তুরস্কে প্রদর্শনীতে রুশ রাষ্ট্রদূতকে গুলি করে হত‌্যা

তুরস্কের রাজধানী আংকারায় এক আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আন্দ্রেই কার্লভকে গুলি করে হত‌্যা করা হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Dec 2016, 04:51 PM
Updated : 20 Dec 2016, 04:14 AM

সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ‌্যায় আংকারার এক গ‌্যালারিতে সাংবাদিক ও অতিথিদের সামনেই এ হত‌্যাকাণ্ড ঘটে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ‌্যমের খবর।

আংকারার মেয়রের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, ওই অস্ত্রধারী তুরস্কের পুলিশ বাহিনীর একজন সদস‌্য, যিনি ওই সময় দায়িত্বে ছিলেন না।

‘তুর্কিদের চোখে রাশিয়া শিরোনামে’ একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনী উপলক্ষে ওই গ‌্যালারিতে অতিথি ছিলেন কার্লভ। টুইটারে আসা ভিডিওতে দেখা যায়, অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করার সময় সুবেশী এক অস্ত্রধারী পেছন থেকে একটানা কয়েকটি গুলি করে এবং রুশ রাষ্ট্রদূত মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন।

বিবিসি জানিয়েছে, গুলি করার পর অস্ত্রধারী তুর্কি ভাষায় চিৎকার করে বলছিলেন- “আলেপ্পোর কথা মনে রেখ, সিরিয়ার কথা মনে রেখ।”

কথার শুরুতে ও মাঝে কয়েক দফা তাকে চিৎকার করে ‘আল্লাহু আকবর’ বলতে শোনা যায় ওই ভিডিওতে।  

কার্লভকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার ঘণ্টাখানেক পর রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে তার মৃত‌্যুর খবর নিশ্চিত করে। সেখানে এই হত‌্যাকাণ্ডকে একটি ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়।

তুরস্কের পুলিশ জানিয়েছে, ওই অস্ত্রধারীকে তারা ‘নিস্ক্রিয়’ করেছে। তবে এ বিষয়ে আর কোনো তথ‌্য প্রকাশ করা হয়নি।

দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা হুররিয়াত জানিয়েছে, সেই অস্ত্রধারী পুলিশের আইডি কার্ড দেখিয়েই প্রদর্শনীতে ঢোকে। এক পর্যায়ে সে শূন‌্যে কয়েকটি গুলি ছোড়ে এবং পরে রাষ্ট্রদূতের পিঠে গুলি করে। পুলিশ গ‌্যালারি থেকে সবাইকে সরিয়ে নেওয়ার পর আরও কিছু গুলির শব্দ পাওয়া যায়।

ওই অস্ত্রধারীর রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকার একটি ছবিও শেয়ার করেছেন এক টুইটার ব‌্যবহারকারী।  

 

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জন কিরবি এক বিবৃতিতে বলেছেন, তাদের কর্মকর্তারা এই ঘটনার কথা জানতে পেরেছেন।

“ওই হামলা যারাই করে থাকুক, আমরা এই সহিংসতার নিন্দা জানাই,” বলেন কিরবি।  

আর যুক্তরাজ‌্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন এ হামলাকে একটি ‘কাপুরুষোচিত’ কাজ হিসেবে বর্ণনা করে এর নিন্দা জানিয়েছেন। 

তুরস্ক গতবছর একটি রুশ জঙ্গি বিমান ভূপাতিত করার পর দুই দেশের মধ‌্যে টানাপড়েন চললেও চলতিবছর ‘অভ‌্যুত্থানচেষ্টা’র পর নাটকীয়ভাবে অবস্থান বদলে মস্কোর সঙ্গে সম্পর্কো্ন্নয়নের ঘোষণা দেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিজেপ তায়িপ এরদোয়ান।

সম্প্রতি সিরিয়ার সরকারি বাহিনী পূর্ব আলেপ্পোর বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত অধিকাংশ এলাকা পুনরুদ্ধার করলেও বিচ্ছিন্ন কিছু অংশ এখনও বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে রয়ে গেছে। সেখানে অস্ত্রবিরতি কার্যকর করার ক্ষেত্রে রাশিয়া ও তুরস্ক একসঙ্গে কাজ করছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়।