জাতিসংঘে ‘ভুয়া ছবি’ দেখিয়ে হাসির খোরাক পাকিস্তানি দূত

বলা হয়ে থাকে, হাজারো শব্দ মিলে যে ভাব ফুটিয়ে তোলা যায় না, একটি ছবির ভাষায় তা মুহূর্তেই দৃশ্যমান হয়ে উঠে। তবে সেই ছবি যদি নকল হয় তা যে আপদ ডেকে আনবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Oct 2017, 06:08 AM
Updated : 1 Oct 2017, 07:17 AM

এমন আপদের ফাঁদে এবার পড়েছে পাকিস্তান; জাতিসংঘে দেশটির স্থায়ী প্রতিনিধি মালিহা লোধি গত সপ্তাহে সাধারণ পরিষদে অধিবেশনে এমন একটি ছবি দেখিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার মুখে পড়েছেন।

বিবিসি বলছে, কাশ্মিরে ‘ভারতের নৃশংসতা’র প্রমাণ হিসেবে ক্ষত-বিক্ষত এক কিশোরীর ছবি দেখিয়ে লোধি ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান।

কিন্তু পরে দেখা যায়, ছবিটি আসলে ১৭ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি এক কিশোরীর, যেটা গাজায় ২০১৪ সালে স্বনামধন্য আলোকচিত্রশিল্পী হেইডি লেভিনের তোলা। ইসরাইলের হামলায় শার্পনেলের আঘাতে আহত হয়েছিল ওই কিশোরী।

 

লোধি দাবি করেন, ওই কিশোরী কাশ্মিরে ভারতীয় বাহিনীর এয়ার গানের গুলিতে আহত হয়। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যে ইন্টারনেটের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বের হয়, ওটা এয়ারগানের আঘাত নয়, শার্পনেলের।

ওই ছবি কাশ্মিরের নয় খবর বের হওয়ার পর বিষয়টি তোলপাড় চলছে সামাজিক যোগাযোগে। পাকিস্তানের চিরশত্রু ভারতের নাগরিকরা মশকরা করার সুযোগের ষোলো আনা সদ্ব্যবহার করছেন। ‘দেশের মাথা হেঁট হয়েছে’ বলে পাকিস্তানিরাও ক্ষেপে গিয়ে কূটনীতিকদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।

 

এর আগে ভারতও বিভিন্ন বিষয়ে ভুয়া ছবি ব্যবহার করে সমালোচনার মুখে পড়লেও কাশ্মিরের বিতর্কিত বিষয় নিয়ে এই কাজ করায় বড় ধরণের হাসির খোরাক হয়েছেন লোধি।

সোমবার ভারতীয় কূটনীতিক পাওলোমি ত্রিপাঠি জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে অভিযোগ করেন, ‘সম্পূর্ণ বানোয়াট একটি কাহিনীকে বিশ্বাসযোগ্য করতে ভুয়া ছবি’ ব্যবহার করছে পাকিস্তান।

পাকিস্তানের দৈনিক দ্য ন্যাশন এটাকে ‘বিব্রতকর অপরাধ’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। তবে কোনো কোনো পাকিস্তানি দেশের পক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লড়াই করার সুযোগ নিতে ছাড়ছেন না।

তাদের ভাষ্য, এয়ার গান (প্যালেট গান) নিয়ে কথা বলতে ভারতকে বাধ্য করেছেন লোধি। ভারতীয়রা এখন এয়ার গানের আঘাতে প্রকৃত আহতদের নিয়ে কথা বলছে।

অধিবেশনের শেষ দিকে পাকিস্তানি কূটনীতিক টিপু উসমান বলেন, সমালোচনার মুখোমুখি না হয়ে ‘ভারত একটা ছবির পেছনে লুকাতে চাচ্ছে।

তবে ওই ছবিটি যে কাশ্মিরের নয় সে বিষয়ে লোধি বা পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।