২০২৪ সালের প্রথমার্ধে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়লেও ইউরোপের ইতিহাসে জীবাশ্ম জ্বালানির উৎপাদন সবচেয়ে কম ৩৪৩ টেরাওয়াট ঘন্টায় (টিডব্লিউএইচ) নেমে এসেছে।
Published : 03 Aug 2024, 05:10 PM
ইউরোপে প্রথমবারের মতো বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে জীবাশ্ম জ্বালানিকে ছাড়িয়ে গেছে বায়ু ও সৌরশক্তির মাধ্যমে উৎপাদিত বিদ্যুৎ – এমনই তথ্য উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক নতুন বিশ্লেষণে।
শক্তির থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ‘অ্যাম্বার’-এর মতে, ২০২৪ সালের প্রথম ছয় মাসে বায়ু টার্বাইন ও বিভিন্ন সৌর প্যানেল থেকে ৩০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যেখানে জীবাশ্ম জ্বালানির মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ২৭ শতাংশে নেমে এসেছে।
২০২৪ সালের প্রথমার্ধে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়লেও ইউরোপের ইতিহাসে জীবাশ্ম জ্বালানির উৎপাদন সবচেয়ে কম ৩৪৩ টেরাওয়াট ঘণ্টায় (টিডব্লিউএইচ) নেমে এসেছে, যা ২০২২ সালে ৫০০ টেরাওয়াট থেকেও কম বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
“আমরা একটি ঐতিহাসিক পরিবর্তনের সাক্ষী হয়েছি, আর এটি দ্রুতই ঘটছে। ইইউ’র সদস্য দেশগুলো যদি বায়ু ও সৌর শক্তি স্থাপনার গতি ধরে রাখতে পারে তবে জীবাশ্ম শক্তির উপর নির্ভরতা থেকে আমাদের মুক্তির সত্যিসত্যিই চোখে পড়তে শুরু করবে,” বলেছেন অ্যাম্বার-এর ডেটা বিশ্লেষক চিরস রসলো।
সর্বশেষ এই পরিসংখ্যানটির সঙ্গে গত বছর অ্যাম্বার-এর করা ভবিষ্যদ্বাণীর মিল রয়েছে। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছিল, রেকর্ড ভাঙা নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনের কারণে জীবাশ্ম জ্বালানি কমিয়ে আনার যুগে প্রবেশ করতে চলেছে বিশ্ব।
গত অক্টোবরে ‘এক্সেটার ইউনিভার্সিটি’ ও ‘ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন’-এর গবেষকদের করা এক আলাদা গবেষণায় ইঙ্গিত মিলেছে, সৌর শক্তি একটি ‘অপরিবর্তনীয় টিপিং পয়েন্টে’ পৌঁছেছে যা ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের শক্তির প্রধান উৎস হয়ে উঠবে।
“নবায়নযোগ্য জ্বালানির সাম্প্রতিক অগ্রগতির মানে জীবাশ্ম জ্বালানি-আধিপত্যের বিভিন্ন অনুমান আর বাস্তবসম্মত নয়,” বলেছেন ওই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ‘এক্সেটার ইউনিভার্সিটি’র বিজ্ঞানী ফেমকে নিজসে।
“বিভিন্ন ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া অনুসরণ করে এমন তিনটি মডেল ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা একটি প্রকল্প তৈরি করেছি, যা এই শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে বিভিন্ন সৌর ফোটোভোলটাইক গোটা বিশ্বে শক্তি মিশ্রণে আধিপত্য বিস্তার করবে।”
অ্যাম্বার-এর সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা মিলেছে, ইইউ’র ১৩টি সদস্য দেশ এখন জীবাশ্ম জ্বালানির চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করে সৌর ও বায়ু শক্তি থেকে। এমনকি কিছু দেশ তাদের বিদ্যুতের চাহিদার ৫০ শতাংশেরও বেশি নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস থেকে পূরণ করতে শুরু করেছে।