এমএস৮০৪ বিধ্বস্ত, পাওয়া গেছে ধ্বংসাবশেষ

প্যারিস থেকে কায়রো যাওয়ার পথে ৬৬ জন যাত্রী ও ক্রুসহ নিখোঁজ ইজিপ্টএয়ারের বিমানটি মাঝআকাশে চক্কর খেয়ে ভূমধ্যসাগরে পড়ে ডুবে গেছে এবং গ্রিক ক্রিট দ্বীপের কাছে বিমানের কিছু ধ্বংসাবশেষও দেখা গেছে বলে জানিয়েছে এথেন্স।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 May 2016, 04:32 PM
Updated : 20 May 2016, 02:18 AM

গ্রিসের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বলেছে, নিখোঁজ এয়ারবাস এ৩২০ অনুসন্ধান অভিযান চালানোর সময়  সাগরে ভেসে আসা বিমানের ধ্বংসাবশেষ দেখা গেছে। এর আগে গ্রিক কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, ক্রিট দ্বীপের ২৩০ মাইল দক্ষিণে কিছু প্লাস্টিকের টুকরা এবং দুটি লাইফ জ্যাকেট পাওয়া গেছে।

বিমানটি ভূমধ্যসাগরেই বিধ্বস্ত হয়েছে বলে এর আগে নিশ্চিত করে জানান ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া অলন্দ।

গ্রিক আকাশসীমা পেরোনোর পরপরই কায়রোর স্থানীয় সময় বুধবার রাত ২টা ৪৫ মিনিটে  (বাংলেদেশ সময় বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা ৪৫) এয়ারবাস এ৩২০ রেডার থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়।

গ্রিসের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পানোস কাম্মেনোস এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, বিমানটি সাগরে পড়ার আগে আকাশে দুইবার চক্কর খেয়েছিল বলে তারা জানতে পেরেছেন।

তিনি বলেন, ফ্লাইট এমএস৮০৪ মিশরের আকাশসীমায় প্রবেশ পরপরই ৯০ ডিগ্রি বামে এবং ৩৬০ ডিগ্রি ডানে চক্কর খায়। এরপর বিমানটি ৩৭ হাজার ফিট থেকে একেবারে ১৫ হাজার ফিট নিচে নেমে এসে রেডার থেকে হারিয়ে যায়।

মিশরের বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী বলছেন, বিমানটি নিখোঁজ হওয়ার পেছনে কারিগরি ক্রুটির তুলনায় সন্ত্রাসী হামলার সম্ভাবনাই বেশি বলে তিনি মনে করেন।

ওদিকে, মিশরের প্রধানমন্ত্রী শেরিফ ইসমাইল বলেছেন, সন্ত্রাসী হামলায় বিমান বিধ্বস্ত হওয়াসহ অন্য কোনও কিছু ঘটার সম্ভাবনাও এখনই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

মিশরের রাষ্ট্রীয় বিমান পরিবহন সংস্থার এয়ারবাস এ৩২০ উড়োজাহাজটি ফ্রান্সের শার্ল দা গল বিমানবন্দর ছাড়ে বুধবার স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৯ মিনিটে। কায়রোর স্থানীয় সময় রাত ২টা ৫৫ মিনিটে ফ্লাইটটির অবতরণ করার কথা ছিল।

গ্রিসের বিমান উড্ডয়ন কর্মকর্তারা বলছেন, বিমানটি গ্রিসের আকাশসীমায় প্রবেশের সময় পাইলটের সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে এবং সবকিছু স্বাভাবিক বলেই তিনি জানিয়েছিলেন।

এর কিছুক্ষণ পর তারা আবার পাইলটের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে বিমানটি থেকে আর কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। এর দুইমিনিট পরই রেডার থেকে বিমানটি হারিয়ে যায়।

গ্রিসের কার্পাথোস দ্বীপের কাছে সমুদ্রে বিমানটির খোঁজে ব্যাপক তল্লাশি চলছে। গ্রিক ও মিশরের সশস্ত্র বাহিনী একযোগে অভিযানে অংশ নিচ্ছে। ফ্রান্সও এ অভিযানে নৌকা এবং বিমান  পাঠাচ্ছে।

বিমানটিতে তিনটি শিশুসহ ৬৬ আরোহী ছিলেন। তাদের  মধ্যে ৩০ জন মিশরীয়, ১৫ জন ফরাসি, একজন ব্রিটিশ, দুজন ইরাকি ছাড়াও কানাডা, কুয়েত, বেলজিয়াম, সৌদি আরব, আলজেরিয়া, সুদান, শাদ ও পর্তুগালের নাগরিক রয়েছেন।

গত মার্চে ইজিপ্টএয়ারের একটি উড়োজাহাজ ছিনতাই করে সাইপ্রাসে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই ছিনতাইকারী পরে ধরা দেন, জিম্মি যাত্রীরা সবাই অক্ষত অবস্থায় মুক্তি পান।

এর আগে অক্টোবরে সিনাইয়ের শার্ম আল-শাইখ থেকে রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবুর্গ যাওয়ার পথে একটি রুশ উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে ২২৪ আরোহীর সবাই নিহত হন। মস্কোর পক্ষ থেকে পরে বলা হয়, বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ওই বিমান বিধ্বস্ত করা হয়। আইএস জঙ্গিরা এর দায়ও স্বীকার করে।