পাকিস্তানে বিমান বিধ্বস্ত, ৪৮ আরোহীর সবাই নিহত

পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলের পাহাড়ি এলাকায় ৪৮ জন আরোহী নিয়ে দেশটির রাষ্ট্রীয় বিমান পরিবহন সংস্থা পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের (পিআইএ) একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Dec 2016, 12:52 PM
Updated : 7 Dec 2016, 12:52 PM

এ ঘটনায় উড়োজাহাজটির আরোহীদের কেউ বেঁচে নেই বলে দেশটির বেসামরিক বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, খবর দ্য ডনের।

স্থানীয় সময় বুধবার বিকাল ৪টা ৪২ মিনিটে অ্যাবোটাবাদের ২০ কিলোমিটার দূরে হাভেলিয়ানে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে উত্তরাঞ্চলীয় পর্যটন নগরী চিত্রল থেকে ইসলামাবাদের উদ্দেশ্য এটি রওয়ানা হয়েছিল।

এ পর্যন্ত ৪৬টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অ্যাবোটাবাদ জেলা পুলিশ কর্মকর্তা (ডিপিও)।

পাকিস্তানের একটি পাহাড়ী এলাকায় পিআইএর বিধ্বস্ত উড়োজাহাজের ধ্বংসাবশেষ। ছবি: ডন

উড়োজাহাজটিতে ৪৮ জন আরোহী ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছেন পিআইএ-র মুখপাত্র দানিয়াল গিলানি। এদের মধ্যে পাঁচজন ক্রু সদস্য ও একজন গ্রাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার বলে জানিয়েছেন তিনি। 

উড়োজাহাজটিতে ৩১ জন পুরুষ, ৯ জন নারী ও ২টি বাচ্চা ছিলেন বলে যাত্রী তালিকা থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এদের মধ্যে আশি ও নব্বই দশকের খ্যাতনামা পাকিস্তানি পপ তারকা ও পরে ধর্মপ্রচারকে পরিণত হওয়া জুনায়েদ জামশেদ ও তার পরিবার এবং তিন বিদেশি ছিলেন।

বিদেশিদের মধ্যে দুই জন অস্ট্রেলীয় এবং একজন চীনা নাগরিক বলে জানা গেছে।

পিআইএ বলছে, উড়োজাহাজটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার কয়েক মিনিট আগে ফ্লাইটের ক্যাপ্টেন বিমানের একটি ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ার কথা জানিয়েছিলেন।

জনপ্রিয় পপ তারকা থেকে ধর্ম প্রচারক হওয়া জুনাইদ জামশেদের করাচির বাসায় জড়ো হয়েছেন স্বজনরা। ছবি-রয়টার্স

খাইবার-পাখতুনখাওয়া প্রদেশের জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা টেলিফোনে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, উড়োজাহাজটি রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে ১২৫ কিলোমিটার দূরে হাভেলিয়ান শহরের কাছে বিধ্বস্ত হয়।

হাভেলিয়ানের সরকারি কর্মকর্তা তাজ মুহাম্মদ খান রয়টার্সকে বলেন, “সবার শরীর এমনভাবে পুড়ে গেছে যে সেগুলো চেনা যাচ্ছে না। উড়োজাহাজটির ধ্বংসাবশেষ চারিদিকে ছড়িয়ে আছে।”

দুই ঘণ্টা পরও ঘটনাস্থলে আগুন জ্বলছিল বলে স্থানীয় একজন ব্যবসায়ী জানিয়েছেন।

এর আগে ২০১০ সালে ভারী বৃষ্টির মধ্যে ইসলামাবাদের কাছে একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ১৫২ আরোহীর সবাই মারা যান। এর দুই বছর পর দেশটির একটি বেসরকারি কোম্পানির বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ১২৭ আরোহীর মৃত্যু হয়।

পিআইএ’র বিমানেরও বড় ধরনের দুর্ঘটনার ইতিহাস রয়েছে। ১৯৭৯ ও ১৯৯২ সালে সৌদি আরবের জেদ্দা এবং নেপালের কাঠমাণ্ডুতে তাদের দুটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ১৫৬ ও ১৬৭ জনের মৃত্যু হয়।