শনিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বিশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।
দুই দশকের বেশি সময় ধরে মেক্সিকোর গ্রামীণ অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল।
এমনই একজন মেক্সিকোর ছোট্ট পাহাড়ী শহর মোকাকসেকের বাসিন্দা ৬৫ বছর বয়সী আলিসিয়া ভিয়া।
ভিয়ার মেয়ে ক্যালিফোর্নিয়ায় গৃহ পরিচ্ছন্নতাকর্মী। গত ১২ বছর ধরে মেয়ের আয়েই ভিয়ার পরিবার প্রতিপালিত হচ্ছে।
শহরের একটি গির্জায় বসে রয়টার্সকে ভিয়া বলেন, “আমি একজন ক্যাথেলিক এবং আমি ঈশ্বরের কাছে তার পরাজয় কামনা করেছি।”
“ট্রাম্প বলেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হলে যেসব অভিবাসীদের কাগজপত্র নেই তাদের সবাইকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেবেন। অথচ আমাদের প্রয়োজন মেটাতে তাদের সেখানে থাকতে পারা সত্যিই খুব জরুরি।”
গির্জাটির দেওয়ালে খচিত একটি ফলকে অভিবাসীদের ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। স্থানীয়দের বাড়ি নির্মাণ ও ব্যবসা শুরু করতে সাহায্য করার জন্য, বিবাহের খরচ দেওয়ার জন্য।
৮ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন।
নির্বাচনী প্রচারের শুরু খেকেই ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাস করা মানুষদের বিশেষ করে মেক্সিকানদের বের করে দেওয়ার কথা বলে আসছেন।
সেইসঙ্গে তিনি মেক্সিকো সীমান্তে প্রাচীর নির্মাণের কথাও বলেছেন এবং সেই প্রাচীর নির্মাণে মেক্সিকো সরকার খরচ বহন না করলে বিতাড়ন প্রক্রিয়া দ্রুত করা হবে এবং রেমিটেন্স পাঠানোও সীমিত করা হবে হুশিয়ার করেছেন ট্রাম্প।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্পের এ কৌশল মেক্সিকোর জন্য বিশেষ করে মোকাকসেকের মত প্রত্যন্ত অঞ্চলের জন্য নিদারুন পীড়ার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষরা জানান, মধ্য-দক্ষিণের প্রদেশ পুয়েবলার শহর মোকাকসেকের ৭০ শতাংশের বেশি মানুষ যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী পরিবারের সদস্যদের আয়ের উপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল, যাদের অনেকে কোনো কাগজপত্র ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছে।
মোকাকসেকের ব্যবসায়ী এস্তেবান মারকুয়েজ বলেন, “যখন থেকে আমাদের লোকজন যুক্তরাষ্ট্র যেতে শুরু করেছে, আমাদের শহরের অনেক উন্নতি হয়েছে।”
রয়টার্সের দেওয়া তথ্য মতে মেক্সিকোর ৫০ লাখের বেশি মানুষ অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করে। তাদের মধ্যে অর্ধেক অবৈধভাবে সেখানে প্রবেশ করেছে।
এ বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তারা দুই হাজার কোটি মার্কিন ডলার দেশে পাঠিয়েছে।
মেক্সিকোর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ওই সময়ে শুধু পুয়েবলা প্রদেশেই ১০০ কোটি মার্কিন ডলার পাঠানো হয়েছে।
মেক্সিকোতে বেকারত্বের হার অনেক বেশি। ফলে মাদক চোরাকারবারিরা সহজেই তরুণদের এ পথে নিয়ে আসতে পারে।
মারকুয়েজ বলেন, “বাস্তবতা হলো, মেক্সিকোতে তাদের করার কিছুই নেই। যারা এখানে থাকে তাদের বেঁচে থাকতে অর্থের প্রয়োজন এবং যেহেতু এখানে কাজ নেই, তারা সহজেই অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে।”