।
হলিউডের বেশ ক’জন স্বনামধন্য অভিনেতা ও প্রযোজকের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক অভিযোগের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনও যৌন হয়রানির অভিযোগে টালমাটাল।
নারীদের নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে সমালোচিত হওয়া বর্তমান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধেও যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছেন বেশ ক’জন নারী; সাবেক প্রেসিডেন্ট বুশ সিনিয়রের বিরুদ্ধেও হয়রানির অভিযোগ করেছেন কয়েকজন।
ফ্রাঙ্কেনের অভিযোগ নিয়ে সরব ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান দলের নেতারা। ডেমোক্রেট সিনেটরের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সিনেটের এথিকস কমিটির প্রতিও আহ্বান জানিয়েছে তারা।
ফ্রাঙ্কেন বলেছেন, এথিকস কমিটির তদন্তে তিনি সহায়তা করবেন।