টিকটকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন সাবেক দুই মডারেটর

সামাজিক মাধ্যম টিকটকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন দুই সাবেক মডারেটর। তাদের অভিযোগ, “জঘন্য” ভিডিও কনটেন্ট রিভিউ করতে বাধ্য করলেও, তাদের মানসিক ‍স্বাস্থ্যের উপর এর প্রভাব ঠেকাতে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়নি প্রতিষ্ঠানটি।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 March 2022, 01:04 PM
Updated : 27 March 2022, 01:04 PM

মডারেটর দু’জন সোশাল ভিডিও অ্যাপ এবং এর মূল প্রতিষ্ঠান উভয়ের বিরুদ্ধে মামলা করছেন বলে জানিয়েছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট সিনেট।

বৃহস্পতিবারের ওই ফৌজদারি মামলায় অ্যাশলি ভেলেজ এবং রিস ইয়াং উভয়েই অভিযোগ করেছেন, দৈনিক ১২ ঘণ্টা করে “জঘন্য এবং আপত্তিকর কনটেন্ট” দেখতে হতো যা তাদের মানসিকভাবে ক্ষতির কারণ হয়েছে। তৃতীয় পক্ষীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে টিকটকের কনটেন্ট মডারেশন করতেন উভয়েই।

এর মধ্যে সবচেয়ে বাজে নেতিবাচক কনটেন্টের মধ্যে পশু-পাখির প্রতি নিষ্ঠুরতা, শিশু নিপীড়ন, পর্নোগ্রাফি এবং খুনের ভিডিও ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে ওই মামলায়।

চীনের প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সের মালিকানাধীন অ্যাপটির নিয়মিত ব্যবহারকারীর সংখ্যা এখন একশ কোটিরও বেশি, প্রতিদিন কয়েক লাখ ভিডিও আপলোড করা হয় এতে।

মামলায় যে ধরনের কনটেন্টের কথা বলা হয়েছে, ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মটিকে তেমন কনটেন্ট থেকে মুক্ত রাখতে কম-বেশি ১০ হাজার মডারেটর আছেন বলে জানিয়েছে সিনেট।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, টিকটক এবং এর মূল প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্স কর্মীদের মানসিক সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে যথেষ্ট পদক্ষেপ না নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ার শ্রম আইন ভঙ্গ করেছে।

সিনেট জানিয়েছে, আলাদা দুটি প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করতেন সাবেক মডারেটর দুজন। কিন্তু উভয়েরই অভিযোগ, তাদের দৈনন্দিন কাজ সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করতো টিকটক।

কী পরিমাণ কনটেন্ট রিভিউ করছেন তার উপর নির্ভর করতো তাদের বেতন এবং কঠিন কোটা পূরণের জন্য চাপে ফেলা হতো তাদের। প্রতিদিন যে কনটেন্টে দেখতে হয় সে বিষয়ে অন্যদের সঙ্গে যেন আলাপ করতে না পারেন, সে জন্য তাদের তথ্য গোপন রাখার চুক্তিতে স্বাক্ষর করতেও বাধ্য করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন ভেলেজ ও ইয়াং।

সিনেট এ প্রসঙ্গে টিকটকের মন্তব্য জানতে চাইলেও তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা।

২০২০ সালে প্রায় একই রকমের একটি মামলার সমঝোতায় একদল মডারেটরকে পাঁচ কোটি ২০ লাখ ডলার ক্ষতিপূরণ দিয়েছিল ফেইসবুক। ২০১৮ সালে মামলাটি করেছিলেন তারা। মডারেটরদের অভিযোগ ছিল, “আপত্তিকর কনটেন্ট দেখার কারণে মানসিক আঘাত পেয়েছিলেন তারা।”

টিকটকের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলায় ক্ষতিপূরণ এবং আইনি প্রক্রিয়ার খরচ দাবি করেছেন সাবেক মডারেটররা। পাশাপাশি, নিজেদের এবং ভুক্তভোগী অন্য কেউ মামলার বাদী হিসেবে যোগদান করলে তাদের চিকিৎসা ব্যয় বহনের দাবিও করেছেন তারা।