বাজারে প্রচলিত/জনপ্রিয় ট্যাবলেটগুলোর সঙ্গে সারফেসের পার্থক্য অনেকখানেই। প্রথমত ট্যাবলেটের হিসেবে তো বটেই, প্রচলিত নেটবুক ধাঁচের একাধিক মডেলের ল্যাপটপের থেকেও বড় এর ১২ ইঞ্চির ডিসপ্লে। আবার পুরোদস্তুর উইন্ডোজ ৮ পিসির সব কাজই করতে পারবে সারফেস প্রো থ্রি।
আবার নতুন মডেলের সারফেস যে প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাপলের ম্যাকবুক এয়ারের থেকেও ওজনে হালকা সেটাও একেবারেই ওজন মাপার মেশিনে মেপে প্রমাণ করে দেখিয়ে দিয়েছে মাইক্রোসফট। এ তো গেল কেবল ‘আউটলুকের’ কথা। ভেতরের হার্ডওয়্যারের দিক থেকেও কোনো অংশে কম যায় না সারফেস প্রো থ্রি।
২. টু-ইন-ওয়ান হাইস্পিড ডেটা পোর্ট ও চার্জার: সারফেসের সবগুলো মডেলের জন্য বরাবরই নিজস্ব চার্জার সরবরাহ করেছে মাইক্রোসফট। ব্যবহারকারী এবং সমালোচকদের কাছ থেকে খুব একটা সাড়া পায়নি পুরনো চার্জারগুলো। তবে এবারের চার্জারটি ডিজাইন করা হয়েছে নতুন করে, মিলছে ইতিবাচক সাড়াও। আগেরগুলো শুধু ম্যাগনেটিক কানেক্টর হলেও সারফেস প্রো থ্রির চার্জারটি সংযোগ পাবে স্লাইডিং ম্যাগনেটিং স্লটের মাধ্যমে। একই সঙ্গে হাই-স্পিড ডেটা পোর্ট হিসেবেও কাজ করবে ওই স্লটটি। তবে এই ফিচার ব্যবহারের জন্য ট্যাবলেটটির সংযোগ দিতে হবে ডকিং স্টেশনে। ডকিং স্টেশনের ডেটা পোর্ট ট্যাবলেটের সঙ্গে সংযোগ পাবে ডুয়াল-পারপাস চার্জিং পোর্টের মাধ্যমে।
৪. লুকানো ফ্রন্ট স্পিকার: সারফেস প্রো থ্রির ফ্রন্ট স্পিকার ডিজাইনের কাজটি মাইক্রোসফটের ডিজাইনাররা সেরেছেন সুচারুভাবে । স্ক্রিনের দুই পাশে স্পিকার দুটি লুকানোর কাজ ডিজাইনাররা যে দক্ষতার সঙ্গে সেরেছেন তাতে স্পিকারগুলো খুঁজে পেতে ব্যবহারকারীদের যে কিছুটা হলেও সময় লাগবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
৫. দুদিকেই ৫ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা: সারফেস প্রো থ্রি সামনে-পেছনে আছে দুটি ৫ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা। প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ম্যাশএবলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ক্যামেরা দুটি দিয়ে তোলা ছবি বেশ ভাল হলেও ঠিক ‘স্পেকট্যাকুলার’ নয়। দুটি ক্যামেরা দিয়েই করা যাবে ১০৮০ পিক্সেলের ভিডিও। তবে সিনেমা বানানোর বদলে ভিডিও কনফারেন্সেই হয়ত ভালো পারফর্ম করবে ক্যামেরাগুলো।
৭. হাই রেজুলিউশন ডিসপ্লে: ডিসপ্লে রেজুলিউশনের দিক থেকেও প্রচলিত ডেস্কটপ বা ল্যাপটপের থেকে এগিয়ে আছে সারফেস প্রো থ্রি। বেশিরভাগ ডেস্কটপের ডিসপ্লে রেজুলিউশন ১৪৪০ বাই ৯৬০ পিক্সেল। এর বিপরীতে সারফেস প্রো থ্রির ডিসপ্লে ২১৬০ বাই ১৪৪০ পিক্সেল, যা প্রচলিত ডেস্কটপের তুলনায় প্রায় দেড়গুণ বেশি।
সারফেস প্রো থ্রিকে বলা চলে ট্যাবলেটের জগতে মাইক্রোসফটের ‘ইস্কাপনের টেক্কা’। হার্ডওয়্যার আর সফটওয়্যার ফিচার মিলিয়ে বাজারে প্রচলিত যে কোনো ল্যাপটপের বিকল্প ট্যাবলেটটি গ্রহণ করতে পারেন ক্রেতারা। স্মার্টফোন আর ট্যাবলেট দৌঁড়ে মাইক্রোসফট শুরুতেই পিছিয়ে পড়লেও সারফেস প্রো থ্রি দিয়ে যেন হুংকার দিয়ে সফটওয়্যার জায়ান্ট জানান দিল ‘আমরা আসছি’। অ্যাপল, স্যামসাংয়ের মতো বাজারে শক্ত অবস্থান তৈরি করে নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো তো বটেই ল্যাপটপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যও সারফেস প্রো থ্রি যে এর মধ্যেই মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।