এ বছরেই কক্ষপথে যাবে স্টারশিপ, আত্মবিশ্বাসী মাস্ক

স্টারশিপ রকেট এ বছরেই পৃথিবীর কক্ষপথে পৌঁছাবে বলে “আত্মবিশ্বাসী” ইলন মাস্ক। কারিগরি আর নীতিনির্ধারণী প্রতিবন্ধকতা থাকলেও চাঁদ ও মঙ্গলযাত্রার লক্ষ্য নিয়ে নির্মিত রকেটগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী এই প্রযুক্তি উদ্যোক্তা।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Feb 2022, 10:19 AM
Updated : 13 Feb 2022, 06:09 AM

সম্প্রতি টেক্সাসের বোকা চিকায় অবস্থিত ‘স্টারবেইজ’-এ স্টারশিপ প্রকল্প নিয়ে সংবাদকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছেন স্পেসএক্স প্রধান। প্রোটোটাইপ স্টারশিপ রকেটের উৎক্ষেপণ ও অবতরণে সাফল্যের নয় মাসের মাথায় এ বিষয়ে গনমাধ্যমে মুখ খুললেন মাস্ক। তার আগের চারবারের চেষ্টায় অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয়েছিল প্রোটোটাইপ রকেটগুলো।

সংবাদকর্মীদের সঙ্গে আলাপাচারিতায় ‘সুপার হেভি রকেট’-এর জন্য ‘র‌্যাপটর ২’ ইঞ্জিন নির্মাণ জটিলতার কথা স্বীকার করেছেন মাস্ক। এই রকেটগুলোর নকশা করা হয়েছে বারবার ব্যবহারের কথা মাথায় রেখে। স্টারশিপ স্পেসক্র্যাফটকে কক্ষপথে পৌঁছে দেওয়ার কথা রয়েছে এই রকেটগুলোর। ইঞ্জিন থেকে সৃষ্ট তাপে রকেট থ্রাস্টারের ভেতরের অংশ গলে যাচ্ছিল বলে জানিয়েছেন মাস্ক।

তবে, “আমরা সেটি সমাধানের কাছে চলে এসেছি” বলে দাবিও করেছেন তিনি। মার্চ মাসের মধ্যেই উৎপাদন ক্ষমতা বাড়িয়ে প্রতি সপ্তাহে সাত থেকে আটটি ইঞ্জিন নির্মাণের আশা করছেন মাস্ক। আর বছরের শেষ নাগাদ প্রতি মাসে একটি করে স্টারশিপ এবং একটি করে বুস্টার নির্মাণের আশা করছেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে মাস্ক বলেন, “এই মুহুর্তে আমি খুবই আত্মবিশ্বাসী, আমরা এ বছরেই (স্টারশিপের মাধ্যমে) কক্ষপথে পৌঁছাবো।”

মাস্কের এই আত্মবিশ্বাসকে “উচ্চাকাঙ্খী” বলে আখ্যা দিয়েছে রয়টার্স। তবে, উচ্চাকাঙ্খী হলেও অসম্ভব নয় এই লক্ষ্য। সুপার হেভি/স্টারশিপ জুটি এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে থাকলেও ফ্যালকন ৯ রকেট দিয়ে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন মাস্ক। রকেটগুলোর সফল উৎক্ষেপণ হয়েছে ১৪৪ বার, আর সফল অবতরণের সংখ্যা ১০৬ বার।

তবে সরকারি পর্যাবেক্ষণ সংস্থা ‘ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ)’-এর সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় আছে স্পেসএক্স। আশপাশের পরিবেশর উপর বোকা চিকায় অবস্থিত নির্মাণ কারখানা এবং লঞ্চপ্যাডের প্রভাব মূল্যায়ন করে দেখছে সরকারি সংস্থাটি।

আশপাশের পরিবেশ ও জীব বৈচিত্রের উপর স্পেসএক্স-এর কর্মকাণ্ডের কোনো বিরূপ প্রভাব পড়ছে কি না, এফএএ তা আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই জানাবে বলে উঠে এসেছে রয়টার্সের প্রতিবেদনে। বোকা চিকায় স্পেসএক্সের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে এফএএ’র প্রতিবেদনের উপর।

সংবাকর্মীরা এফএএ’র অনুসন্ধান সম্পর্কে মাস্ক কতোটুকু অবহিত আছেন জানতে চাওয়ায় স্পেসএক্স প্রধান বলেন, “এফএএ’র সঙ্গে বর্তমান অবস্থা কি সে প্রসঙ্গে বিস্তারিত জানা নেই আমাদের। তবে আমরা ইঙ্গিত পেয়েছি যে মার্চ মাসে অনুমোদন পেতে পারি। এতোটুকুই জানা আছে আমাদের।”

বোকা চিকায় পরিবেশগত ঝুঁকির কারণে লঞ্চপ্যাড পরিচালনার অনুমোদন না পেলে পুরো স্টারশিপ প্রকল্প ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরালে অবস্থিত কেনেডি স্পেস সেন্টারে সরিয়ে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মাস্ক। তবে এক্ষেত্রে পুরো প্রকল্প ছয় থেকে আট মাস পিছিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, স্পেসএক্স ২০২৩ সালে চাঁদে প্রথম ব্যক্তিমালিকানাধীন মিশন পাঠানোর লক্ষ্যে অবিচল আছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। বার্তাসংস্থাটি বলছে, জাপানের উদ্যোক্তা ইউসাকু মায়েজাওয়াসহ এক ডজন শিল্পীকে নিয়ে চাঁদকে চক্কর দিয়ে পৃথিবীকে ফিরে আসবে স্টারশিপ।