মূল্যপতনের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্ষুধাও কমেছে বিটকয়েনের

একদিকে ক্রিপ্টো মুদ্রা বাজারে দাম কমেছে বিটকয়েনের, তার সঙ্গে তাল মিলিয়েই কমছে বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিপ্টো মুদ্রাটির মাইনিংয়ে বিদ্যুৎ খরচ। সাম্প্রতিক মাসগুলোকে বিটকয়েন মাইনিংয়ে বিদ্যুৎ চাহিদা এক-তৃতীয়াংশ কমেছে বলে ধারণা করছেন এক গবেষক।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 June 2022, 08:42 AM
Updated : 26 June 2022, 08:42 AM

জুন মাসে ক্রিপ্টো বাজারে বিটকয়েনের দাম নেমে এসেছে ২০ হাজার ডলারের নিচে। দরপতনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই গেল কয়েক সপ্তাহে বিটকয়েন মাইনিংয়ে বিদ্যুৎ খরচ কমছে বলে নিজস্ব ওয়েবসাইট ডিজিকোনোমিস্ট ডটকমে জানিয়েছেন ডিজিটাল মুদ্রা অর্থনীতিবিদ অ্যালেক্স দে ভ্রিস।

বিটকয়েনের আকাশচুম্বী বিদ্যুৎ চাহিদা নিয়ে শঙ্কার কথা আগে থেকেই বলে আসছিলেন পরিবেশবাদী ও ভোক্তা অধিকারকর্মীরা। বিটকয়েনের নতুন টোকেন মাইনিংয়েই সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ খরচ হয়। আর মাইনাররা নতুন টোকেন কামাই করেন ব্লকচেইনের লেনদেন যাচাই করার মাধ্যমে।

এ কাজে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন কম্পিউটার প্রয়োজন হয় মাইনারদের। আর এই মাইনিং কম্পিউটারগুলোর শক্তিক্ষুধা এতোই বেশি যে ছোটখাটো একটি দেশের বার্ষিক বিদ্যুৎ চাহিদার সমান বিদ্যুৎ খরচ করেন বিটকয়েন মাইনাররা।

প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জ জানিয়েছে, ১১ জুন পর্যন্ত বিটকয়েনের বার্ষিক বিদ্যুৎ খরচ ২০৪ টেরাওয়াট-আওয়ার থাকলেও ২৩ জুন সেটি নেমে এসেছে ১৩২ টেরাওয়াট-আওয়ারে।

কমার পরেও বিটকয়েনের বিদ্যুৎ খরচকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই; পুরো আর্জেন্টিনার এক বছরের বিদ্যুৎ চাহিদাও এর কাছাকাছি।

ভার্জ বলছে, বিটকয়েনের দামের ওপরেই নির্ভর করছে এর বিদ্যুৎ খরচ। ক্রিপ্টো বাজারে এর দাম যতো বাড়তে থাকে, নিজেদের কার্যক্রম ততো বাড়িয়ে দেন মাইনাররা।

বিটকয়েন বাজারে সর্বোচ্চ দামের মাইলফলক ছুঁয়েছিল ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে, ৬৯ হাজার ডলারে পৌঁছেছিল এর দাম। ভ্রিস জানিয়েছেন, সর্বোচ্চ দামের মাইল ফলক ছোঁয়ার পর থেকে ১৮০ থেকে ২০০ টেরাওয়াট-আওয়ারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকেছে মাইনিংয়ের বিদ্যুৎ খরচ।

প্রতি বছরে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকা ডেটা সেন্টারগুলোর বার্ষিক বিদ্যুৎ খরচের আকারও প্রায় একই। 

বিটকয়েনের দাম টানা কয়েক মাস ধরে পড়লেও, এর বিদ্যুৎ খরচ প্রথমেই কমা শুরু করেনি। বিটকয়েন মাইনার ও বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৫ হাজার দুইশ ডলার দাম বিপদসীমা হিসেবে বিবেচিত হয় বলে জানিয়েছে ভার্জ। বিটকয়েনের দাম এই বিপদসীমার ওপরে থাকলেই সেক্ষেত্রে লাভের আশা করতে পারেন সংশ্লিষ্টরা। দাম বিপদসীমা অতিক্রম করে আরও নামতে থাকায় বিদ্যুৎ খরচ মেটানোর সক্ষমতা হারিয়েছেন মাইনাররা।

আর বিদ্যুৎ খরচের লাগাম টানতে মাইনাররা পুরনো কম্পিউটার বন্ধ করে দিচ্ছেন অথবা বিক্রি করে দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ভ্রিস। এখন কেবল মুনাফা হারাচ্ছেন না মাইনাররা, মাইনিং চালানোর খরচও কুলিয়ে উঠতে পারছেন না তারা।

একই পরিস্থিতিতে আছে ক্রিপ্টো বাজারের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুদ্রা ইথেরিয়ামও। মাসের শুরুতে একই ধসের মুখে পড়েছিল ইথেলিয়াম, সে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নত হলেও মে মাসের তুলনায় জুনের শেষে ক্রিপ্টো মুদ্রাটির মাইনিংয়ে বিদ্যুৎ চাহিদা অর্ধেকে নেমে এসেছে বলে জানিয়েছে ভার্জ।