কর্মকর্তাদের নির্বাচনকে প্রভাবিত করা বন্ধ করতে জারি থাকা একটি আইন এফবিআইয়ের পরিচালক জেমস কোমি লঙ্ঘন করেছেন, এমন অভিযোগ তুলেছেন রেইড, জানিয়েছে বিবিসি।
যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাত্র দুই সপ্তাহ আগে এফবিআইয়ের ওই তদন্তের কথা প্রকাশ করেছেন কোমি।
সম্প্রতি ডেমোক্রেটিক দলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিলারির শীর্ষ সহযোগী হুমা আবেদিনের কাছে অনেকগুলো ইমেইল পাওয়া যায়। হিলারি প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী থাকাকালে এসব ইমেইল তার ব্যক্তিগত সার্ভার ব্যবহার করে চালাচালি করেছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই ইমেইলগুলোতে রাষ্ট্রীয় কোনো গোপন তথ্য আছে কিনা তা তদন্ত করে দেখছে এফবিআই।
হুমার কাছ থেকে পাওয়া ইমেইলগুলো তার সাবেক স্বামী, সাবেক কংগ্রেসম্যান অ্যান্থনি ওয়েইনারের ল্যাপটপে ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সেখান থেকে ছয় লাখ ৫০ হাজার ইমেইল উদ্ধার করা হয়েছে, এসব ইমেইল তদন্ত করে দেখতে অনেক দিন লেগে যাবে এবং নির্বাচনের আগে তদন্তকারী সংস্থাটি এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারবে না বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী থাকাকালে ব্যক্তিগত সার্ভার ব্যবহার করে হিলারির ইমেইল চালাচালি নিয়ে এর আগে তদন্ত সম্পন্ন করেছে এফবিআই। জুলাইয়ে শেষ হওয়া ওই তদন্তে হিলারির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হয়নি।
কিন্তু নতুন করে পাওয়া ইমেইলগুলো আগের তদন্তে পরীক্ষা করা ইমেইলগুলোর একটি অংশ বলে ধারণা এফবিআইয়ের। তাই নতুন করে এসব ইমেইল নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে তারা।
নির্বাচনের মাত্র কয়েকদিন আগে হিলারির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করায় এক রাজনৈতিক দলের বিপরীতে অপর রাজনৈতিক দলকে সহায়তা করার অভিপ্রায় প্রকাশ পাওয়ায়, এক চিঠিতে কোমির বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনেছেন রেইড।
তিনি দাবি করেছেন, কোমি হ্যাচ অ্যাক্ট লঙ্ঘন করেছেন। এই আইন কর্মকর্তাদের নিজেদের অবস্থান ব্যবহার করে নির্বাচনকে প্রভাবিত করা বন্ধ করেছে।
পাশাপাশি ‘রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার শীর্ষ সহযোগীর সঙ্গে রুশ সরকারের ঘনিষ্ঠ মিত্রতার বিষয়ে বিস্ফোরক তথ্য’ কোমি চেপে গেছেন বলেও অভিযোগ করেছেন রেইড।
তিনি বলেছেন, “জনগনের এসব তথ্য জানার অধিকার আছে। কয়েক মাস আগেই এসব তথ্য জনসম্মুখে প্রকাশ করার জন্য আপনাকে লিখেছিলাম আমি।”
২০০৫ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত হোয়াইট হাউসের এথিকস আইনজীবীদের প্রধান হিসেবে দায়িত্বপালন করা মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন স্কুলের অধ্যাপক রিচার্ড পেইন্টার রোববার জানিয়েছেন, হ্যাচ আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করার দায়িত্বে থাকা স্পেশাল কাউন্সেলের দপ্তরে এফবিআইয়ের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।
নিউ ইয়র্ক টাইমসে তিনি লিখেছেন, “একটি তদন্তকে কেন্দ্র করে এফবিআই রাজনৈতিক সার্কাসের সঙ্গে জড়িয়ে পড়তে পারে এমনটা আমি কখনো ভাবিনি।”
এদিকে হিলারির সম্ভাব্য ইমেইল নিয়ে এফবিআইয়ের নতুন তদন্ত শুরু করার কথা প্রকাশ হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের ভোটারদের মধ্যে তার প্রভাব পড়েছে বলে দেখা গেছে। হিলারি ও ট্রাম্পের মধ্যে জনসমর্থনের ব্যবধান কমে গেছে।
রোববার প্রকাশিত এবিসি নিউজ ও ওয়াশিংটন পোস্টের যৌথ জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, জনসমর্থনে ট্রাম্পের চেয়ে মাত্র এক পয়েন্টে এগিয়ে আছেন হিলারি।