‘একনায়কদের ক্ষমতা থেকে সরানো উচিত নয় যুক্তরাষ্ট্রের’

সিরিয়ার বাশার আল আসাদের মতো একনায়কদের ক্ষমতা থেকে সরানো যুক্তরাষ্ট্রের উচিত হবে না বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির দুই প্রেসিডেন্ট মনোনয়ন প্রত্যাশী বার্নি স্যান্ডার্স ও ডোনাল্ড ট্রাম্প।

>>রয়টার্স
Published : 21 Dec 2015, 06:27 AM
Updated : 21 Dec 2015, 06:27 AM

রোববার এনবিসি-র ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানের আলাদা দুটি পর্বে প্রায় একই মন্তব্য করেন পরস্পর বিরোধী দুই দলের দুই প্রেসিডেন্ট মনোনয়ন প্রত্যাশী।

উভয় প্রার্থীই বলেছেন, লিবিয়ার মুয়াম্মাম গাদ্দাফি ও ইরাকের সাদ্দাম হুসেইন ক্ষমতায় থাকলে মধ্যপ্রাচ্য আরো কম বিশৃঙ্খল থাকতো। এ দুজন ক্ষমতা হারানোর পর ওই অঞ্চলে বিভিন্ন চরমপন্থি গোষ্ঠীর আবির্ভাব ঘটেছে এবং ইসলামিক স্টেট (আইএস) যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় ধরনের হুমকি হয়ে উঠেছে। ‍

ডেমোক্রেট দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী স্যান্ডার্স বলেন, “গাদ্দাফি, হুসেইন এবং আসাদ ঠিক জায়গায় থাকলে ওই অঞ্চলটি আরো অনেক স্থিতিশীল থাকতো।”

এ বিষয়ে পুরোপুরি সহমত প্রকাশ করে রিপাবলিকান দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে থাকা ট্রাম্প বলেন, “হান্ড্রেড পার্সেন্ট- এ বিষয়ে আপনাদের মনে কোনো সন্দেহ আছে?”

অন্যান্য বিষয়গুলোতে এ দুজনের মতের তেমন কোনো মিল না থাকলেও উভয়েই ২০০৩ সালে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের চালানো দখল অভিযানকে ভুল মনে করেন এবং বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যার সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে পড়ার বিষয়ে সন্ধিগ্ধ মনোভাব পোষণ করেন। 

নিজ দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটনের সমালোচনা করে স্যান্ডার্স ২০০৩ সালের ইরাক দখলে হিলারির সমর্থনের কথা ভোটারদের স্মরণ করিয়ে দেন। ইরাক দখলের পর সেটিকে ভুল বলে অভিহিত করা হিলারি আসাদকে দ্রুততার সঙ্গে সরানোর বিষয়টি সমর্থন করেছেন উল্লেখ করে তার সমালোচনা করেন স্যান্ডার্স।

তিনি আরো বলেন, ২০১১ সালে হিলারি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকার সময় লিবিয়ায় বোমাবর্ষণ করে গাদ্দাফির পতন তরান্বিত করেন, কিন্তু এতে যে শূন্যতা তৈরি হয় চরমপন্থি গোষ্ঠীগুলো তা পূরণ করে।

তিনি বলেন, “গাদ্দাফি, ভয়ানক একনায়ক, তাকে শেষ করা হল। এখন ওই অঞ্চলে সৃষ্টি করা অস্থিশীলতা ও গোলযোগের সুযোগে আইএসআইএস লিবিয়ায় অবস্থান তৈরি করে নিচ্ছে।”

অপরদিকে আইএসের বিরুদ্ধে যথেষ্ট আক্রমণাত্মক না হওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সরকারের সমালোচনা করে কট্টর রিপাবলিকান দলীয় সমর্থকদের আকষর্ণের চেষ্টা করেন ট্রাম্প। 

পাশাপাশি তিনি নিজ দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বী মনোনয়ন প্রত্যাশীদেরও সমালোচনা করেন। বিশেষভাবে ফ্লোরিডার সাবেক গভর্নর জেফ বুশের সমালোচনা করে বলেন, “তিনি (বুশ) আসাদের পতন চান, কিন্তু ক্ষমতার পালা বদল অপ্রত্যাশীত ফলাফল বয়ে আনতে পারে।”

আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরানোর চেষ্টার চেয়ে এখন আইএসকে পরাজিত করার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের মনোযোগ দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন উভয় প্রার্থী।