গুগল সার্চ থেকে ‘ব্যক্তিগত তথ্য’ মুছতে হলে

গুগল বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সার্চ ইঞ্জিন। এতে দৈনিক সাড়ে আটশ কোটিরও বেশি সার্চ হয়ে থাকে। সার্চগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক হলেও, মাঝে মধ্যে পরিচয় চুরি, জালিয়াতি এমনকি ‘ডক্সিং’-এর মতো ঘটনাও ঘটছে।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 May 2022, 11:12 AM
Updated : 3 May 2022, 11:12 AM

‘ডক্সিং’ এক ধরনের সাইবার অপরাধ, যার মানে হলো, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিগত তথ্য অনুমতি ছাড়া জনসম্মুখে প্রকাশ করা।

প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট সিনেটের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গুগলের নিজস্ব একটি পদ্ধতি রয়েছে, যেটির সাহায্যে কোনো ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট সার্চের ফলাফল মোছার অনুরোধ করতে পারেন।

২০২২ সালের এপ্রিলে, ‘তথ্য মোছার’ কিছু নতুন ধরন যোগ করেছে গুগল। এর মধ্যে রয়েছে ‘ফোন নাম্বার’ এবং ‘ঠিকানা’।

“অনলাইনে ব্যক্তিগত যোগাযোগ তথ্যের প্রাপ্যতা বিরক্তিকর হতে পারে --এবং এটি কারো ক্ষতির কারণও হতে পারে, এর মধ্যে রয়েছে অপ্রত্যাশিত সরাসরি যোগাযোগ, এমনকি শারীরিক ক্ষতিও” --নিজস্ব ব্লগে লিখেছেন গুগল কর্মকর্তা মিশেল চ্যাং।

যেসব তথ্য সার্চ থেকে সরাবে গুগল

বিশেষ কিছু পরিস্থিতিতে, সার্চের ফলাফল মোছার অনুমোদন দেবে গুগল। এমন বিশেষ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে-

● ব্যক্তিগত যোগাযোগের তথ্য, যেমন- ইমেইল ঠিকানা, টেলিফোন নাম্বার এবং অবস্থানের ঠিকানা।

● যেসব কনটেন্টের কারণে পরিচয় চুরি হতে পারে, যেমন- ক্রেডিট কার্ড ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নাম্বার বা স্বাক্ষরের ছবি।

● হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি থাকে এমন তথ্য, যেমন- ‘লগইন’ আইডি ও পাসওয়ার্ড।

● যেসব সার্চের ফলাফলে অনুমোদনহীন স্পষ্ট ছবি বা ‘ডিপ-ফেইক পর্নোগ্রাফি’ থাকতে পারে।

● চিকিৎসাবিষয়ক এবং অন্যান্য গোপনীয় তথ্য।

● সংখ্যালঘুদের ছবি।

● নিজের নামে থাকা ‘অপ্রাসঙ্গিক পর্নোগ্রাফি’।

যেভাবে সার্চ থেকে গুগলকে কিছু সরাতে বলবেন

গুগল থেকে সার্চ লিংক সরানোর বিষয়টি স্বয়ংক্রিয় নয়। সাধারণত, গুগলকে লিংক ‘ইউআরএল’ সহ একটি ‘অনুরোধ’ পাঠানোর পাশাপাশি, সেই লিংক থাকা পেইজগুলোও খুঁজে দেখতে হবে ব্যবহারকারীকে।

এ ছাড়া, ব্যবহারকারীকে সেই অনুরোধে সংশ্লিষ্ট তথ্যের স্ক্রিনশটও সংযোজন করে দিতে হবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে সিনেট।

এর পর গুগল ব্যবহারকারীর পাঠানো অনুরোধটি যাচাই করে দেখবে। সংশ্লিষ্ট তথ্য সরানোর কারণে ‘সার্বজনীন তথ্য ব্যবস্থা’কে ব্যহত করবে অথবা নতুন কোনো প্রতিবেদনের মতো এটি ‘ব্যপক প্রয়োজনীয়’ কি না, বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখবে গুগল।

“এমন পরিস্থিতিতে, আমরা সেগুলো মুছব না” --বলেছেন চ্যাং।

তবে, কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হলে, এর নোটিফিকেশন চলে যাবে ব্যবহারকারীর কাছে। কনটেন্টের প্রসঙ্গ বিবেচনা করে, সার্চের ফলাফল থেকে সকল লিংক অথবা কেবল ব্যবহারকারীর নাম থাকা ফলাফলগুলো মুছে দিতে পারে গুগল।

গুগল সার্চ থেকে তথ্য সরানো ও ইন্টারনেট থেকে সরানো একই?

এক কথায় এই প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে ‘না’।

গুগল সার্চ ইঞ্জিন থেকে তথ্য সরিয়ে ফেললেও সেটি তখনও ইন্টারনেটে থেকে যায়। ব্যবহারকারী এটি সরাসরি সংশ্লিষ্ট তথ্য থাকা ওয়েবসাইট, সামাজিক মাধ্যম বা অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনের সাহায্যে যাচাই করে দেখতে পারেন। সংশ্লিষ্ট তথ্যটি শুধু গুগলের সার্চ ইঞ্জিন থেকে সরে যাবে।

সেই ক্ষেত্রে গুগল সংশ্লিষ্ট তথ্য থাকা ওয়েবসাইটের মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে, সেখান থেকে কনটেন্ট সরানোর অনুরোধ করতে বলছে।

ব্যক্তিগত তথ্য থাকতে পারে একমাত্র জায়গা গুগল সার্চ নয়। ব্যবহারকারী ইউটিউবে যেসব ভিডিও দেখেন, ম্যাপে যেসব জায়গায় অবস্থান করে এমনকি নিজের সার্চ করা তথ্যের গতিবিধি পর্যাবেক্ষণ করে গুগল।

গোপনতা রক্ষার্থে ব্যবহারকারীকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ‘অ্যাক্টিভিটি হিস্ট্রি’ মোছার, ‘গুগল ট্র্যাকিং’ আটকানোর ও ‘সার্চ হিস্ট্রি’ মোছার পদ্ধতি শিখতে হবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে সিনেট।