রোববার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই দুই ব্যক্তির বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে হিলারির সঙ্গে তার তহবিল যোগানদাতাদের টেলিফোনে আলাপ হওয়ার খবর প্রকাশ পায়।
নির্বাচনের আগে প্রায় সবগুলো জনমত জরিপে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে ছিলেন হিলারি। কিন্তু ৮ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে যান তিনি।
ট্রাম্পের জয়ে আন্তর্জাতিক অনেক নেতার উদ্বেগ প্রকাশের পাশপাশি যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
৯ নভেম্বর সকালে নির্বাচনের ফল মেনে নিয়ে বিজয়ীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য দেওয়ার পর অনেকটা আড়ালে চলে যান হিলারি।
শনিবার হিলারি তার সমর্থকদের বলেন, তার শিবির থেকে নির্বাচনে পরাজয়ের কারণ খুঁজে বের করে একটি মেমো তৈরি করেছে। সেখানে দেখা গেছে, জনমত জরিপগুলোর ফল পাল্টে যাওয়া নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এক্ষেত্রে হিলারির ই-মেইল নিয়ে এফবিআই পরিচালক কোমির নতুন করে তদন্ত শুরুর চিঠি ‘টার্নিং পয়েন্ট’ ছিল।
হিলারি মনে করেন, তার ব্যক্তিগত ইমেইল সার্ভার নিয়ে নতুন করে তদন্তের ঘোষণার কারণে মধ্যপশ্চিমের অঙ্গরাজ্যগুলোতে তার প্রতি সমর্থন ব্যাপক হারে কমে গেছে।
উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যে হেরে গেছেন হিলারি। ১৯৮৪ সালের পর এই প্রথম কোনও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থীকে বেছে নিল উইসকনসিনের বাসিন্দারা।
পাশের রাজ্য মিশিগানের পুরো ফল এখনও আসেনি। তবে যে অংশ প্রকাশ পেয়েছে সেখানে এগিয়ে আছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প। এখানেও ১৯৮৮ সালের পর কোনও রিপাবলিকান প্রার্থী এগিয়ে আছেন।
নির্বাচনের দুই সপ্তাহেরও কম সময় আগে কোমি কংগ্রেসে পাঠানো এক চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে ব্যক্তিগত সার্ভার ব্যবহার করে হিলারির দাপ্তরিক ইমেইল আদান-প্রদান বিষয়ে নতুন করে তদন্তের কথা জানায়।
যদিও এক সপ্তাহ পরই কোমি বলেন, তিনি হিলারির ই-মেইল পুনঃতদন্ত করেছেন এবং হিলারির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ না করার সিদ্ধান্তে অটল আছেন।
কিন্তু তত দিনে যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গেছে। এফবিআই- এর নতুন করে তদন্তের ঘোষণা আসার পর মতামত জরিপগুলোতে হিলারি-ট্রাম্পের ব্যবধান কমতে থাকে।
শুরুতে হিলারি যেখানে বেশ খানিকটা ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন সেখানে নির্বাচনের আগের দুইদিনের জরিপে হাড্ড-হাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে হিলারি বলেন, নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে কোমির দুইটি ঘোষণাই ট্রাম্প শিবির নিজেদের পক্ষে কাজে লাগিয়েছে।
কোমি যখন পুনরায় তদন্তের ঘোষণা দেন তখন ট্রাম্প শিবিরের পক্ষ থেকে ‘হিলারির যোগ্যতা’নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাকে আক্রমণ করা হয়।
এরপর দ্বিতীয় চিঠিতে কোমি যখন হিলারি অন্যায় কিছু করেননি বলে ঘোষণা দেন তখন ট্রাম্প শিবির থেকে বলা হয়, পুরো সিস্টেম হিলারির পক্ষে কারচুপি করছে।
এভাবে ট্রাম্প শিবির ভোটারদের প্রভাবিত করে এবং ভোটের দিন তাদের একত্রিত করে বলে অভিযোগ করেন হিলারি।
রয়টার্স জানায়, হিলারির প্রচার শিবিরের তৈরি মেমো তারা দেখেছে।
মেমোর শেষ বলা হয়, “সব শেষে বলতে হয়, শেষ মুহূর্তে নির্বাচনী দৌড়ে আমাদের সামনে এমন একটি বাধা দাঁড় করানো হয়, যেটা অতিক্রম করা আমাদের জন্য অসম্ভব হয়ে যায়।”
এ বিষয়ে কথা বলতে রয়টার্সের পক্ষ থেকে এফবিআই এর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হতে হয়েছে।