দেশের ‘আন্ডারগ্রাউন্ড হ্যাকার’দের মধ্যে থেকে স্বেচ্ছাসেবক চাইছে রাশিয়ার সামরিক অভিযানে আক্রান্ত দেশটি। বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার সামরিক হামলা শুরু হওয়ার পরপরই বৃহস্পতিবার সকাল থেকে হ্যাকারদের ফোরামগুলোতে স্বেচ্ছাসেবকদের লক্ষ্য করে আহ্বান আসতে শুরু করে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
“ইউক্রেইনের সাইবার কমিউনিটি! সময় এসেছে দেশের সাইবার প্রতিরক্ষায় অংশ নেওয়ার,” উল্লেখ রয়েছে ফোরামের পোস্টে। হ্যাকার এবং সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের আবেদন সংগ্রহ করা হচ্ছে গুগল ডকস ফাইলের মাধ্যমে।
“প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার অনুরোধে” হ্যাকারদের ফোরামে ওই পোস্ট লিখেছেন বলে রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন কিয়েভভিত্তিক সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ‘সাইবার ইউনিট টেকনোলজিস’ সহ-প্রতিষ্ঠাতা ইগর অশেভ। গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইউক্রেইন সরকারের সঙ্গে আগেও কাজ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় হ্যাকারদের নিয়োগ দাওয়ার অনুরোধ ইউক্রেইনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকেই এসেছে বলে দ্বিতীয় একটি সূত্র থেকে নিশ্চিত হওয়ার কথা জানিয়েছে রয়টার্স।
তবে, রয়টার্সের কাছে এই প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করেনি ইউক্রেইনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র। “টেলিগ্রাম চ্যানেলে পাওয়া তথ্য” নিশ্চিত বা অস্বীকার কোনোটাই করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন ওয়াশিংটনে অবস্থিত ইউক্রেইন দূতাবাসের এক কর্মকর্তা।
অন্যদিকে, অশেভ জানিয়েছেন, স্বেচ্ছাসেবক হ্যাকারদের একটি প্রতিরক্ষামূলক সাইবার ইউনিট এবং একটি আক্রমণাত্মক সাইবার ইউনিটে ভাগ করা হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা এবং পানি সরবরাহ ব্যবস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে প্রতিরক্ষামূলক সাইবার ইউনিট। ২০১৫ সালে রাশিয়ার হ্যাকারদের এক সাইবার আক্রমণে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন ইউক্রেইনের সোয়া দুই লাখ নাগরিক।
আর দ্বিতীয় সাইবার ইউনিটটি ইউক্রেইনকে রাশিয়ার সামরিক কর্মকাণ্ডের উপর ডিজিটাল নজরদারি চালাতে সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন অশেভ।
“আমাদের দেশের মধ্যে একটা সেনাবাহিনী ঢুকে পড়েছে,” অশেভ বলেন, “তারা কী করছে জানা প্রয়োজন আমাদের।”
বুধবারেই ইউক্রেইনের সাইবার দুনিয়ায় নতুন ম্যালওয়্যারের সন্ধান মিলেছে। সন্দেহের আঙ্গুলও রাশিয়ার দিকেই; ম্যালওয়্যার আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইউক্রেইনের সরকারি পরিষেবা এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান। সাইবার আক্রমণের অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাশিয়া।
ইউক্রেইনের কোনো সামরিক সাইবার ফোর্স নেই বলে ফেব্রুয়ারির শুরুতেই ওয়াশিংটন পোস্টকে জানিয়েছিলেন দেশটির প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার এক কর্মকর্তা। “এ বছরেই সেটা তৈরি করাই আমাদের কাজ,” ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন তিনি।