নতুন প্রোড্রাগ’টি ব্যথার অংশে না পৌঁছানো পর্যন্ত দেহে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থাকে। এরপর ব্যথার অংশে পৌঁছে নির্দিষ্ট এক রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে কাজ শুরু করে।
Published : 08 Nov 2024, 03:33 PM
ব্যথা কমানোর এক নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন বিজ্ঞানীরা।
পরিচিত রাসায়নিক বিক্রিয়া ব্যবহার করে ব্যথা কমানোর জন্য নতুন এক পদ্ধতির উদ্ভাবন করেছে ‘ইউনিভার্সিটি অফ অ্যাডিলেইড’-এর বিজ্ঞানী’সহ গবেষকদের একটি আন্তর্জাতিক দল।
দীর্ঘমেয়াদি ব্যথার বেলায় প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতির স্থান নিতে পারে নতুন এই উদ্ভাবন, যাতে ব্যবহার হয়েছে ‘প্রোড্রাগ’ নামের এক বিশেষ ধরনের ওষুধ।
প্রোড্রাগ হচ্ছে জৈবিকভাবে নিষ্ক্রিয় এক ধরনের যৌগ বা ওষুধ, যা খাওয়া বা গ্রহণের পর ওষুধ তৈরির জন্য দেহের মধ্যে বিপাক হতে পারে। দেহে সংঘটিত সকল রাসায়নিক বিক্রিয়াকেই একসঙ্গে বিপাক বলে।
গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘নেচার বায়োটেকনোলজি’-তে।
নতুন প্রোড্রাগ’টি ব্যথার অংশে না পৌঁছানো পর্যন্ত দেহে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থাকে। এরপর ব্যথার অংশে পৌঁছে নির্দিষ্ট এক রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে কাজ শুরু করে।
দেহের সক্রিয় অক্সিজেন বা আরওএস-এর সঙ্গে বিক্রিয়া করে প্রোড্রাগ। যেমন– হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড, যেটি দেহের ব্যথার অংশে বেশি পরিমাণে মেলে। ওষুধটিকে আরও সুনির্দিষ্টভাবে ব্যথাকে খুঁজে পেতে সাহায্য করে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড অর্থাৎ দেহের যে অংশে এটির প্রয়োজন সেখানেই হবে এর ব্যবহার।
“আমাদের গবেষণা দলটি এমন এক ধরনের প্রোড্রাগ তৈরি করেছে, যেটি প্রয়োগের স্থান শনাক্ত করে দীর্ঘমেয়াদী ব্যথা কমিয়ে আনতে পারে,” বলেছেন এ গবেষণার প্রধান গবেষক ও ‘ইউনিভার্সিটি অফ অ্যাডিলেইড’-এর রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক অ্যান্ড্রু অ্যাবেল।
“জৈবিক প্রেক্ষাপটে এ ধরনের রাসায়নিক বিক্রিয়া ব্যবহার করে আমরাই প্রথম গবেষণা করেছি, যেটি অন্যান্য চিকিৎসা ক্ষেত্রেও কার্যকর হতে পারে।”
প্রাক প্রয়োগ পরীক্ষায় দেহের স্নায়ুর আঘাত ও অক্সিডেটিভ স্ট্রেস, যেমন অস্টিওআর্থারাইটিস, কেমোথেরাপি ও ডায়াবেটিসের মতো অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদী ব্যথা কমিয়ে আনতে সহায়তা করেছে প্রোড্রাগ।
গবেষক দলটির অনুমান, দীর্ঘমেয়াদি ব্যথার চিকিৎসায় বিপ্লব আনতে পারে এই নতুন পদ্ধতি। বর্তমানে থাকা বিভিন্ন ওষুধ কেবল দেহের স্নায়ুর কার্যকলাপ কমিয়ে আনে। তবে ব্যথার বিভিন্ন কারণকে ট্রিগার করে এমনসব অণুর সংখ্যা দেহে কমিয়ে আনতেও কাজ করে নতুন প্রোড্রাগ’টি।
‘ইউনিভার্সিটি অফ অ্যাডিলেইড’-এর রসায়ন বিভাগ ও ‘এআরসি সেন্টার অফ এক্সিলেন্স ফর ন্যানোস্কেল বায়োফোটোনিক্স বা সিএনবিপি’-এর অধ্যাপক অ্যাবেলের নেতৃত্বে করা এ গবেষণা দলটিতে আছেন ড. টমাস অ্যাভেরি, পিএইচডি প্রার্থী ডিওন টার্নার ও ‘ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাস এমডি অ্যান্ডারসন ক্যান্সার সেন্টার’-এর সহযোগী অধ্যাপক পিটার গ্রেস।
এ ছাড়া, এ প্রকল্পে অবদান রেখেছেন ‘টেক্সাস সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি’র গবেষকরাও।