হ্যাকারদের সঙ্গে যুদ্ধ চলছে: কোস্টা রিকার প্রেসিডেন্ট

হ্যাকারদের দল ‘কন্টি’র সঙ্গে কোস্টা রিকা যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট রদরিগো চাবেস। এপ্রিল মাস থেকে কন্টির র‌্যানসমওয়্যার হামলায় কার্যত বিকল হয়ে পড়েছে দেশটির বেশ কিছু সরকারি সেবা ও সংস্থা।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 May 2022, 09:06 AM
Updated : 19 May 2022, 09:06 AM

সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে কন্টি কোস্টা রিকায় একটি ভূরাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে বলে মন্তব্য করেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জ। ১৬ এপ্রিলের এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট চাবেস বলেছেন, কোস্টা রিকার ভেতর থেকেই সহযোগিতা পাচ্ছে কন্টির হ্যাকাররা। হ্যাকারদের দলটি মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক মিত্রদের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রেসিডেন্ট।

বলা হচ্ছে, বড় র‌্যানসমওয়্যার গ্রুপগুলো যে চাইলেই একটি দেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে, কোস্টা রিকার ওপর কন্টির সাইবার হামলার ঘটনা তারই প্রমাণ। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশটির অর্থ ও শ্রম মন্ত্রণালয়সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সরকারি সেবা ও সংস্থা।

১৮ এপ্রিলে শুরু হওয়া ওই সাইবার হামলায় সরকারি কম্পিউটার সিস্টেম অকেজো করে দেওয়ার পাশাপাশি দেশটির বিপুল পরিমাণ ডেটা হাতিয়ে নিয়েছে হ্যাকাররা। নিজস্ব ওয়েবসাইটে এখন পর্যন্ত কোস্টা রিকার প্রায় সাতশ জিবি ডেটা প্রকাশ করেছে কন্টি।

সংবাদমাধ্যমে দেওয়া বিবৃতিতে চাবেস বলেন, “আমরা যুদ্ধে আছি এবং এটা বাড়িয়ে বলাও হচ্ছে না। যুদ্ধটি একটি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী দলের বিরুদ্ধে। কোস্টা রিকাতেও সম্ভবত তাদের সদস্য আছে। কিছু মানুষ যে দেশের ভেতর থেকেই কন্টিকে সহযোগিতা করছে তার স্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে।”

কন্টির হ্যাকারদের আক্রমণাত্মক বক্তব্যের জেরেই প্রেসিডেন্ট চাবেসের যুদ্ধের ঘোষণা এলো বলে জানিয়েছে ভার্জ। ‘সাইবার হামলায় মাধ্যমে সরকার পতনই’ তাদের উদ্দেশ্য বলে জানিয়েছে হ্যাকাররা।

কন্টির নিজস্ব ওয়েবসাইটে পোস্ট করা এক মেসেজে হ্যাকাররা কোস্টা রিকার নাগরিকদের মুক্তপণ দেওয়ার জন্য সরকারের ওপর চাপ দেওয়ার তাগাদা দিয়েছে। ইতোমধ্যেই দাবিকৃত মুক্তিপণের দাবি দ্বিগুণ করে এক কোটি ডলার থেকে বাড়িয়ে দুই কোটি ডলার করেছে তারা।

কোস্টা রিকায় কন্টির র‌্যানসমওয়্যার হামলা শুরু হওয়ার পর দলটির হ্যাকারদের ধরতে পুরস্কার ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। কন্টি গ্যাংয়ের হ্যাকারদের মধ্যে মূল সমন্বয়কারীদের পরিচয় বা অবস্থানের তথ্য দিলে এক কোটি ডলার পুরস্কার দেবে যুক্তরাষ্ট্র। আর কন্টির সদস্যদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব করবে এমন তথ্য দিলে পুরস্কার মিলবে ৫০ লাখ ডলার।

বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে অ্যান্টি-র‌্যানসমওয়্যার সফটওয়্যার প্ল্যাটফর্ম হ্যালসিয়নের প্রধান জন মিলার বলেন, “আমরা এমন একটা সময়ে আছি যখন র‌্যানসমওয়্যার গ্রুপগুলো শতকোটি ডলার কামাই করছে। তাই তাদের এই নেটওয়ার্কগুলোতে অনুপ্রবেশের সক্ষমতা কেবল তাদের ইচ্ছাতেই সীমাবদ্ধ। মাসের পর মাস, অনলাইনে এমন নতুন নতুন হ্যাকার দল আসছে। এটি একটি মারাত্মকভাবে ক্রমবর্ধমান সমস্যা।”

কোস্টা রিকায় এই শঙ্কট চলমান থাকা অবস্থাতে দেশটির নাগরিকদের ওপর এর বিরূপ প্রভাব ক্রমশ বাড়ছে বলে জানিয়েছে ভার্জ। সরকারের ২৭টি সংস্থা র‌্যানসমওয়্যার হামলার শিকার হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাবেস; এর মধ্যে আছে দেশের শ্রম ও সামাজিক নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় দুটির কম্পিউটার সিস্টেম চালু না থাকায় করের অর্থ সংগ্রহ করতে পারছে না দেশটির সরকার।

অন্যদিকে, হ্যাকারদের দাবি মেনে মুক্তিপণ দেবেন না বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট চাবেস। এখন পর্যন্ত তিনি কঠোর অবস্থানে আছেন বলে জানিয়েছে ভার্জ।