ওয়ার্ল্ড ইনটেলকচুয়াল প্রপার্টি অরগানাইজদেশন (ডাব্লিওআইপিও)-এর মতে, দেশটি ১০ লাখেরও বেশি আবেদন জমা হিসেব করেছে। এই সংখ্যাকে ‘অসাধারণ’ আখ্যা দিয়েছে সংস্থাটি।
আবেদনের অনেকগুলোই ছিল টেলিকম, কম্পিউটিং, অর্ধপরিবাহী আর চিকিৎসা প্রযুক্তির উদ্ভাবনের জন্য, জানিয়েছে বিবিসি। বেইজিং প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ ধরনের আবেদন বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।
অন্যদিকে, অধিকাংশ আবেদন স্থানীয়ভাবে জমা হওয়ার কারণে দেশটি অন্য দেশগুলো থেকে আসলেই বেশি উদ্ভাবনীয় কিনা তা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেছেন কয়েকজন বিশেষজ্ঞ।
ডাব্লিওআইপিও’র মতে, ২০১৫ সালে বিশ্বব্যাপী মোট ২০ লাখ ৯০ হাজার পেটেন্টের আবেদন জমা করা হয়েছে, যা ২০১৪ বছর থেকে ৭.৮ শতাংশ বেশি।
এই বৃদ্ধিতে পেছনে চীনের হাতই বেশি বলে দাবি করার সুযোগ আছে চীনের। দেশটির পেটেন্ট অফিস- দ্য প্রপার্টি অফিস অফ দ্য পিপল’স রিপাবলিক অফ চায়না (এসআইপিও)- ১,১০১,৮৬৪টি আবেদন পেয়েছে, যা একটি রেকর্ড। অংকটি জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হওয়া আবেদনের মোট সংখ্যার চেয়েও বেশি।
চীনা উদ্ভাবকরা দেশের বাইরে পেটেন্ট অধিকার পাওয়ার ক্ষেত্রে উৎসাহী ছিলেন না। ডাব্লিওআইপিও’র মতে, দেশের বাইরে শুধু ৪২,১৫৪টি আবেদন জমা হয়েছে। স্মার্টফোন আর টেলিকম যন্ত্রাংশ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে আর জিটিই এটি শুরু করে। এ ক্ষেত্রে মার্কিন উদ্ভাবকরা এর থেকে পাঁচগুণ বেশি আবেদন করে। জাপান, জার্মানি আর ফ্রান্সও এই বিষয়ে এগিয়ে আছে।
চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কাজ করে এমন একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পেটেন্ট বিশেষজ্ঞ জানান, সংখ্যার মধ্যে এই অসমতাই কথা বলছে। “চীনে প্রায় সময় পেটেন্ট বলতে নকশার প্রকারকে বোঝায় আর এগুলো তারা অসংখ্য পরিমাণে পাচ্ছে,” তিনি বলেন।
“এটা সম্ভবত উদ্ভাবনের কিছুই না। আমি এগুলোর কিছু দেখেছি আর এগুলো প্রডাকশন লাইনের যন্ত্রপাতির অংশ বিশেষ হয়ে থাকে”, যোগ করেন তিনি।
“তারা যেসব বিষয়বস্তুর জন্য আবেদন করছে সেগুলোতে বিশ্বব্যাপী পেটেন্ট পাওয়ার মতো নতুনত্ব নেই।”
ইউরোপে শিল্পজাত বস্তুর জন্য নতুন চেহারা তৈরি করা পেটেন্ট পাওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়। নতুন পদ্ধতি, উন্নয়ন বা ধারণাসহ একটি প্রযুক্তিগত দিক থাকতে হবে যা প্রযুক্তিগত দক্ষ কোনো ব্যক্তির কাছে খুব বেশি স্পষ্ট হবে না।
চীনে যতক্ষণ পর্যন্ত পণ্যটি আলাদাভাবে বিক্রি বা ব্যবহার করা যাচ্ছে ততক্ষণ কোনো বস্তুর আকার, প্যাটার্ন বা রংয়ের উপর ভিত্তি করে একটি নতুন নকশা তৈরিই যথেষ্ট। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও এ ধরনের পেটেন্ট করানো হয়।
অনেকগুলো আবেদন স্থানীয়ভাবে করানোর একটি কারণ হচ্ছে চীন পাঁচ বছর আগে পেটেন্ট বৃদ্ধির একটি লক্ষ ঠিক করেছিল। সে সময় এসআইপিও ২০১৫ সালের মধ্যে ২০ লাখ আবেদন চেয়ে ঘোষণা দিয়েছিল। সেই সঙ্গে দেশটির সরকার এই পদক্ষেপটিকে ভর্তুকি দিয়ে সমর্থন করে।