২৯ মার্চ বাজবে ব্রেক্সিট ঘণ্টা

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে আগামী ২৯ মার্চ ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) জানিয়ে দেবেন, তার দেশ আর ২৮ দেশের এই পরিবারে থাকছে না।

নিউজডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 March 2017, 12:29 PM
Updated : 20 March 2017, 02:54 PM

ডাউনিং স্ট্রিটের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী মে ইইউর বাকি ২৭ সদস্য দেশকে চিঠিতে আর্টিকেল ফিফটি নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব আলোচনায় বসার আগ্রহের কথা জানাবেন।

ইইউতে যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত টিম বারোউ ইউরোপিয়ান কাউন্সিলকে সোমবারই আর্টিকেল ফিফটি নিয়ে আলোচনা শুরুর চূড়ান্ত তারিখ জানিয়ে দিয়েছেন বলেও জানান মের কার্যালয়ের মুখপাত্র।

নয় মাস আগে ঐতিহাসিক গণভোটে ইইউ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পক্ষে রায় দেয় যুক্তরাজ্যবাসী। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে ৫১ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট ব্রেক্সিটের পক্ষে এবং ৪৮ দশমিক ১ শতাংশ ভোট বিপক্ষে পড়ে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন গঠনের পর যুক্তরাজ্যই প্রথম দেশ, যারা এই জোট ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছে; এই প্রক্রিয়াকে সংক্ষেপে বলা হচ্ছে ব্রেক্সিট।

২০০৯ সালের ১ ডিসেম্বর কার্যকর হওয়া লিসবন চুক্তি ইইউর অন্যতম সাংবিধানিক ভিত্তি।  চুক্তির আর্টিকেল-ফিফটিতে জোট ছেড়ে যাওয়ার কেতা-কানুন সংক্ষেপে বলা রয়েছে।

আর্টিকেল ফিফটি অনুযায়ী, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জোট ছাড়ার ইচ্ছা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করার পর বিচ্ছেদের দর কষাকষি শেষ করতে দুই বছর সময় পাওয়া যাবে। ওই সময়ে জোটের বাকি ২৭ দেশ সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে আলোচনায় বসবে।

বিচ্ছেদের পর সম্পর্ক কীভাবে এগোবে সেই দর কষাকষির আলোচনা শুরু করবে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন।  ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের বাকি ২৭ দেশের সামনে তুলে ধরা হবে বিচ্ছেদের খসড়া চুক্তি।

ওই চুক্তি কার্যকরের জন্য অন্তত ২০টি দেশের সম্মতি লাগবে, যারা ইইউর ৬৫ শতাংশ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে।

প্রয়োজনীয় সমর্থন পেলে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের অনুসমর্থন প্রয়োজন হবে সেই বিচ্ছেদ চুক্তিতে।

ব্রেক্সিট নিয়ে আলোচনা শুরু করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে ইইউ।  আর  ২৯ মার্চ যুক্তরাজ্যের তরফ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড তুস্ক বাকি ২৭ সদস্য রাষ্ট্রকে খসড়া আলোচনার নির্দেশিকা পাঠাবেন বলেও ইইউ জানিয়েছে। এতে করে মে মাস নাগাদ আলোচনা শুরু হতে পারে।

১৯৭৩ সালে ইইউতে যোগ দেয় যুক্তরাজন্য। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মে’র জন্য ব্রেক্সিট আলোচনা সহজ হবে না বলে আগেই জানিয়েছেন ইইউ নেতারা।

তার উপর স্কটল্যান্ড ও নর্দান আয়ারল্যান্ডের নেতাদের যুক্তরাজ্য থেকে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি রয়েছে।

গণভোটে ব্রেক্সিটের পক্ষে রায় আসলেও স্কটল্যান্ড ও নর্দান আয়ারল্যান্ডে ইইউতে থেকে যাওয়ার পক্ষে বেশি ভোট পড়েছিল।

স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টারজেওন ব্রেক্সিটের আগে স্বাধীনতা প্রশ্নে নতুন করে গণভোট আয়োজন করতে চাইছেন।

নর্দান আয়ারল্যান্ডের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দলের প্রধান সিন ফেইন বলেছেন, তার দলও যুক্তরাজ্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ইইউ সদস্যরাষ্ট্র আয়াল্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার বিষয়ে গণভোট আয়োজন করতে চায়।

তবে যুক্তরাজ্যের ব্রেক্সিট মন্ত্রী ডেভিড ডেভিস বলেন, “সরকার নিজের অবস্থান নিয়ে সবসময়ই পরিষ্কার ধারণা দিয়েছে: এটি যুক্তরাজ্যভুক্ত সব জাতি ও অঞ্চলের জন্য এবং প্রকৃতপক্ষে পুরো ইউরোপের জন্য প্রযোজ্য হবে। এটি যুক্তরাজ্য এবং ইইউতে আমাদের মিত্র এবং বন্ধুদের মধ্যে একটি নতুন এবং ইতিবাচক অংশীদারিত্ব হবে।”