কিরকুক ঘিরে উত্তেজনা, ‘শান্ত থাকার’ আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের

উত্তরাঞ্চলের কুর্দি নিয়ন্ত্রিত কিরকুক শহর ও এর মূল স্থাপনাগুলো ইরাকি বাহিনী দখলে নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র সব পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Oct 2017, 07:11 AM
Updated : 17 Oct 2017, 07:11 AM

সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হিদার নয়ের্ত বিবদমান পক্ষগুলোকে ‘আরও সংঘাত এড়াতে’ পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানান বলে খবর বিবিসির।

কুর্দিস্তানের স্বাধীনতা প্রশ্নে অনুষ্ঠিত এক গণভোটের তিন সপ্তাহ পর ইরাকি বাহিনী রোববার কুর্দিদের পেশমেরগা বাহিনীকে হটিয়ে কিরকুকের নিয়ন্ত্রণ নেয়।

২০১৪ সালে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হাত থেকে কুর্দিস্তানের কাছের তেলখনিগুলোর সুরক্ষায় কিরকুকে অবস্থান নিয়েছিল কুর্দি বাহিনী। তখন থেকেই শিয়া অধ্যুষিত শহরটির তাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল।

২৫ সেপ্টেম্বরে গণভোটে শহরের কুর্দি নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতেও ব্যাপক সাড়া পড়েছিল।  কুর্দিস্তানের সীমানার বাইরে হলেও এখানকার কুর্দিদের ভোট দেবার অনুমতি ছিল।

ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদি এ গণভোটকে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়েছেন। অন্যদিকে কুর্দিস্তানের আঞ্চলিক সরকার (কেআরজি) এ ভোটকে বৈধ বলে দাবি করেছে।

গণভোটের পর সৃষ্ট টানাপোড়েনের মধ্যেই কিরকুকের তেলখনি, সামরিক স্থাপনা ও বিমান ঘাঁটি বাগদাদ না কেআরজির দখলে থাকবে তা নিয়ে হিসাবনিকাশ শুরু হয়। 

রোববার বাগদাদের চাওয়া অনুযায়ী কেআরজির নেতারা গণভোটের ফল প্রত্যাখ্যান করতে অস্বীকৃতি জানানোয় আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পরই শিয়া মিলিশিয়াদের নিয়ে ইরাকি বাহিনী কিরকুকের দখল নিতে অগ্রসর হয় এবং প্রায় ‘বিনা বাধায়’ কিরকুকের নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয়। 

এরপরই কিরকুক এবং আশেপাশের অন্যান্য বিরোধপূর্ণ এলাকায় ইরাকি পতাকা উড়িয়ে রাখার নির্দেশ দেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদি।

পেশমেরগা হিসাবে পরিচিত কুর্দি নিরাপত্তা বাহিনীকে শান্তি বজায় রাখতে সহযোগিতা করার আহ্বার জানিয়েছে বাগদাদ। আর কেআরজি বলছে, কুর্দিস্তানের জনগণের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়ার জন্য বাগদাদকে চরম মূল্য দিতে হবে।

এই প্রেক্ষিতে সবাইকে শান্ত থাকতে সোমবার আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্র।

“কিরকুক ঘিরে সহিংসতার যেসব খবর পাওয়া যাচ্ছে তাতে ওয়াশিংটন উদ্বিগ্ন। ইরাকের সংবিধান অনুযায়ী বিরোধপূর্ণএলাকাগুলোতে আঞ্চলিক ও কেন্দ্রীয় সরকারের যৌথ প্রশাসনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে আমরা সমর্থন করি” বলেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নয়ের্ত।

যুক্তরাষ্ট্র সব পক্ষকে আলোচনায় বসাতে কাজ করছে বলেও জানান তিনি।

“ইরাকে আইএসকে পরাজিত করতে এখনো অনেক কাজ বাকি,”এক মন্তব্যে বলেন তিনি। 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তার দেশের কর্মকর্তারা ‘কোনো পক্ষ নিচ্ছে না’।

“তারা একে অপরের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াক আমরা তা চাইছি না,” বলেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের আর্মড সার্ভিস কমিটির প্রধান জন ম্যাককেইন বাগদাদ সরকারকে সতর্ক করে বলেছেন, ইরাককে দেওয়া অস্ত্র যদি কুর্দি বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হয় তাহলে ‘পরিণতি ভালো হবে না’।

“আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও বাইরের হুমকি থেকে নিজেদের রক্ষা করতে ইরাক সরকারকে অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, নিজদেশের আঞ্চলিক সরকারের ওপর হামলা করতে সেগুলো দেওয়া হয়নি,”বলেন তিনি।