নভেম্বরে প্যারিসে জঙ্গি হামলা চালিয়ে ১৩০ জনকে হত্যা করার চারমাস পর আব্দেস্লামকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হল বলে জানিয়েছে বিবিসি ও রয়টার্স।
জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
অভিযানে ফেরারির তালিকায় থাকা অপর একজন মনির আহমেদ আলাজও গ্রেপ্তার হয়েছেন বলে শুক্রবার জানিয়েছেন বেলজীয় সরকারি আইনজীবীরা। আমিন চৌকরি ছদ্মনাম নিয়ে পালিয়ে ছিলেন আলাজ। গোলাগুলিতে তিনিও আহত হয়েছেন।
দুই ফেরারির পাশাপশি আব্দেস্লামকে আশ্রয় দেওয়া পরিবারের সদস্যদেরও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ইউরোপের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ ফেরারি আব্দেস্লামকে গোলাগুলির পর আটক করতে সক্ষম হন প্যারিস হামলার তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ। আহত ২৬ বছর বয়সী আব্দেস্লামের পায়ে গুলি লেগেছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া অলন্দকে পাশে নিয়ে বেলজীয় প্রধানমন্ত্রী চার্লস মিচেল আব্দেস্লামকে গ্রেপ্তারের কথা ঘোষণা করেন।
মিচেল বলেন, “গণতন্ত্রের লড়াইয়ে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ফল।”
তিনি জানান, এ সাফল্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বেলজীয় ও ফরাসি নেতাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট অলন্দ বলেন, তিনি আশা করছেন ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব’ আব্দেস্লামকে ফ্রান্সের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
এক বেলজীয় মন্ত্রী ট্যুইটারে প্রথম সংবাদটি প্রকাশ করে লেখেন, “আমরা ওকে পেয়েছি।”
তিন দিন আগে মঙ্গলবার ব্রাসেলসের ফরেস্ট এলাকার একটি ফ্ল্যাটে অভিযানকালে আব্দেস্লামের আঙ্গুলের ছাপ ও পাসপোর্ট পান তদন্তকারীরা। এর পরপরই আব্দেস্লামের লুকিয়ে থাকা এলাকা মলেনব্লেকে অভিযানের পরিকল্পনা করা হয়।
পুলিশ আব্দেস্লামের হদিস পেয়েছে, গণমাধ্যমে এমন খবর ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর তড়িঘরি করে অভিযানটি চালানো হয়।
ব্রাসেলস শহরের কেন্দ্র থেকে মাত্র এক মাইল দূরে মলেনব্লেকের একটি সাধারণ বাড়িতে আব্দেস্লামকে খুঁজে পাওয়া যায়। অভিযানের সময় আশপাশের বাড়িঘরের বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তারা তখনো বাসায় ফেরার অপেক্ষায় ছিলেন।
আব্দেস্লামের গ্রেপ্তারের সময়টিকে ‘গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত’ বলে উল্লেখ করে এটিই ‘চূড়ান্ত উপসংহার’ নয় বলে মন্তব্য করেছেন অলন্দ।
তিনি বলেন, “এইসব হামলা যারা অনুমোদন, সংগঠন ও সহায়তা করেছেন তাদের সবাইকে ধরতে হবে।
প্রাথমিকভাবে আমরা যা ভেবেছি তাদের সংখ্যা তার চেয়েও অনেক বেশি, এদের সবাইকে শনাক্ত করা হয়েছে।”
ব্যাপক গোয়েন্দা তৎপরতার পর এই অভিযান সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মিচেল।
তদন্ত ‘দিনরাত’ অব্যাহত থাকবে জানিয়ে সরকারি আইনজীবীরা বলেছেন, আটক সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।