আগাম নির্বাচনে আস্থা রাখুন: মে

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে আগাম নির্বাচনে তার ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ার ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে’ এ নির্বাচন তার অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে এবং ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া সফল করতে সহায়ক হবে।

>>রয়টার্স
Published : 19 April 2017, 01:16 PM
Updated : 19 April 2017, 01:16 PM

সবাইকে অবাক করে দিয়ে মঙ্গলবার আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেন মে। ব্রিটেনের বর্তমান সংসদের মেয়াদ ২০২০ সাল পর্যন্ত থাকলেও মে এ বছর ৮ জুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য পার্লামেন্টে প্রস্তাব রাখবেন বলেও জানান।

তার এ সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে বিবিসি কে মে বলেন, অনেক অনিচ্ছা সত্ত্বেও সাম্প্রতিক দিনগুলোতে তিনি মন বদলেছেন। বিবিসি রেডিও ফোর’স টুডে কে তিনি বলেন, “কোনও রাজনীতিবিদই কেবল এই একটি কারণে নির্বাচন করতে চায় না এবং এটি করতে গেলে ঝুঁকি আছে।”

কিন্তু তারপরও দৃঢ়কণ্ঠে মে বলেন,  তিনি ব্রিটিশ জনগণকে বিশ্বাস করেন; আর একারণেই তিনি জনগণকেও তার ওপর আস্থা রাখার অনুরোধ জানাচ্ছেন। দু’বছরের ব্রেক্সিট (ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়া) প্রক্রিয়া সফলভাবে শেষ করতে যে কোনও সময়ের চেয়ে এখন একটি বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দরকার- এমনটিই বিশ্বাস করেন বলে জানান মে।

টেরিজা মে’র আগাম নির্বাচনের প্রস্তাব নিয়ে বুধবার হাউজ অব কমন্সে ভোটাভুটি হবে বলে জানিয়েছে বিবিসি। জয়ের জন্য প্রস্তাবের পক্ষে প্রয়োজনীয় দুই-তৃতীয়াংশ ভোট মে পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গতবছর গণভোটে যুক্তরাজ্যের জনগণ ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে ভোট দিলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন পদত্যাগ করেন, তিনি ইইউ’য়ে থেকে যাওয়ার পক্ষে ছিলেন। ক্যামেরনের পদত্যাগের পর সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং কনজারভেটিভ পার্টির নতুন নেতা টেরিজা মে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন।

প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, গত ২৯ মার্চ ইউরোপী ইউনিয়নে চিঠি পাঠিয়ে তিনি ২৮ দেশের এই পরিবার থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়াও শুরু করেন।

এর আগে একাধিকবার আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনা নাকচ করে আসা মে তার মন পরিবর্তনের ব্যাখ্যায় বলেন, ব্রেক্সিট নিয়ে আলোচনার সময় তার নিজেকে শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন ছিল। কারণ ব্রেক্সিট আলোচনা ব্রিটেনকে নতুন রূপ দেবে এবং ইইউ’র ঐক্যের পরীক্ষা নেবে।

বিবিসি রেডিওকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি এ (আগাম নির্বাচন) সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কারণ আমি সত্যিই বিশ্বাস করি এর সঙ্গে পুরো জাতীর স্বার্থ জড়িত।”

“আপনি সময়সূচির দিকে তাকান; যদি নির্বাচন ২০২০ সালে হয়, ততদিনে আমরা ব্রেক্সিট আলোচনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ পেরিয়ে যাব এবং আলোচনা শেষ হয়ে যাওয়ার পর একটি জাতীয় নির্বাচনের জন্য আমরা কিভাবে আমাদের দৌড় শুরু করব?”

৮ জুন নির্বাচন হলে মে’র দল কনজারভেটিভ পার্টি আরও প্রায় ১০০টির মত আসন বেশি পাবে বলে ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। যাতে মে’র ব্রেক্সিট পরিকল্পনা আরও গতি পাবে।

বর্তমান সংসদে ৬৫০টি আসনের মধ্যে কনজারভেটিভ দলের দখলে  ৩৩০টি এবং প্রধান বিরোধীদল লেবার পার্টির দখলে রয়েছে ২৩২টি আসন।

যুক্তরাজ্যের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক ‘দ্য সান’। মে’র আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়ার পর তাদের হেডলাইন করেছে ‘ব্লু মার্ডার’। কনজারভেটিভ দলের ব্র্যান্ড রঙ নীল। ‘ব্লু মার্ডার’ হেডলাইন দিয়ে তারা আগাম নির্বাচনে লেবার পার্টির আরও আসন হারানোর ইঙ্গিত দিয়েছে।

দ্বিতীয় সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক দ্য ডেইলি মেইল এর হেডলাইন ‘অন্তর্ঘাতককে দমন’।