পাঁচ মাত্রার ওই ঘূর্ণিঝড়টি তিনদিন ধরে দ্বীপরাষ্ট্রটির একপাশ থেকে অপরপাশ পর্যন্ত তাণ্ডব চালায়। এতে যে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা দ্রুত কাটিয়ে উঠতে সবাইকে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রাউল ক্যাস্ত্রো।
শুক্রবার রাতে ঘন্টায় ২৫৩ কিলোমিটার বাতাসের বেগ নিয়ে কিউবায় আঘাত হানে ইরমা। এরপর দ্বীপটির উত্তরাঞ্চলীয় উপকূল ধরে প্রায় ৩২২ কিলোমিটার এলাকায় তাণ্ডব চালায়, এতে কিউবার ওই উপকূলের ছোট ছোট দ্বীপগুলোতে অবস্থিত পর্যটন অবকাশকেন্দ্রগুলোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে বয়ে আসা জলোচ্ছ্বাসে রাজধানী হাভানার কেন্দ্রস্থল পানিতে তলিয়ে যায়। বাতাসের প্রচণ্ড ধাক্কায় ঘরবাড়ির ছাদ উড়ে যায়, গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে। এতে শহরটির লাখ লাখ বাসিন্দার বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে দেশজুড়ে নিহতদের মধ্যে সাতজনই হাভানা প্রদেশে মারা যায়।
সোমবার দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, ইরমার আঘাতে দেশটির রুগ্ন হয়ে পড়া চিনি শিল্পের গুরুতর ক্ষতি হয়েছে। জলোচ্ছ্বাস ও ব্যাপক বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় আখের খেত ভেসে যায়, আবার কোথাও কোথাও ঝড়ে খেতের আখ উপড়ে পড়ে।
একইদিন রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট রাউল ক্যাস্ত্রো বলেছেন, “প্রকৃতপক্ষে কোনো এলাকাই এর প্রভাব থেকে মুক্ত থাকেনি, এতেই ঝড়টির আকারের বিশালতা বোঝা যাচ্ছে।
“আমাদের ওপর যে কাজের ভার চেপেছে তা প্রায় সীমাহীন, কিন্তু আমাদের দেশের মতো জনগণ সঙ্গে থাকলে আমরা ক্ষতি সারিয়ে তোলার এই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধেও জয়লাভ করবো।”
ইরমার তাণ্ডবে কিউবায় কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কর্তৃপক্ষ এখনও তা পুরোপুরি হিসাব করে উঠতে পারেনি বলে জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়টির কারণে ঘরবাড়ি, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ও কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
বর্তমানে ৮৬ বছর বয়সী এই প্রেসিডেন্ট আগামী বছরের প্রথম দিকে পদ ছেড়ে দিবেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।