পাকিস্তানে মাজারে হামলায় মৃত ৮০, দমনাভিযানে ৩১ জঙ্গি নিহত

পাকিস্তানে সিন্ধু প্রদেশের মাজারে আত্মঘাতী হামলায় মৃতের সংখ্যা ৮০ জনে দাঁড়িয়েছে। হামলার পরপরই চালানো নিরাপত্তা অভিযানে অন্তত ৩১ জঙ্গি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Feb 2017, 06:43 PM
Updated : 17 Feb 2017, 01:03 PM

শেহওয়ান এলাকার বিখ্যাত লাল শাহবাজ কালান্দার মাজারে বৃহস্পতিবারের ওই হামলায় আরও আড়াইশতাধিক মানুষ আহত হয়। ইসলামিক স্টেট (আইএস) হামলার দায় স্বীকার করেছে।

কর্মকর্তারা জানান, হামলার পর সিন্ধুতে অভিযান চালিয়ে ১৮ জঙ্গিকে এবং উত্তর-পশ্চিমের খাইবার-পাখতুনখাওয়া প্রদেশে অভিযান চালিয়ে ১৩ জঙ্গিকে হত্যা করা হয়েছে।

হামলায় হতাহতের ঘটনার জন্য প্রাদেশিক সরকার তিনদিনের শোক ঘোষণা করেছেন।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ হামলার নিন্দা জানিয়ে এর পরিকল্পনাকারীদের দ্রুত খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

এক বিবৃতিতে দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া বলেন, “আমাদের নাগরিকদের প্রতিটি রক্তবিন্দুর প্রতিশোধ নেওয়া হবে এবং খুব দ্রুত প্রতিশোধ নেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”  পাকিস্তানের আধাসামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা রাতভর সিন্ধু প্রদেশে অভিযান চালিয়েছে।

এছাড়া, খাইবার-পাখতুনখাওয়া প্রদেশেও তল্লাশি অভিযান চলেছে বলে জানান তারা।

অভিযানে সন্দেহভাজন জঙ্গি হিসেবে আরও অনেককে আটক করা হয়েছে। আফগান সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন পাকিস্তানের কর্মকর্তারা।

বিবিসি জানায়, হামলার পর পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে আফগান দূতাবাসের কর্মকর্তাদের ডেকে পাঠানো হয়েছে। পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের দাবি, জঙ্গিরা পাকিস্তানে হামলা চালানোর জন্য আফগানিস্তানের ভূমি ব্যবহার করে।

আফগান সরকারের কাছে ‘মোস্ট ওয়ানটেড টেরোরিস্ট’ এর একটি তালিকা পাঠানো হয়েছে। তালিকায় যে ৭৬ জনের নাম রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানিও লাল শাহবাজ কালান্দার মাজারে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন।

শুক্রবার তিনি বলেন, “জঙ্গিরা আবারও প্রমাণ করল, ইসলামিক মূল্যবোধের প্রতি তাদের কোনও শ্রদ্ধা নেই।”

ভয়াবহ এ হামলার জন্য অনেকে সরকারের অবহেলাকে দায়ী করেছেন।

তাদের একজন আনোয়ার আলি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “এই মাজারে হামলার হুমকি আগেই দেওয়া হয়েছিল। তালেবান জঙ্গিরা মাজারে হামলা চালাবে বলে হুমকি দিয়েছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ ওই হুমকি গুরুত্বের সঙ্গে নেয়নি।”

সাদা মার্বেল পাথরে তৈরি মাজারের মেঝেতে শুক্রবারও রক্তের দাগ ছিল। পাশেই জায়গায় জায়গায় পরিত্যক্ত জুতা-স্যান্ডেল স্তুপ করে রাখা।

এদিন বিক্ষুব্ধ অনেককে পুলিশের বিরুদ্ধেও স্লোগান দিতে দেখা গেছে। আলি হুসাইন নামের একজন রয়টার্সকে বলেন, “যদি গতরাতে আমি এখানে থাকতাম এবং মারা যেতাম।”

“এ সপ্তাহে লাহোরে বোমা হামলায় কয়েকজন মারা যাওয়ার পর মাজারের সুফিরা নিরাপত্তা জোরদার করার অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু কেউই এখানকার নিরাপত্তা নিয়ে মাথা ঘামায়নি।”