তৃতীয়বারের মতো জাপানের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন আবে

পাঁচ বছরের মধ্যে টানা তৃতীয়বারের মতো জাপানের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন শিনজো আবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তিনিই দেশটিতে সর্বাধিকবার নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী।

এস এম নাদিম মাহমুদ, জাপান থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Oct 2017, 01:13 PM
Updated : 22 Oct 2017, 01:13 PM

দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের ৪৬৫ টি আসনের মধ্যে ২৮৯ আসনের সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে স্থানীয় সময় রাত সোয়া ৯ টা নাগাদ শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের নেতৃত্বধীন ক্ষমতাসীন রক্ষণশীল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) ও তাদের শরিক কুমেতো ২১৪ আসন পেয়েছে। আর বিরোধী শিবির পেয়েছে ৯২ টি আসন।

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এনএইচকে ইতোমধ্যে শিনজো আবেকেই পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করেছে।

সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় দুই তৃতীয়াংশ আসনের চেয়ে তার দল বেশি আসন পাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

সর্বশেষ খবরে দেখা গেছে, ক্ষমতাসীন এলডিপি পেয়েছে ১৮৯ আসন, তাদের শরিক পেয়েছে ২৫,এলডিপি থেকে বের হয়ে টোকিওর প্রথম নারী গর্ভনর ইরিকো কইকে নেতৃত্বাধীন কিবো নো তো (আশার দল) পার্টি পেয়েছে ২৯ টি আসন, কনস্টিটিউশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (সিডিপি) ৩৩ টি, কমিউনিস্টি পার্টি পেয়েছেন ৭ ‍টি আসন।

বিশ্লেষকরা মনে করছে, এলডিপি নিজেই ২৮৯ টি আসন পাবে। আর শরিক দলগুলো মিলে ৩২৩ আসন পেতে পারে।

মাত্র এক মাস আগে নতুন দল কিবো নো তো গঠন করে সবাইকে অবাক করে দিয়েছেন ইরিকো কইকে। ভোটের রায় মেনে নিয়ে জরুরি এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন,“ এটি সত্যি কষ্টকর দিন। আমি ভেবেছিলাম আমরা ভাল করব, কিন্তু আমরা পারিনি। জনগণের কাছে যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম তার জন্য আমরা ক্ষমা চাচ্ছি। আমি টোকিও গর্ভনর হিসেবে যে ক্যাম্পেইন করেছি তা অপূর্ব ছিল। আমি এ ভোটের রায় মেনে নিচ্ছি।”

ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা মাইহারা সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনিও জনগণের রায় মেনে নেন।

৭৩ বছর বয়সী শিনজো আবে ১৯৯৩ সালে প্রথমবারের মতো এলডিপি’র টিকিটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

এক সময় কোবে স্টিল কোম্পানির কর্মকর্তা হিসেবে কাজ  করে আসা শিনজো আবে ২০০৬ সালে কয়েক মাসের জন্য এলডিপি’র হয়ে প্রধানমন্ত্রী হলেও একমাত্র ২০১২ সালে প্রথমবারে মতো জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

দুই বছরের মথায় ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে ‘আবেনোমিক্স’ বা ‘আবেতত্ত্ব’ দেশটির অর্থনীতিকে আরও বেশি চাঙ্গা করবে বলে ফের দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসেন।

এরপর উত্তর কোরিয়ার ক্রমাগত আগ্রাসী, দেশের অর্থনৈতিতে ধস,মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট নিয়ে জনগণের জনপ্রিয়তা নিম্নমুখী হয়ে পড়লে গত ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী আবে নতুন নির্বাচনের ঘোষণা দেন।

এবারের নির্বাচনে শিনজো আবে বয়স্কদের জন্য সুরক্ষা ও উত্তর কোরিয়াকে দমন করার প্রত্যয়ে প্রচারণা চালান।

নিশ্চিত জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছানোর পর শিনজো আবে সাংবাদিকদের বলেন, “এটি আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। জাপানের জনগণের সুরক্ষায় দল কাজ করবে। একইসঙ্গে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্ব ঐক্য গড়তে এলডিপি নেতৃত্ব সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে।”

এলডিপি’কে ক্ষমতায় আনার জন্য আবে সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

এর আগে গত বছর দেশটির উচ্চকক্ষের নির্বাচনেও শিনজো আবের দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছিল। ওই সময় শিনজো আবের নেতৃত্বাধীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি(এলডিপি) জোট উচ্চকক্ষের ২৪২ আসনের মধ্যে ১৪৪ টি আর বিরোধীরা ৭৩ টি আসন পেয়েছিল।

এর আগের সাধারণ নির্বাচনের ভোটারদের নূন্যতম বয়স ২০ বছর থাকলেও এবারই প্রথম জাপান সরকার ভোটারদের নূন্যতম বয়স ১৮ বছর নির্ধারণ করেছে।