বুধবার ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেসে তিনি বলেছেন, ‘চীনা সমাজতন্ত্রের’ অধীনে তাদের দ্রুত অগ্রগতি অন্যান্য দেশকে নতুন পথের দিশা দিয়েছে।
রুদ্ধদ্বার এই সম্মেলনেই ঠিক হবে পরবর্তী মেয়াদে চীনের নেতৃত্ব কে দেবেন এবং আগামীতে দেশটির গতিপথ কী হবে।
২০১২ সালে কমিউনিস্ট পার্টির নেতা হয়েছিলেন শি। পরে পাঁচ বছরে তিনি নিজের ক্ষমতা আরও দৃঢ় করেছেন এবং তিনিই পার্টি প্রধান রয়ে যাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কংগ্রেস শেষ হওয়ার পরপরই কমিউনিস্ট পার্টি চীনের শীর্ষ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী পরিষদ পলিটব্যুরো স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এই কমিটিই দেশটি পরিচালনা করবে।
তিন ঘণ্টার বক্তব্যে চীনের সাম্প্রতিক অর্জনগুলো তুলে ধরে শি জিন পিং বলেন, ‘চীনা বৈশিষ্ট্যের সমাজতন্ত্রের এই নতুন যুগের’ অর্থ চীন এখন ‘বিশ্বের বড় শক্তি হয়ে উঠেছে’ এবং ‘মানবজাতির ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা’ পালন করছে।
তিনি বলেন, কমিউনিস্ট শাসনের অধীনে প্রবৃদ্ধির চীনা মডেল বিকশিত হয়েছে এবং অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশকে একটি নতুন পথ দেখিয়েছে।
শি জিন পিং ক্ষমতায় আসার পর থেকে চীনের অর্থনীতি দ্রুত গতিতে বেড়েছে। তবে এই সময়ে দেশটির কর্তৃত্ববাদী আচরণ আরও বেড়েছে, বিভিন্ন বিষয়ে সেন্সরশিপ এবং আইনজীবী ও অধিকারকর্মীদের গ্রেপ্তারের ঘটনাও বেড়েছে।
বক্তব্যে শি ২০৫০ সাল নাগাদ চীনের ‘সমাজতন্ত্রের আধুনিকীকরণের’ পরিকল্পনা দেন, যেখানে পরিবেশগত ও অর্থনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমে আরও ‘সমৃদ্ধি ও সৌন্দর্য’ আনার কথা বলা হয়েছে।
শি বলেন, “চীন বিশ্বের জন্য তার দ্বার বন্ধ করবে না।”
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রতিবন্ধকতা শিথিল করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
দলীয় শৃঙ্খলা বাড়াতে কিছু পদক্ষেপের কথা বলেছেন শি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার শক্ত অবস্থানের কথাও উল্লেখ করেন।
শি’র আমলে চীনে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে ১০ লাখের বেশি কর্মকর্তাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে বলে বেইজিংয়ে বিবিসির প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।
চলতি সপ্তাহের প্রথমদিক থেকেই রেল স্টেশন ও পরিবহনের কেন্দ্রগুলোতে শুরু হওয়া অতিরিক্ত তল্লাশির জন্য যাত্রীদের দীর্ঘ লাইনে পড়তে দেখা গেছে।
নিরপত্তা কড়াকড়ির কারণে রেস্তোরাঁ, জিম, নাইট ক্লাব ও কারাওকি বারগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। বেইজিংয়ের কেন্দ্রস্থলে হোটেল বুকিংও বন্ধ থাকার খবর জানা গেছে।
এই কংগ্রেসে শি পার্টিতে নিজের অবস্থান আরও সংহত করবেন বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক।
দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, শি’র ‘কর্ম প্রতিবেদন’ বা রাজনৈতিক চিন্তা অন্তর্ভুক্ত করার জন্য নিজেদের সংবিধান পুনরলেখনের প্রত্যাশা করছে পার্টি, যা শিকে পূর্ববর্তী দিকপাল পার্টি নেতা মাও দেজং এবং দেং শিয়াওপিংয়ের কাতারে নিয়ে যাবে।