মঙ্গলকে ঘিরে চক্কর দিচ্ছে ইএসএ-এর তৈরি মহাকাশযান ‘দ্য মার্স এক্সপ্রেস’। মহাকাশযানটির অভ্যন্তরীণ ‘মার্স অ্যাডভান্সড রেডার ফর সাবসারফেস অ্যান্ড আয়োনোস্ফেরিক সাউন্ডিং (মারসিস)’ যন্ত্রপাতি নির্মাণ করা হয়েছিল উইন্ডোজ ৯৮ অপারেটিং সিস্টেমের ভিত্তিতে।
প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জ জানিয়েছে, রেড প্ল্যানেটখ্যাত মঙ্গলের মাটির নিচে পানির অস্তিত্ব আবিষ্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল মারসিস। ইএসএ বলছে, নতুন সফটওয়্যার আপগ্রেড মঙ্গলযানটিকে ‘মঙ্গল পৃষ্ঠের নিচে এবং গ্রহটির অন্যতম চাঁদ ফোবসকে আরও খুঁটিয়ে দেখার সক্ষমতা দেবে’।
মঙ্গলে প্রথম অভিযানের অংশ হিসেবে ২০০৩ সালে ‘মার্স এক্সপ্রেস’কে মহাকাশে পাঠিয়েছিল ইএসএ। প্রায় দুই দশক ধরে মঙ্গলকে ঘিরে চক্কর দিয়ে নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করেছে মঙ্গলযানটি।
মঙ্গলে পানির খোঁজে এবং গ্রহটির বায়ুমণ্ডল সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে কম কম্পাঙ্কের রেডিও তরঙ্গ ব্যবহার করে মারসিস রেডার। এর ১৩০ ফিট লম্বা অ্যান্টেনা মঙ্গলপৃষ্ঠের তিন মাইল গভীরে পানির সন্ধান করতে পারে। ভার্জ জানিয়েছে, সফটওয়্যার আপগ্রেডের ফলে ফিরতি রেডার সিগনাল গ্রহণ করা এবং মার্স এক্সেপ্রেসে ডেটা প্রসেসিং আরও উন্নত হবে। এতে পৃথিবীতে আরও মানসম্পন্ন ডেটা পাঠানোর সুযোগ পাবে মঙ্গলযানটি।
এ কাজে ইএসএ-কে সহযোগিতা করছেন সফটওয়্যার প্রকৌশলী কার্লো নেনা; সফটওয়্যার আপগ্রেপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “মারসিসের পারফর্মেন্স উন্নত করতে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছিল আমাদের। মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ৯৮ অপারেটিং সিস্টেমের ভিত্তিতে মারসিসের সফটওয়্যার নির্মাণ করা হয়েছিল ২০ বছরেরও বেশি সময় আগে।”
এতোদিন মারসিসে হাই-রেজুলিউশন ডেটা জমা রাখতে যে কৌশল অবলম্বন করেছেন ইএসএ এবং ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর অ্যাস্ট্রোফিজিক্স (আইএনএএফ)’-এর অপারেটররা, তাতে মারসিসের অনবোর্ড মেমোরিতে জায়গা ফুরিয়ে যায় খুব দ্রুত।
নতুন সফটওয়্যারের মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় ডেটা ফেলে দেওয়ার সুযোগ তৈরি হলে মারসিসকে আরও বেশি সময় চালু রেখে আরও বড় এলাকা স্ক্যান করার সুযোগ তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন আইএনএএফের মারসিস অপারেশনের ব্যবস্থাপক আন্ড্রিয়া চিকেটি।
“বিষয়টি লঞ্চের প্রায় ২০ বছর পর নতুন যন্ত্রপাতি পাওয়ার মতো,” যোক করেন তিনি।
তবে, উইন্ডোজ ৯৮ আপগ্রেড করে কোন সফটওয়্যার ইনস্টল করা হচ্ছে সে প্রসঙ্গে এখনও কোনো তথ্য দেয়নি ইএসএ।