২০১৫ সালে নিউ ইয়র্কে মাদক ও অর্থ পাচারের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা পান উলব্রিচ।
Published : 23 Jan 2025, 06:42 PM
ডার্ক ওয়েবে অবৈধ মাদক বিক্রির বাজার ‘সিল্ক রোডে’র পরিচালক রস উলব্রিচকে নিঃশর্ত ক্ষমা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
২০১৫ সালে নিউ ইয়র্কে মাদক ও অর্থ পাচারের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা পান উলব্রিচ।
ওই সময় উলব্রিচের পক্ষে ছিলেন ট্রাম্প। মঙ্গলবার ট্রাম্প বলেছেন, উলব্রিচের মাকে ফোন করে জানিয়েছেন, তার ছেলেকে ক্ষমা করে দিয়েছেন তিনি।
২০১৩ সালে পুলিশ উলব্রিচকে গ্রেপ্তারের পর বন্ধ হয়ে যায় সিল্ক রোড, যেখানে বিটকয়েন ব্যবহার করে মাদক বিক্রি চলছিল। পাশাপাশি হ্যাকিং টুল ও চুরি করা পাসপোর্ট বিক্রি হত বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।
ওই সময় উলব্রিচকে মাদক পাচারের ষড়যন্ত্রকারী, অর্থ পাচার ও কম্পিউটার হ্যাকিংসহ বিভিন্ন অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত।
বিচার চলাকালে সরকারি উকিলরা বলেছিলেন, গোপনে ‘ডার্ক ওয়েবে’ পরিচালনা করা উলব্রিচের ওয়েবসাইটটি বেনামে ২০ কোটি ডলারের বেশি মূল্যের মাদক বিক্রি করেছে।
তারা আরও বলেছেন, ভাড়াটে ছয়জন খুনীর সঙ্গেও আলাপ করেছিলেন উলব্রিচ। যার মধ্যে একটি ছিল সিল্ক রোডের সাবেক এক কর্মী সম্পর্কিত। তবে কোনও হত্যাকাণ্ড আসলেই ঘটেছিল এমন কোনও প্রমাণ নেই।
মঙ্গলবার নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ এক পোস্টে ট্রাম্প বলেছেন, “উলব্রিচকে দোষী সাব্যস্ত করতে যে নোংরামি হয়েছিল তারা একই ধরনের পাগল, যারা আমার বিরুদ্ধে সরকারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার সঙ্গে জড়িত ছিল। তাকে দুটি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৪০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। যা হাস্যকর!”
‘ড্রেড পাইরেট রবার্টস’ ছদ্মনামে নামে সিল্ক রোড চালাতেন উলব্রিচ, যা ১৯৮৭ সালের ‘দ্য প্রিন্সেস ব্রাইড’ চলচ্চিত্রের একটি চরিত্রের নাম। আর, ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকার কিছু অংশ জুড়ে বিস্তৃত ঐতিহাসিক এক বাণিজ্য পথ থেকে এ বাজারের নাম রাখেন তিনি।
আদালতে জমা দেওয়া নথিতে এফবিআই বলেছে, সাইটটিতে নিবন্ধিত ব্যবহারকারী সংখ্যা ছিল কেবল ১০ লাখ। তবে, এর মধ্যে কতজন ব্যবহারকারী সক্রিয় ছিলেন সেটি তারা জানতে পারেননি।
২০১৩ সালে সান ফ্রান্সিসকোর একটি পাবলিক লাইব্রেরি থেকে গ্রেপ্তার হন উলব্রিচ। এ সময় সহকর্মী ভেবে এমন একজনের সঙ্গে অনলাইনে চ্যাটিং করেছিলেন উলব্রিচ, যিনি আসলে ছিলেন একজন গোপন ফেডারেল এজেন্ট।
২০১৫ সালের মে মাসে সাজা ঘোষণার সময় উলব্রিচ বলেছিলেন, “আমি মানুষকে তাদের জীবনে সিদ্ধান্ত নিতে এবং প্রাইভেসি ও পরিচয় গোপন রাখার ক্ষমতা দিতে চেয়েছিলাম।”
এর আগে, গত বছর ‘লিবার্টেরিয়ান ন্যাশনাল কনভেনশন’-এ বক্তৃতা দেওয়ার সময় ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন, উলব্রিচের সাজা কমানোর পরিকল্পনা করেছেন তিনি।
‘লিবার্টেরিয়ান পার্টি’ উলব্রিচের মুক্তির পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছিল। তাদের মতে, মামলাটি ছিল সরকারের বাড়াবাড়ির উদাহরণ।
এদিকে, প্রেসিডেন্টের এ সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ট্রাম্পের মিত্র রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান টমাস ম্যাসি।