ক্যালিফোর্নিয়ায় হেপাটাইটিসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৯

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে হেপাটাইটিস-এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Oct 2017, 05:30 AM
Updated : 19 Oct 2017, 08:00 AM

গত বছরের নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত ক্যালিফোর্নিয়ায় ভাইরাল এই রোগটিতে আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচশ ছাড়িয়েছে এবং এরই মধ্যে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর দিয়েছ বিবিসি।

আক্রান্তদের বেশিরভাগই গৃহহীন মানুষ বলে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

অঙ্গরাজ্যটির গভর্নর প্রাণঘাতি এই ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সপ্তাহখানেক আগে স্বাস্থ্য বিষয়ক জরুরি অবস্থাও জারি করেন। যুক্তরাষ্ট্রে গত দুই দশকের মধ্যে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার হেপাটাইটিস-এ এর প্রাদুর্ভাব ছড়াল। মানবদেহের যকৃতে আক্রমণকারী এ ভাইরাস সাধারণত মলজাতীয় জিনিসের মাধ্যমে ছড়ায়; যৌন সংসর্গ কিংবা জীবাণুবাহী খাবার ও বস্তু স্পর্শের মাধ্যমেও এটি অন্য দেহে বিস্তৃত হতে পারে।

বিবিসি জানিয়েছে, ক্যালিফোর্নিয়ার সান দিয়েগো শহরেই ভাইরাসটিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। শহরটির কর্মকর্তারা ব্লিচ ছিটিয়ে বিভিন্ন রাস্তাকে জীবাণুমুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছেন, বসানো হচ্ছে হাত ধোয়ার স্থানও।

স্থানীয় এক কাউন্সিলার অঙ্গরাজ্যের পরিবেশ গবেষণা সংস্থাকে শহরের খাবার পানির মধ্যে হেপাটাইটিসের জীবাণু আছে কি না, তা পরীক্ষা করে দেখতে অনুরোধ জানিয়েছেন। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মৌলিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও পয়ঃনিষ্কাশনের সুযোগ না পাওয়ায় শহরের গৃহহীনদের মধ্যে হেপাটাইটিস-এ ছড়িয়ে পড়ছে, যে কারণে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। সান দিয়েগোতে পাঁচ হাজারেরও বেশি আশ্রয়হীন ব্যক্তি রাস্তায় ঘুমায় বলে সাম্প্রতিক এক গবেষণার বরাত দিয়ে জানিয়েছে রিজিওনাল টাস্ক ফোর্স অন দ্য হোমলেস। শহরটিতে গৃহহীনদের এই সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ বেড়েছে বলেও জানিয়েছে তারা।

অঙ্গরাজ্যটির অন্যান্য শহরের গৃহহীনদের মধ্যেও হেপাটাইটিস-এ ছড়িয়ে পড়ছে। সান্তা ক্রুজ, লস অ্যাঞ্জেলসের পাশাপাশি উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ার সান ফ্রান্সিসকোতেও হাজারো গৃহহীনকে এই ভাইরাসের টিকা দেওয়া হয়েছে।

কর্মকর্তারা বলছেন, আক্রান্ত ১০০ জনের মধ্যে ১ জনের মৃত্যু সাধারণ ব্যাপার হলেও ‘ঝুকিপূর্ণ’ হিসেবে বিবেচিত গৃহহীনদের মধ্যে রোগটি ছড়িয়ে পড়ায় মৃত্যুর হার অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে।

ভাইরাসটির উপসর্গের মধ্যে আছে জ্বর, ক্লান্তি, পেট ব্যাথা, গা গুলানো ও বমি; আক্রান্তের শরীরে জন্ডিস বাসা বাধতে পারে, চামড়া ও চোখ হলুদ হয়ে যেতে পারে।

ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর জেরি ব্রাউন গত ১৩ অক্টোবর অঙ্গরাজ্যজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে গৃহহীনদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয় এমন ক্লিনিকগুলোতে পর্যাপ্ত টিকা ও প্রতিষেধক পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছেন।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়ার পরও ভাইরাসটির তীব্রতা কমতে কয়েক মাস এমনকি বছরও লেগে যেতে পারে।