ট্রাম্পের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ‘ম্যাড ডগ’ ম‌্যাটিস

যুক্তরাষ্ট্রের নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছেন সাবেক মেরিন সেনা জেনারেল জেমস ম‌্যাটিসকে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Dec 2016, 04:20 AM
Updated : 2 Dec 2016, 04:20 AM

বৃহস্পতিবার রাতে ওহাইওতে সমর্থকদের নিয়ে এক সমাবেশের শুরুতে ট্রাম্প এ ঘোষণা দেন বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়।

ট্রাম্প বলেন, “আমরা প্রতিরক্ষার দায়িত্ব দিতে যাচ্ছি ম্যাড ডগ ম‌্যাটিসকে।”

নতুন প্রেসিডেন্টের ভাষায় এ কাজের জন‌্য ম‌্যাটিস ‘সবার সেরা’।

‘ম্যাড ডগ’ নামে পরিচিত ম‌্যাটিস বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার মধ্যপ্রাচ্য নীতির কড়া সমালোচক। বিশেষ করে ইরান বিষয়ে ওবামা প্রশাসনের সিদ্ধান্তেরও কট্টর বিরোধী ছিলেন তিনি।

ম‌্যাটিস বলে আসছেন, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনার ক্ষেত্রে ইরানই এখন ‘একমাত্র বড় হুমকি’।

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার ম‌্যাটিসকে ডিফেন্স সেক্রেটারির দায়িত্ব দেওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে বলে ট্রাম্প জানিয়েছেন।  

নির্বাচনে জয়ের পর সমর্থকদের ধন্যবাদ জানাতে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ‘ইউএসএ থ্যাংক ইউ ট্যুর’ এর আয়োজন করেছে রিপাবলিকান পার্টি। ওহাইও’র সিনসিনাটির সমাবেশের শুরুতেই পেন্টাগনের বস হিসেবে ম‌্যাটিসের নাম ঘোষিত হয়।

“তারা বলে, এখন যারা আছেন, তাদের মধ‌্যে ম‌্যাটিসই জেনারেল জর্জ প্যাটনের (দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন মিত্রবাহিনীর কমান্ডার) সবচেয়ে কাছাকাছি”, বলেন ট্রাম্প।

এর আগে ৬৬ বছর বয়সী ম‌্যাটিসকে তিনি ‘সত্যিকারের জেনারেলদের জেনারেল’ অভিহিত করেছিলেন।

অবসরপ্রাপ্ত এ মেরিন সেনা কর্মকর্তা ১৯৯১ এর প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধে অ্যাসল্ট ব্যাটালিয়নের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ছিলেন ২০০১ সালে দক্ষিণ আফগানিস্তানে একটি টাস্কফোর্সের কমাণ্ডারের দায়িত্বেও।

যুক্তরাষ্ট্রের ইরাক অভিযানেও অংশ নিয়েছিলেন ম‌্যাটিস, ফালুজার যুদ্ধে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

ওই সময় তার একটি মন্তব্য বেশ আলোচনার জন্ম দেয়। ইরাকে মেরিন সেনাদের উদ্দেশ্যে সে সময় ম‌্যাটিস বলেছিলেন, “ভদ্র হও, পেশাদার হও; কিন্তু মাথায় রেখ, যাদের সঙ্গে তোমার দেখা হবে, তাদের সবাইকে মেরে ফেলতে হতে পারে।”

২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের কমাণ্ডার পদে থেকে অবসরে যান ম‌্যাটিস। বিবিসি লিখেছে, তাকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী করার সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনীগুলোর মধ‌্যে হয়ত জনপ্রিয়তা পাবে। তবে তার আগে ট্রাম্পকে একটি সাংবিধানিক বাধা পর হতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, সামরিক বাহিনীর উর্দি ছাড়ার পর অন্তত সাত বছর পার না হলে ডিফেন্স সেক্রেটারি হওয়া যায় না।

ওই আইন পাশ কাটিয়ে ম‌্যাটিসের নিয়োগ চূড়ান্ত করার বিষয়টি রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত কংগ্রেসে পাস করতে হবে। আর সিনেটের ডেমোক্রেট প্রতিনিধিরা তাতে বাগড়া দিতে পারেন ধারণা দেওয়া হয়েছে রয়টার্সের প্রতিবেদনে।

ট্রাম্প এর আগে তার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে আরেক অবসরপ্রাপ্ত তিন তারকা জেনারেল মাইকেল ফ্লিনকে নিয়োগ দিয়েছেন।

ফ্লিন ২০১৪ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন। সে সময় মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে ওবামা প্রশাসনের সঙ্গে বিরোধে তাকে চাকরি ছাড়তে হয়েছিল।